করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারা দেশে চলছে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন। গতকাল ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ লকডাউন বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সারা দেশে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরাও ছিল তৎপর। রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় টহল, চেকপোস্ট ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে সেনা সদস্যরা বাইরে আসা লোকদের জরুরি প্রয়োজন খতিয়ে দেখেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হলেই চেকপোস্টে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অনেককে জেল-জরিমানাও করা হয়েছে।
লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করে ঘর থেকে বের হওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ৮ শতাধিক আটক এবং ৭৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। বিধিনিষেধ অমান্য করায় লালবাগে ৩৮ জন, ওয়ারীতে ৩ জন এবং উত্তরা থেকে ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া তেজগাঁওয়ে ১৬৭ জন, মিরপুরে ৭৫ জন এবং গুলশানে ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় ৮ জনকে মোবাইল কোর্ট সাজা দিয়েছে। মোট জরিমানা করা হয় ৬ হাজার ২০৭ টাকা। অপরদিকে ২২২টি গাড়িকে মামলা এবং দুই লাখ ৯৭ হাজার একশ টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় রেকার করা হয় ৪৬টি গাড়িকে।
আমাদের সংবাদদাতারা সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন, রাজধানীর সব সড়কে সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল ছিল। সকালে রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মতোই মিরপুর রোডের সোবহানবাগ, ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর, আসাদ গেট, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, শ্যামলী, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল মোড়, গাবতলী, খিলগাঁও, মালিবাগ ও গুলশানে সেনাবাহিনী ও পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে পুলিশের কড়াকড়ি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে একটু বেশি। এদিন রাস্তায় লোক চলাচলও ছিল খুবই কম। যদিও কিছু কিছু রিকশা, পণ্যবাহী যানবাহন ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল ছিল প্রায় স্বাভাবিক। মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে প্রায় ৮০০ জনকে আটক ও জরিমানা করেছে পুলিশ। সাড়ে ১০টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টেকনিক্যাল মোড় থেকে আমিনবাজার সেতু পর্যন্ত চারটি চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এ সময় প্রতিটি টেকপোস্টে লোকজনকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেও দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, সর্বাত্মক লকডাউনের গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে চট্টগ্রামে লকডাউন দেখতে রাস্তায় ঘোরাফেরা, অহেতুক ভিড় জটলা আড্ডা, মাস্ক ছাড়াই ঘর থেকে বের হওয়ার ঘটনা দেখা গেছে। যন্ত্রচালিত যানবাহন বন্ধ থাকার ঘোষণাও মানা হয়নি। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী পরিবহনের ঘটনাও ধরা পড়েছে। ফাঁকা সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে লকডাউন দেখতে এসে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন ২১ জন। আটক করা হয় ৫টি গাড়ি। পরে তাদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। সকাল থেকে মাঠে নামে সেনাবাহিনী। মাঠে তৎপর ছিল র্যাব-পুলিশ। দোকানপাট, মার্কেট ছিল বন্ধ। লোকজনের চলাচল সীমিত। রিকশা ছাড়া অন্য তেমন কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। কিন্তু পাড়ায়-অলিগলিতে লোকজনের অহেতুক জটলা ছিল। চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টম হাউস, ইপিজেডসহ কলকারখানা খোলা থাকায় সকালে রাস্তায় অফিসগামীদের ভিড় ছিল। গণপরিবহন বন্ধ এবং ভারী বর্ষণে সড়কে পানি থাকায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই সুযোগে রিকশা ভাড়া নেয়া হয় কয়েকগুণ বেশি। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে লকডাউন নিশ্চিত করতে সরকারি নির্দেশে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের অধীনে ২৮টি টহল টিম চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে টহল কার্যক্রম জোরদার ও চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টা থেকে সেনাবাহিনী চট্টগ্রাম নগরীতে টহল দিতে শুরু করে। একইসঙ্গে, চেকপোস্টেও দায়িত্ব পালন করছেন তারা। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ছয়টি চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। থানা পুলিশের পাশাপাশি ট্রাফিক বিভাগও নগরীতে অভিযান পরিচালনা করেছে। জেলা প্রশাসনের ১২টি টিম মাঠে ছিল।
যশোর ব্যুরো জানায়, সারা দেশের মতো এ জেলায়ও চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। যশোরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ জন্য প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সকাল থেকে জেলার সর্বত্র পুলিশ, বিজিবিসহ সেনাবাহিনীর টহল লক্ষ করা গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতনতার পাশাপাশি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনেককে জরিমানাও করা হয়েছে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন ভারি বর্ষণ হয়েছে। গতকাল বৃষ্টির মধ্যেই কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও তৎপর ছিলেন। বৃষ্টির কারণে লোকজন বাইরে বের না হওয়ায় তাঁদের খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। রাস্তায় টহলে ছিল পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সেনাবাহিনী এবং আনসার সদস্যদের গাড়ি। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতও মাঠে ছিল।
বগুড়া ব্যুরো জানায়, সারা দেশের মতো বগুড়াতেও সাত দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। গতকাল ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন বাস্তবায়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে তৎপর ছিলেন। বৃষ্টির মধ্যে শহরে দু’য়েকটা ব্যক্তিগত গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, রিকশা ছাড়া তেমন পরিবহন নেই। ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি নিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে সেনাবাহিনীকে।
ময়মনসিংহ ব্যুরো জানায়, কঠোর বিধি নিষেধে পালিত হয়েছে প্রথম দিনের লকটাউন। এদিন সরকার ঘোষিত বিধি নিষেধ অমান্য করায় জেলায় মোট ২৭৭টি মামলায় ২ লাখ ৩৫ হাজার ১০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সকাল থেকে নগরীর সড়কগুলোতে আগের মতো নেই যানবাহন ও মানুষের চাপ। হাতে গুনা সামান্য রিকশা ও অটোরিকশা ছাড়া তেমন কিছু চোখে পড়েনি। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বের হওয়া ব্যক্তিদের যানবাহন থামিয়ে কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়। জরুরি প্রয়োজন দেখাতে পারলেই তাদের ছাড়া হয়েছে। আর যথোপযুক্ত কারণ না দেখাতে পারলে গুণতে হয়েছে জরিমানা।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, সারা দেশের মতো দক্ষিণাঞ্চলেও কঠোর লাকডাউন শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি নগর মহানগরসহ উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত জনজীবন প্রায় স্থবির। এ বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা রোগী সনাক্ত ও মৃত্যু সংবাদের মধ্যে গতকাল থেকে শুরু হওয়া এ কঠোর লকডাউনের সফলতা নিয়ে আশাবাদী সাধারণ মানুষ। বরিশাল মহানগরীতে সব বিপণি বিতানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ব্যাংক বাদে সব সরকারি বেসরকারি অফিসসমূহও বন্ধ থাকায় সকাল থেকে অফিসগামীদের লক্ষ করা যায়নি পথে ঘাটে। দক্ষিণাঞ্চলে অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক অন্তত ৫০টি রুটে সড়ক পরিবহন বন্ধের পাশাপাশি ৩০টি নৌ রুটেও সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বরিশাল বিমান বন্দেরে সব উড্ডয়নও বন্ধ।
কক্সবাজার ব্যুরো জানায়, করোনা সংক্রমণ রোধে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন। ভোর থেকে লকডাউনের প্রথম দিনে শহরের প্রবেশমুখ কলাতলী মোড়, বাস টার্মিনাল ও লিংকরোডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয় চেকপোস্ট। মাঠে ছিল সেনাবাহিনী, বিজিবি, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যরা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় দেখা গেলে আটকানো হয়েছে চেকপোস্টে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সিলেট ব্যুরো জানায় : লকডাউনে বদলে গেছে সিলেটের দৃশ্যপট। রাস্তা খালি, নেই কোলাহল, জনমানবহীন এক শহর সিলেট। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাসা-বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না মানুষ। নগরীর প্রবেশদ্বার ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। লকডাউন বাস্তবায়নে রাস্তায় রাস্তায় র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহল। মহানগরী এলাকাসহ ১৩ উপজেলায় জেলা প্রশাসনের ৩৩টি মোবাইল কোর্ট ছিল সক্রিয়। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কাজে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা। অভিযানকালে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মানুষকে সচতেন করার পাশাপাশি সরকারি নির্দেশনা না মানায় জরিমানাও করেন। একই সাথে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সিলেটে অভিযান শুরু করেছে সিসিকের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকা থেকে শুরু করা হয় অভিযান। এবারের লকডাউন বাস্তবায়নে ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ের কার্যকর টহল নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা।
বাগেরহাট সংবাদদাতা জানান, গতকাল সকাল ৬টা থেকে বাগেরহাটে চলছে কঠোর লকডাউন। লকডাউনের প্রথম দিনে বাগেরহাটে দূরপাল্লার পরিবহনসহ জেলার অভ্যন্তরীণ ১৬টি রুটে সব ধরনের যাত্রীবাহী বাস, দোকান পাট, নৌযান, সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকেই পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী সড়ক ও মহাসড়কে টহল শুরু করে। বাগেরহাট জেলার গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে। রোগী এবং জরুরি কাজে ব্যবহৃত পরিবহন ছাড়া অন্য কোনো পরিবহন চলতে দেয়া হয়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, করোনার সংক্রমণ রোধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছিল কঠোর লকডাউন। সকাল থেকেই বন্ধ গণপরিবহন, শপিং কমপ্লেক্স, মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকান-পাট। তবে জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানসমূহ খোলা ছিল। সড়কে পণ্যবাহী ট্রাকসহ ছোট আকারের যানবাহন চলাচল করেছে। লকডাউনের কারণে শহরে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি অনেকটা কম দেখা গেছে।
নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার কঠোর লকডাউন ঘোষণা করলেও প্রথম দিন নেত্রকোনায় পালিত হলো ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন। সকাল থেকেই জেলা শহরে জন-সাধারণের ভীড় ছিল লক্ষ্যনীয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় লকডাউন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়।
ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠিতে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। গতকাল সকাল থেকে মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ ছিল। শহরে লোকজনের উপস্থিতিও কম। রিকশা ছাড়া কোনো যানবাহন চলতে দেয়নি পুলিশ। মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের টিম। এছাড়াও সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার বাহিনী শহরের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশী করছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হলে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে বাঁশ বেঁধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, সারা দেশের মতো এ জেলায়ও সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে। লকডাউন কার্যকরে সকাল থেকে মাঠে ছিল পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও সেনাবহিনী। সাধারণ মানুষ রাস্তায় প্রয়োজন ব্যতিত বের হয়নি, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস, আদালত, শায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সব বন্ধ ছিল।
লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, সকাল থেকেই লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন সড়কে কঠোর অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যানজটের শহর লক্ষ্মীপুর ছিল জনশূন্য। জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত কিছু যানবাহন ও দোকান ছাড়া সরকারি বেসরকারি অফিস আদালত, বিপণি বিতান, গণপরিবহন ছিল বন্ধ।
রাঙামাটি সংবাদদাতা জানান, সকাল ৬টা থেকে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে সকল দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ ছিল। মুদি দোকান, কাঁচা বাজারসহ ওষুধের দোকান ছিল খোলা। এদিকে গত দুই দিন ধরে বৃষ্টির কারণে রাঙ্গামাটির জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে উঠেছে। বৃষ্টির কারণে সরকারের বিধিনিষেধ আরো কঠোরভাবে পালিত হচ্ছে। লোকজন বাড়িঘর থেকে বের হতে পারছে না।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে কঠোরভাবে লকডাউন হয়েছে। সকাল থেকেই জেলার সর্বত্র মার্কেট, শপিংমল, দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন সড়কে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মোড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত স্থাপন করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ করছে। এছাড়া বিনা কারণে কাউকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না। পুরো জেলায় শহর এলাকায় মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করছে।
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা জানান, সকাল থেকেই সেনা টহল চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা করতে সামরিক বাহিনীর ১০টি পেট্রোল টিম কাজ করছে। সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব। মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। একজন করে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে জেলাব্যাপী ২২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। সাতক্ষীরাবাসীকে অকারণে ঘর থেকে বাইরে না বের হতে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান : সিরাজগঞ্জে প্রথম দিনে চলছে কড়াকড়ি সরকার ঘোষিত সাত দিনের লকডাউন। মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে জনসমাগম ও দোকানপাট খোলা খুব একটা চোখে পড়েনি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা। এদিকে সিরাজগঞ্জ শহরের প্রবেশের ৯টি মুখ বন্ধ করে দিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। এতে শহরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারছে না কোনো যানবাহন।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌরসদরের বিসিক রোডে শাহজাদপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুদ হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাস্ক না পরায় ও মিথ্যা কথা বলার কারণে একজনকে ৫০০০ টাকা ও ইভা ইলেকট্রনিক্সকে ২০০০ টাকা জরিমানা করেন ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন