গারো পাহাড়ে ক্ষেতের আমন ধান খেয়ে সাবাড় করে বন্যহাতির চোখ পড়েছে এখন বোরো বীজতলা ও সরিষা খেতে। ধান খাওয়ায় চাল কিনে খেতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে। প্রতি দিন রাতে সরিষা খেতে হানা দিচ্ছে বন্যহাতি। সপ্তাহকাল ধরে হাতি নেমে আসছে লোকালয়ে। রাতদিন পাহাড়া দিচ্ছে কৃষকরা। রাতে আগুন জ্বালিয়ে ক্ষেতেই পড়ে থাকছে কৃষক। এভাবেই ক্ষোভে কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের গারো পাহাড়ের পানিহাটা গ্রামের নুর বানু বেগম। খাবারের সন্ধানে সপ্তাহকাল ধরে হাতিরপাল ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে এসে পানিহাটার সরিষা খেত খেয়ে ও পায়ে পিষে করছে ধ্বংস। সরেজমিনে দেখা গেছে, পানিহাটার ভারত অংশে প্রায় ২২-২৩টি হাতির পাল। অপরদিকে পানিহাটার বাংলাদেশ অংশে ২০-২৫ জন স্থানীয়রা মাটির ঢিলা ও গাছের ভাঙ্গা ডাল হাতির দিকে ছুড়ে মারছে। ঢিল ছোঁড়ায় হাতিরপাল চিৎকার করে রাগান্বিত হয়ে তেড়ে আসছে। স্থানীয়রা দৌঁড়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা যখন হাতির ওপর ঢিল ছুড়ছে তখন হাতি পিছু হটছে। হাতি ও মানুষের মুখোমুখি অবস্থানে যেনো চোর পুলিশ খেলা চলছে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
এভাবে উত্যক্ত করছেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষকরা জানান, হাতিরপালকে না তাড়ালে, রাতে সরিষা ক্ষেত খেয়ে সাবাড় করে ফেলবে। বাড়িতেও হামলা করতে পারে। তাই আমরা গ্রামবাসী মিলে হাতি তাড়াচ্ছি। কৃষক আবদুর রশিদ বলেন, দশ কাঠা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। হাতি খেয়ে ফেলায় একমুঠো ধানও পাইনি। সব ধান খেয়ে সাবাড় করেছে। এখন সরিষা ও বোরো বীজতলার খেত ধ্বংস করছে। ফসল ও জীবন বাঁচাতেই দলবেঁধে রাতে পাহাড়ায় থাকছি।
শেরপুর বন বিভাগের বন্যপ্রাণি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার বলেন, বন্যহাতির আক্রমণ থেকে জানমাল বাঁচাতে সচেতন আছি। নিয়মিত টহল ও জনসচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে। হাতিপ্রবণ এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণকে হাতির আক্রমণ ঠেকাতে বন্যহাতির দলকে উত্যক্ত না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন