২০২১ সালের ট্রাফিকিং ইন পারসনস (টিআইপি) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। দেশটির স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ সরকার মানব পাচার নির্মূলের ন্যূনতম মানদন্ডগুলো সম্পূর্ণরূপে পূরণ করে না তবে তা করার জন্য উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গত বছরের ন্যায় এ বছরও ‘স্তর ২› তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। তিন বছর ধরে রিপোর্টে ‘স্তর ২ পর্যবেক্ষণ› তালিকায় থাকার পর গত বছর পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ‘স্তর ২› তালিকায় উঠে এসেছিল বাংলাদেশ।
ভয়েস অফ আমেরিকা জানিয়েছে- এবারের প্রতিবেদনে ১৮৮টি দেশের মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং পাচারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ওপর ভিত্তি করে চারটি স্তরে প্রত্যেকটি দেশকে স্থান দেয়া হয়েছে। প্রথম স্তরে রয়েছে শ্রেষ্ঠ তালিকা এবং তৃতীয় স্তরে সবচেয়ে খারাপ তালিকা। দুটি মধ্যম স্তর রয়েছে: স্তর ২ এবং স্তর ২ পর্যবেক্ষণ তালিকা। যে দেশসমূহকে তৃতীয় স্তরে স্থান দেয়া হয়েছে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক বিদেশী সহায়তা সীমিত করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, মানব পাচার বিশ্বব্যাপী একটি সংকট, এটি মানবিক দুর্দশার এক বিরাট উৎস। শিশু সহ মোট ২ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ এর শিকার হচ্ছে। এই অপরাধ মানবাধিকারকে অপমান করে, মানব মর্যাদাকে অপমান করে।
এবার মানব পাচার বিষয়ে যথাযথ কোন পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য ১৭টি দেশকে দোষারোপ করা হয়েছে। আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, বার্মা (মিয়ানমার), চীন, কোমোরোস, কিউবা, ইরিত্রিয়া, ইরান, নিকারাগুয়া, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনিজুয়েলা তৃতীয় স্তরে রয়েছে। এ বছর তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে গিনি বিসাউ এবং মালয়েশিয়া। পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা সংবাদকর্মীদের বলেছেন, চীনকে তৃতীয় স্তরে রাখা হয়েছে। জোর করে শ্রমিকদের কাজ করানোর সরকারী নীতি বিশেষ করে ঝিনজিয়াং এর আটক শিবিরে, যেখানে মূলত পেশাগত প্রশিক্ষণের অজুহাতে জাতিগত ও ধর্মীয় মানুষদের লক্ষ্যে পরিণত করা হয়েছে, এই কারণে চীনকে তৃতীয় স্তরে রাখা হয়েছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ ছয়টি মিত্রদেশ- সাইপ্রাস, ইসরাইল, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পর্তুগাল এবং সুইজারল্যান্ডকে – মানব পাচার রোধে আন্তর্জাতিক মান পূরণ না করার জন্য প্রথম স্তর থেকে দ্বিতীয় স্তরে নামিয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, বার্ষিক মানব পাচার বিষয়ক ওই প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে গত বছরের ন্যায় আবারো উঠে এসেছে কুয়েতে মানব পাচার ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক সাংসদ কাজী শহিদ ইসলামের (পাপুল) বিষয়ে বলা হয়েছে, ্রসরকার তদন্ত শুরু করে এবং কুয়েতি কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়ে ২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিককে কুয়েতে প্রেরণকারীর সংসদ সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে। সরকার মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার ৯৫ শতাংশ অর্থায়ন করেছে বলেও জানিয়েছে। তবে সরকার বেশ কয়েকটি মূল জায়গায় ন্যূনতম মানদন্ডও পূরণ করেনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন