দেশের অধিকাংশ নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উজানে ভারত, নেপাল ও চীনে এবং দেশের অভ্যন্তরে টানা ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ কারণে নদ-নদীতে বাড়ছে পানি। গতকাল সোমবার তিস্তা নদীর পানি আরও বৃদ্ধিতে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার খুব কাছাকাছি অবস্থান করে। কয়েকদিন ধরে উজানে ভারত গজলডোবা বাঁধের পানি ছেড়ে দেয়ায় তিস্তার ভাটিতে পানি বেড়েই চলেছে। দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। ইতোমধ্যে তিস্তাপাড়ের অনেক স্থানে নিম্নাঞ্চল ফল-ফসলি জমিসহ প্লাবিত হয়ে গেছে। তাছাড়া অনেক জেলা-উপজেলায় নদ-নদীসমূহে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রতিদিনই নদীভাঙন হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। দিশেহারা এবং আতঙ্কে রয়েছেন নদ-নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
গতকাল প্রধান নদ-নদীসমূহের প্রবাহ ও পূর্বাভাসে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৬৯টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ২৯টিতে হ্রাস ও দু’টি স্থানে অপরিবর্তিত থাকে। রোববার ৫৭টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৩৫টিতে হ্রাস ও ৮টিতে অপরিবর্তিত ছিল। শনিবার ৪৬টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৪৮টিতে হ্রাস পায়।
পাউবোর তথ্য-উপাত্তে জানা গেছে, গতকাল তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে (রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলা) আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ৬ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়। ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ মিটারের স্থানে পানির প্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ৫৪ মিটার। পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারাজের অনেকগুলো গেইট খুলে দেয়া হয়েছে।
পূর্বাভাসে পাউবো আরও জানায়, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি পানি অপরিবর্তিত রয়েছে, যমুনা নদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় স্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আপার মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে।
দেশের অভ্যন্তরে ও নদ-নদীসমূহের উজানে ভারতে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে মাঝারি থেকে ভারী ও অতিবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৭৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যদিকে অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মহেশখোলায় ১০৪, টেকনাফে ৭৭, টাঙ্গাইলে ৭১, রাজশাহীতে ৬৪, লরেলগড়ে ৬০, সুনামগঞ্জে ৫৯, জামালপুরে ৫৩ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পাউবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন