ঝিনাইগাতীতে বালু-পাথর দস্যুদের থাবায় ধ্বংসের পথে গারো পাহাড়! কতিপয় প্রভাবশালী পাথর-বালুদস্যু ও বনবিভাগের এক শ্রেনীর দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে ঝিনাইগাতীর খালঘোসা, সোমেশ্বরী নদীর তাওয়াকোচা, খারামোরা, রাঙাজান, বালিজুরি, কালগুসা নদীর বাকাকুড়া, গান্দিগাঁও মালিটুলা ইত্যাদি স্থানে সেলু মেশিন বসিয়ে অবাধে দীর্ঘদিন যাবৎ বালু ও পাথর উত্তোলন করছে। তারপরও বন কর্মকর্তাগণ কি যেন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে আসছে বলে জানা যায়।
এলাকাবাসীরা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, উল্লেখিত এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত বালু-পাথর উত্তোলন করে বন বিভারে নাকের ডগার উপর দিয়ে অবাধে পাচার করা হচ্ছে। রাত-দিন, ট্রাক-ট্রলি ও মাহিন্দ্রযোগে পাচার করা হচ্ছে এসব বালু ও পাথর। এতে নদীর দু’পাড়ের ফসলি জমিসহ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে গারো পাহাড়। ধসে পড়ছে পাহাড়ের গাছ। এতে গারো পাহাড়ের সৌন্দর্যের পাশাপাশি মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্যও। সম্প্রতি যুবলীগের এক সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম ফজলুল হক এ ব্যাপারে বালুখেকো এবং পাথর পাচারকারীদের সতর্ক করে দিলেও কোনই কাজে আসেনি। এসব অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে কোন কোন সময় স্থানীয় প্রশাসন ২/৪ টি সেলুমেশিন ভেঙে দিয়ে চলে আসার পরই আবারো উত্তোলন শুরু হয় বলে জানা যায়।
মোটকথা কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ বালু ও পাথর লোপাট। চলছে লোপাটের মহোৎসব। এদিকে, গারো পাহাড়ের পাথর ও বালুদস্যুদের বিরোদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও তাদের উপস্থিতির আগেই তারা খবর পেয়ে যায় এবং সটকে পড়ে। সম্প্রতি ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসর রুবেল মাহমুদ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে খালঘোসা নদীতে শ্যালোইন্জিন চালিত ২টি ভালু উত্তোলন যন্ত্র এবং প্রায় ৫মিটার পাইপ ধবংস করেন। এ ছাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়নাল আবেদীন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ বালু জব্দ করে নিলামে বিক্রয় করেন। তবু থেমে নেই অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন। ফলে গারো পাহাড় ধংস ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে মারাত্মকভাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন