বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শাক-সবজিতে ভরে গেছে গারো পাহাড়

এস. কে. সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

রকমারি শীতকালিন শাক-সবজিতে ভরে গেছে গারো পাহাড়। শেরপুরের পাহাড়ি অঞ্চলে নানা প্রকারের আগাম শীতকালিন শাক-সবজি ক’বছর ধরেই শেরপুর জেলা ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় শাক-সবজির যোগান দিচ্ছে। পাহাড়ি কৃষকরা জানান, এবারও প্রতিক‚ল আবহাওয়া সত্বেও আগাম শীতকালিন শাক-সবজির আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। বিক্রিও শুরু হয়েছে। দামও পাচ্ছে ভাল। তাই কৃষকরা বেজায় খুশি। শেরপুরের পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষকরা উঁচু জমিতে নানা জাতের আগাম শীতকালিন বিভিন্ন শাক-সবজি, পেপে, লেবু, মাল্টা, কমলাসহ ফলের আবাদ করে চলেছেন। উঁচু জমিতে ধানের আবাদ করে পোষায় না। তাই লাভজনক হওয়ায় আগাম জাতের শাক-সবজির আবাদ করে চলেছেন। শাক-সবজির আবাদে এখন তারা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। ফলে দিন দিন বাড়ছে শাক-সবজির আবাদ। বাড়ছে শাক-সবজি চাষে ঝুঁকে পড়া কৃষকের সংখ্যা। এ ব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হুমায়ুন কবির জানান, কৃষকদের সবজি চাষে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে সার্বিক সহায়তা করছে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে শিম, বেগুন, লালশাক, মুলাশাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোর আবাদ চলছে। সবজি চাষে কৃষকেরা এবার বেশ উৎফুল্ল। প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশের জন্য উৎপাদিত ফসলের ফলন ও দাম ভালো পাচ্ছেন। কৃষি বিভাগের নিয়মিত মনিটরিংয়ে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েছে। ফলে উৎপাদন বাড়ায় কৃষকদের মুনাফা বেড়েছে কয়েকগুণ। চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষাবাদ করে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছেন বলে জানান কৃষি অফিসার।

সরেজমিনে সবজির গ্রাম সন্ধাকুড়া, গারোকুনা, হলদিগ্রাম, জারুনতলা, মানিককুড়া ইত্যাদি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সবজির আবাদে ভরে গেছে এ সব গ্রাম। প্রতিটি উঁচু পাহাড়ি জমিতে করলা, চিচিঙা, বেগুন, লাউ, মূলা, ঝিঙে, কদু, কাকরোল, ঢেঁরস, কুমুড় (কুমড়া), বরবটি (নইবা) লালশাক, পুইশাক, লাউশাক, পালংশাক, ডাটা (ডাঙগা)সহ রকমারি শাক-সবজিতে ভরে গেছে মাঠ। হলদিগ্রামের বাসিন্দা সংবাদকর্মী ও কৃষক এম. মোকাদ্দেস, শতবর্ষী ডা. আব্দুল বারী, আলহাজ শরিফ উদ্দিন সরকার, আলহাজ রেজাউর রহমান মাস্টার, কৃষক সরোয়ার্দী দুদু মন্ডল কৃষিজীবীগণ বলেন, পাহাড়ি কৃষকরা শাক-সবজি ও ফলের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। শাক-সবজি ও ফলের আবাদ করে পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন। শাক-সবজি ও ফলের আবাদ লাভজনক হওয়ায় এবং বাজারে ভাল দাম পেয়ে বেজায় খুশি কৃষকরা। এদিকে কৃষক-কৃষানীরা অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন শাক-সবজি ও ফলের ক্ষেত পরিচর্যায়। অবসর নেই। কেহ শাক-সবজি ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন কেউ করছেন স্প্রে। কেউ বা ক্ষেত থেকেই বেশ চড়া দামে পাইকারি বিক্রি করে দিচ্ছেন শাক-সবজি। শাক-সবজি বিক্রির জন্য গারোকোনা ও হলদিগ্রামে এবং সন্ধাকুড়া গড়ে উঠেছে শাক-সবজির নতুন বাজার। এসব বাজার থেকে উপজেলা-জেলা এমনকি ঢাকা অথবা অন্যন্য স্থানের পাইকাররা বেশ চড়া দামেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন শাক-সবজি। কেহবা নিজেই ট্রাক ভর্তি শাক-সবজি বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে ঢাকা বা অন্যত্র।

এদিকে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফায়েজুর রহমান বলেন, পাহাড়ি এলাকায় মামলার তদন্তে অথবা আসামি ধরতে গিয়ে যে শাক-সবজির আবাদ চোখে পড়ে তাতে শুধু আমি নই যে কারো প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। মোট কথা এখানে একটা কৃষি বিপ্লব ঘটে গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন