বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

মানচিনির জাদুর কাঠির ছোঁয়া

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

ইতালিয়ান ফুটবলে সূচনা হল নতুন যুগের। ইউরোপিয়ান ফুটবলে ইতালিয়ান সাম্রাজ্যের নবজাগরণ বলুন আর ইতালিয়ান ফুটবলের রেনেসাঁ-সবকিছুর নেপথ্যের নায়ক ওই একজনই। নাম রবার্তো মানচিনি। মানচিনির গল্পটা ধ্বংসস্ত‚প থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর, গল্পটা নিজেদের ভুলতে বসা ফুটবল ইতিহাস, ঐতিহ্যকে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত করার।
চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের বাধা উতরাতে পারেনি। ১৯৫৮ সালের পর প্রথমবার বিশ্বকাপের মূল পর্বে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল ইতালি। ২০১৭ সালের নভেম্বর, ইতালির ফুটবল আকাশের সূর্যটা তখন প্রায় অস্তমিত। ছয় মাস পর ইতালির ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন রবার্তো মানচিনি।
ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়েও দলটার অবস্থান তখন যাচ্ছে-তাই। দলে ছিল না বড় কোনো নাম। বুনোচ্চি-কিয়েল্লিনিদের মতো অভিজ্ঞ যারা ছিলেন, তারাও নিজেদের হারিয়ে খুঁজছেন। নতুন করে দল সাজান ৫৬ বছরের ‘মাস্টার ট্যাকটিশিয়ান’ রবার্তো মানচিনি। দলের মধ্যে বিশ্বাস আনেন, এখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। আনেন কৌশলগত পরিবর্তনও।
মানচিনির জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় বদলে যেতে থাকে ইতালি। পরের গল্পটা যেন রূপকথাকেও হার মানায়। জিততে ভুলতে বসা ইতালি হারতে ভুলে যায়। একের পর এক জয় আসতে থাকে। ২৮ ম্যাচ অপরাজিত থেকে ইউরো শুরু করে মানচিনির দল। আনবিটেন সেই টালিটাকে ৩৪-এ টেনে নিয়ে জেতেন শিরোপা।
ইউরোর গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচেই তুরস্ককে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দেয়। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচেও একই চিত্র। ইতালির জয় ৩-০ গোলে। চিরায়ত রক্ষণাত্মক ফুটবল থেকে বের করে পুরো দলের চরিত্রই বদলে দেন মানচিনি। অবশ্য রক্ষণকে কবরচাপা দিয়েছেন তা নয়। আক্রমণকে পাখির চোখ করে রক্ষণকে লুকিয়ে ফেলেন আস্তিনের নিচে। দরকারি সময়ে যা ঠিকই বেরিয়ে এসেছে।
জমাট রক্ষণ আর গতিময় ফুটবলের সমন্বয়ে এভাবেই একের পর এক প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেয় আজ্জুরিরা। সাফল্য আর নান্দনিকতায় প্রতিটি ম্যাচেই নিজেদের ছাপিয়ে যান মানচিনির শিষ্যরা। আর ডাগআউটে মানিচিনি তারক্ষুরধার ফুটবল মস্তিষ্ক দিয়ে এলোমেলো করে দেন প্রতিপক্ষের ‘গেমপ্ল্যান।’
সেমিফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচ বাদ দিলে এবারের ইউরোতে প্রতিটি ম্যাচেই আধিপত্য দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছে ইতালি। তবে মানচিনির সবচেয়ে বড় পরীক্ষা ছিল ফাইনাল ম্যাচে। ওয়েম্বলিতে ইতালির প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। আগের ৩৩ ম্যাচের অপরাজিত ইতালি ফাইনালেও অজেয়। টাইব্রেকে ওয়েম্বলির হাজার হাজার ইংলিশ সমর্থকের হৃদয় ভেঙে তাদের ঘর থেকে ছিনিয়ে নেন শিরোপা। মানচিনির জাদুর কাঠিতে ১৯৬৮ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপসেরা ইতালি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন