রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

খুলনায় রামদা-লাঠি-অস্ত্র নিয়ে শোডাউন করছে আ.লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন খুলনা-যশোর এলাকায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের লোকজন রামদা, লাঠিসোঠা, অস্ত্র নিয়ে শোডাউন করেছে। মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বিএনপির নেতাদের গ্রেফতার করছে। আমি এই গ্রেপ্তার এবং সন্ত্রাস সৃষ্টি করার যে প্রচেষ্টা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ করছি এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ গতকাল শুক্রবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, নির্যাতিত মানুষ জেগে উঠেছে। খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে কোনো অঘটন ঘটলে তার সম্পূর্ণ দায় সরকারকে নিতে হবে।

জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি; ভোলা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও যশোরে পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং সারা দেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে আজ শনিবার খুলনায় সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিভাগীয় সমাবেশ করবে বিএনপি

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শনিবার খুলনায় আমাদের বিভাগীয় সমাবেশ আছে। এই সমাবেশকে কেন্দ্রে করে সরকার ইতোমধ্যে একটা সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে খুলনায়। তারা পথে পথে নেতাকর্মীদের, সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করছে। খুলনার সমাবেশে যেন বাধা সৃষ্টি করা না হয়, তার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। প্রমাণিত হবে যে এই সরকার আসলে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আমাদের সভা-সমাবেশ তারা করতে দিতে চায় না।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু ত্রাস করছে তাই নয়, রাতে আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যে বাসায় অবস্থান করছেন, সেখানে পুলিশ রেট করেছে এবং সেখান থেকে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমি কিছুক্ষণ আগে খবর নিয়েছি, এখন নির্দেশ দিয়েছে পথে পথে যাকে যেখানে পাওয়া যাবে, তাকে সেখানে গ্রেপ্তার করার জন্য। তারা (স্থানীয় আওয়ামী লীগ) রামদা, লাঠিসোঠা, অস্ত্র নিয়ে শোডাউন করেছে; মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আমি এই গ্রেপ্তার এবং সন্ত্রাস সৃষ্টি করার যে প্রচেষ্টা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ করছি এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশ উপলক্ষে শুক্রবার ও শনিবার গণপরিবহন ধর্মঘটের পেছনে সরকারের হাত রয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব গণপরিবহন তারা বন্ধ করে দিয়েছে এবং কথা আছে ট্রেন, লঞ্চও বন্ধ করছে। কিন্তু এটায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা তাকে সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে ব্যাহত করছে। এখানে প্রমাণিত হয়েছে, সরকার চায় না মানুষ একটা গণতান্ত্রিক উপায়ে তাদের কথা, তাদের বক্তব্য, তাদের প্রতিবাদ সেটা প্রকাশ করুক।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, খুলনায় নিশ্চয় আপনাদের (গণমাধ্যম) প্রতিনিধিরা আছেন, তাদের কাছ থেকে জানতে পারবেন। পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট আপনারাই করেছেন। প্রত্যেকটা পত্র-পত্রিকায় যে কীভাবে তারা একটা রেইন অব ট্রেরর সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এটা তারা ময়মনসিংহে করেছিল, চট্টগ্রামে করেছিল। বাট নাথিং ওয়াট। কারণ তো একটাই। এরা (সরকার) জনভীতি রোগে ভোগে। পিপলস ফোবিয়া রোগ হয়েছে তাদের। মানুষ দেখলেই ভয় পায়। যে কারণে তারা নির্বাচনগুলো ওইভাবে করে, যাতে করে জনগণকে বাদ দিয়ে করা যায়, সেই পদ্ধতিতে তারা নির্বাচন করছে। রাষ্ট্র চালাতে চায় তারা মানুষকে বাদ দিয়ে। তাদের অসুখটাই তাই, রোগটাই তাই।

আওয়ামী লীগ সরকারের উপর প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ভয়টা কীসের? কী কারণে তারা সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে সমাবেশ বন্ধ করতে চাচ্ছে। একটাই তো কারণ। মানুষ যদি বাড়তে থাকে তাদের (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে না। জনগণের উত্তাল তরঙ্গে তাদের ভেসে যেতে হবে, এভাবে যদি জনগণ জেগে ওঠে, গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হবে। তখন তাদের অত্যন্ত ধিক্কৃত অবস্থায় সরে যেতে হবে। এটাই তাদের ভয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনারা (গণমাধ্যম কর্মী) নিশ্চয় অমর্ত্য সেনের বইটা পড়েছেন। যেখানে উনি ‘৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পর্যালোচনা করতে গিয়ে স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘৭৪ সালে দুর্ভিক্ষটা ছিল মানবসৃষ্ট, মানুষদের দ্বারা তৈরি করা। অর্থাৎ তখন যারা ক্ষমতাসীন ছিলেন, তাদের অব্যবস্থাপনা, তাদের দুর্নীতি, তাদের অযোগ্য, তাদের অদক্ষতার কারণে সেই দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল। আজকে সেই একই ঘটনা বাংলাদেশে ঘটছে। এটা আমরা বারবার করে বলে আসছি। দুর্ভিক্ষের আগাম পদধবনি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের বাংলাদেশের কৃষকদের প্রত্যেককে একটা করে সোনার মেডেল দেওয়া উচিত। তারা দিবারাত্র পরিশ্রম করে ফসল ফলায়। এ জন্য বাংলাদেশের মানুষ কোনো রকমের খেয়ে বেঁচে থাকে। এরা মুখে বলে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছি। আর অন্যদিকে লাখ লাখ টাকার খাদ্য বিদেশ থেকে আমদানি করছে। কয়েক দিন আগেও দেখেছেন, বিদেশ থেকে আমদানি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদের পুরো লক্ষ্য হচ্ছে লুট করা, চুরি করা।

প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী, যাদের বাধ্যতামূলক অবসর পাঠানো হয়েছে, তাদের প্রতি যদি অবিচার করা হয় তাহলে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তারা ন্যায়বিচার পাবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সব সময় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কথা বলছি। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, আমরা সামাজিক ন্যায়বিচার, মূল্যবোধ, মানবিক মূল্যবোধ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করবে। অবশ্যই আমরা এগুলো দেখব যেন সকলে সমান বিচার পায়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Ali Ahmed Chowdhury ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২২ এএম says : 0
এক মাঘে শীত যায় না অপেক্ষায় থাকো।
Total Reply(0)
Borhan Uddin Rana ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২২ এএম says : 0
যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত বিএনপির নেতাকর্মীরা!!
Total Reply(0)
hassan ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৫:১৯ পিএম says : 0
আমরা সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের বাবার দেশ না এটা এই আওয়ামী জঙ্গীদের কে আমরা সময় হলেই ধরবো একটাও আমাদের হাত থেকে ছাড়া পাবে না কারণ তারা আমাদের পরে জঘন্যতম অত্যাচার করছে আমাদের এখন দুর্ভিক্ষ দিয়ে মারছে এমনি তো ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে মারে কথা বললেই গুম করে দেয় দেশের সব টাকা-পয়সা লুটপাট করে বিদেশে নিয়ে গেছে আমাদের দেশটা এখন খালি কলস হয়ে গেছে
Total Reply(0)
Faridul Islam ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২২ এএম says : 0
পুলিশ ছাড়া মাঠে আয় আওয়ামিলীগের গুন্ডা বাহিনী তোদেরকে মোকাবেলা করতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল যতষ্ঠ
Total Reply(0)
Abdul Hamid ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫৩ এএম says : 0
No political party owns the Bangladesh police. Police should act as per rules without having biasness to ruling party. Why should they be silent spectators ignoring the BAL outfits perpetrating criminal offence or posing threat to law and order situation?
Total Reply(0)
Dr. Mohammad Hoque ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৫:২৩ এএম says : 0
চরম মুসলিম বিদ্বেষী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণার জন্য কোন পয়সা খরচ না করে বিতর্কমূলক ইস্যু সৃষ্টি করে আশাতীত প্রচার পেয়ে জয়লাভ করে। বিনপি কোন পয়সা খরচ না করে যানবাহন ধর্মঘটের মতো মেধাহীন সরকারি কর্মকান্ডের কারণে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অপরের জন্য গর্ত খোঁড়তে গিয়ে নিজেরাই নিজেদের গর্তে পতনের ব্যবস্থা করে চলেছে। আবার আসলো ফিরিয়া, জাহিলিয়া জাহিলিয়া।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন