লকডাউনের নামে সরকার জনগণের সাথে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটা (লকডাউন) কাজের কিছুই না। ঢাকাতেও লকডাউন আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে লকডাউন কোথাও দেখতে পান? কোথায় লকডাউন? আমি তো দেখতে পাইনা। যার যেখানে খুশি যাচ্ছে, যার যেখানে যা খুশি করছে এমনকি বিয়েও হচ্ছে। আমি পরশুদিন দেখলাম একটা হোটেলে বিয়েও হচ্ছে। অথচ দেয়ার ইজ ব্যান্ড। এই যে সরকারের পুরোপুরি উদাসিনতা এবং এটা লোক দেখানো একটা ব্যাপার। এটা প্রতারণা মানুষের সঙ্গে। দেখানো হচ্ছে আমরা লকডাউন দিচ্ছি, চেষ্টা করছি। ল এন্ড ফোর্সেস এজেন্সিজ যাদের এই লকডাউন ইমপ্লিমেন্ট করার কথা তাদেরকেও দেখা যায় না আজকাল। দে আর নট ভিজিবল। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, বিশেষ প্রাণি পানি খায়, ঘোলা করে। আমরা বহু আগেও তাদেরকে (সরকার) বার বার সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, করোনা মোকাবিলায় এসব ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তারা নেননি। বহুদিন পরে তারা এখন এসব ব্যবস্থা (লকডাউন) নিচ্ছেন। এখন আর বলে বলে আর বলতে ইচ্ছা করে না। কি বলবেন এদের তো চামড়া মোটা। এই স্বাস্থ্য মন্ত্রীর কবেই পদত্যাগ করা উচিত ছিলো। দুর্ভাগ্যজনক উল্টো তারা ডিফেন্ড করছে সবাই সবাইকে। খুব ভালো কাজ করছে। এতো ভালো স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাকি আর হয় না।
এনআইডি স্বরাষ্ট্রে নেয়া দুরভিসন্ধিমূলক অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এনআইডি প্রকল্পের বিষয়ে ইসি চিঠি দেয়ার পরেও সরকার সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে দুই লাইনের একটা চিঠি দিয়ে। এটা একটা অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়েও তারা (সরকার) একটা চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র করতে যাচ্ছে যাতে তারা জনগণের পরিচয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমরা এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছি। সরকারকে তার এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচয় পত্র দেয়ার ব্যাপারটা তাদের হাতেই থাকা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে যেহেতু পরিস্থিতিটা সম্পূর্ণ উল্টো। এখানে আওয়ামী লীগের সরকার পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করবে বলে সবাই বিশ্বাস করে। এটা শুধু বিএনপির কথা নয়, নির্বাচন কর্মকাণ্ডসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর সাথে যারা জড়িত, এনজিও সবাই বলছে যে, এটা কোনো মতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে যাওয়া উচিত নয়, তাহলে সরাসরি সরকারের হাতে পড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সংবিধানে ইসির অন্ততঃ একটা স্বতন্ত্র স্ট্যাটাস আছে, তাদের হাতে থাকাটা বেটার বলে আমরা মনে করি এবং সবাই মনে করছেন।
দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নেই মন্তব্য করে ফখরুল ইসলাম বলেন, আঙ্কটার্ডের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এখানে বিদেশী বিনিয়োগ প্রায় ১১ শতাংশ কমে গেছে। কারণ, এখানে দুঃশাসন, গর্ভানেন্সের অভাব, দুর্নীতি এবং সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে এখানে যখন কিছু বিনিয়োগ করতে যায় তাকে কেঁদে কেঁদে সব ফেলে দিয়ে যেতে হয়। তারপরে কনট্রাকশন করতে গেলে চাঁদা দিতে হয়। এখানে কোনো বিনিয়োগে পরিবেশ বিরাজ করে না। অথচ সরকারের ঢোল বাজছেই সবসময় যে, এখানে উন্নয়ন উন্নয়ন হয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নটা কোথায়? কয়েকটা ব্রিজ তৈরি করা, কয়েকটা উড়াল সেতু তৈরি করা এগুলোকে উন্নয়ন বলবো নাকি? উন্নয়ন সেটা যেটাতে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়, অভাব কমে। যেখানে দরিদ্রের সংখ্যা বেড়ে গেছে দুই কোটি সেখানে কোন যুক্তিতে উন্নয়ন বলতে পারি।
তিনি গ্রেফতারকৃত ছাত্রদলের সাবেক নেতা সাইফুল ইসলামকে পায়ের গুলি করে পঙ্গু করা, ময়মনসিংহ, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে ছাত্র দলের ভার্চুয়াল আলোচনায় পুলিশি হামলা ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তি এবং ভোজ্য তেলসহ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান তিনি।###
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন