গত সোমবার দিবাগত রাত থেকে টানা ৪ দিনের বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে খুলনার কয়রা উপজেলার জনজীবন। স্থবির হয়ে পড়েছে সকল কার্যক্রম। নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। ইয়াসের ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতে অবিরাম বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ১৫শ’ মৎস্য ঘের। নষ্ট হয়েছে ক্ষেতের ফসল। এ যেন এ জনপদের মানুষের উপরে মরার উপর খাড়ার গাঁ। টানা বৃষ্টিপাতের ফলে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বীজ তলা, ফসলের মাঠ, পুকুর, রাস্তা ঘাট ও বাড়ির আঙিনা তলিয়ে গেছে।
গত ২৬ মে ইয়াসের প্রভাবে বেঁড়িবাধ ভেঙে উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়ে লক্ষাধিক মানুষ। বাঁধ মেরামত করা হলেও পানি সরতে না সরতেই টানা বৃষ্টির পানিতে ফের একাকার খাল, বিল, পুকুর, রাস্তা ঘাট ও মৎস্য ঘের। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বেঁড়িবাধ নিয়ে বন্যা আতঙ্কে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষ। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। ঘরের বাইরে না যেতে পারায় তাদের সংসারে চলছে চরম দুর্ভোগ। শুধু তাই নয় যানবাহনের চালকরা পড়েছে বিপাকে। দু’চারটি যানবাহন বের করা হলেও বেড়েছে ভাড়ার পরিমাণ, ফলে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। ব্যবসায়ীরা ক্রেতার জন্য বসে থাকলেও মিলছে না তেমন ক্রেতা। অলস সময় পার করছেন ইজিবাইক, ভ্যান ও অটো চালকরা। টানা বৃষ্টির ফলে কয়রা সদরের প্রধান সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বাজারে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
উপজেলা মানবকল্যাণ ইউনিটের সভাপতি মো. আল আমিন ফরহাদ বলেন, যথাযথ ড্রেনেজের ব্যবস্থা না থাকায় কয়রা সদরের প্রধান সড়ক সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় আর সকলকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তারপরও সড়কটি সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ভাঙা চোরা, খানাখন্দে ভরে গেছে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে দু’চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে।
কয়রার ভ্যান চালক আ. হাই বলেন, বৃষ্টির কারণে রাস্তা ঘাটে মানুষ নেই। ভ্যান চালিয়ে তাকে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। মানুষ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন তিনিসহ শত শত ভ্যানচালক। যাদের একমাত্র আয়ের উৎসই হচ্ছে ভ্যান চালানো। উপজেলা মৎস্য অফিসার এস এম আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, কয়রায় কয়েক দিনের টানা বর্ষণে প্রায় ১৫শ’ মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। মৎস্য চাষিদের মাছ টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন