রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সরকারই হরতাল দিয়ে দিচ্ছে

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বর্তমান সরকার অপশাসনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সমাবেশ করা সাংবিধানিক অধিকার, কিন্তু রাষ্ট্র ও আওয়ামী লীগ সরকার তাতে বাধা সৃষ্টি করছে। কোনো সভ্য দেশে চিন্তা করতে পারেন যে, সরকার হরতাল দিয়ে দেয়? এরা হরতাল দিচ্ছে। বরিশালে পাঁচদিন আগে থেকে বলে দিয়েছে যে, পরিবহন বন্ধ থাকবে। গতকাল শুক্রবার বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে পরিবরহন ধর্মঘটে জনভোগান্তির কথা তুলে ধরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বরিশালের গণসমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে হঠাৎ করে নৌপরিবহনও বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি কী স্পিডবোটগুলো ভোলা থেকে বরিশালে আসে, সেগুলো পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে, প্রাইভেট কারও নাকি বন্ধ করে দিয়েছে। এটাকে কোন ক্যাটাগরিতে ব্যাখ্যা করবেন তারা?

খালেদা জিয়াকে ‘জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা যে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা যে বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই এ ধরনের উক্তি করেছেন তিনি। ‘হুমকি-ধামকিতে’ আন্দোলন থামানো যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার জনগণকে ভয় পাচ্ছে, মানুষকে ভয় পাচ্ছে। যেভাবে মানুষ জেগে উঠছে, এখানে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হবে। আমি বিশ্বাস করি এখানে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তাদেরকে (আওয়ামী লীগ) সরে যেতে হবে। সে কারণেই আমরা অনেকবার বলেছিলাম যে, এখনও সময় আছে সেইভ এক্সিট নেন। রিজাইন করেন এবং ক্ষমতা কেয়ারটেকার গভর্মেন্টের হাতে দেন। তাহলে একটা সেইভ এক্সিট হতে পারে। তা না হলে তার আগেও বলেছি, এখনও বলছি যে, পালাবার পথ খুঁজে পাওয়া যাবে না।

রেমিটেন্স যাচ্ছে বিদেশ থেকে বিদেশে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে যে সংকটগুলো তৈরি হয়েছে এটা সম্পূর্ণভাবে তাদের দুর্নীতির কারণে তৈরি হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে, পদে পদে তারা দুর্নীতি করছে। আজকেও পত্রিকায় বেরিয়েছে, গত ১০ বছরে কানাডায় যারা মাইগ্রেট করেছেন তাদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ হচ্ছে বাংলাদেশি। এগুলোর প্রমাণ পাবেন যেমন আপনার রেমিটেন্স কমে গেছে। রেমিটেন্স কমছে কিন্তু আপনার শ্রমিকের সংখ্যা কিন্তু কমেনি, আবার বেড়েছে। তাহলে রেমিটেন্সটা কোথায় যাচ্ছে? আমি আগের দিনও বলেছি যে, এই রেমিটেন্স বিদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই কাজটা করছেন সরকারি দলের সঙ্গে যারা জড়িত আছেন তারাই এটাকে হুন্ডি করে পাচার করছে। যে কারণে দেশে আজকের সংকটটা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার ‘অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে’ এদেশের রাজনৈতিক কাঠামোকে ‘ধ্বংস’ করেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রকে তারা ধবংস করে নতুন একটা মোড়ক দিয়েছে যে একটা গণতন্ত্রের মোড়ক আছে, কিন্তু ভেতরে তা পুরোপুরিভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা, যেটা হচ্ছে বাকশালের মত। আপনারা দেখেন যে, গত এক যুগে তারা আমাদের ৩৫ লাখের উপরে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে, ৬০০ এর উপরে নেতা-কর্মীকে গুম করেছে, সহাস্রাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে।

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ দিয়ে বিএনপির চলমান বিভাগীয় সমাবেশ শেষ হবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বিভাগীয় সমাবেশ করছি। ঢাকায় হবে লাস্ট বিভাগীয় সমাবেশ ১০ ডিসেম্বর। আমরা আমাদের ঘোষণা দিয়েছি যে, আমরা প্রত্যেক বিভাগে সমাবেশ কবে করব তা দিয়েছি। এরপরে দায়-দায়িত্ব তো সরকারের, তারা কী করবে না করবে। আওয়ামী লীগ কী ঘোষণা করল না করল, আমরা আমাদের লক্ষ্যে অটুট, অবিচল। সেখান থেকে আমরা এক পা নড়ব না এবং দেশের মানুষও নড়বে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে সংগ্রাম আমরা শুরু করেছি সেই সংগ্রাম আমরা চালিয়ে যাব অ্যাট অ্যানি কস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন