স্রোতের মতো মানুষ ছুটছে গ্রামের দিকে। আর বাড়তি যানবাহনের চাপে সৃষ্টি দীর্ঘ যানজট। এতে নাকাল ঘরমুখো মানুষ। দেশের দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার ঘরমুখো মানুষ ভিড় করছে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটে। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে যাত্রীরা ঘাটে উপস্থিত হয়ে ফেরি ও লঞ্চে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। রাতভর বৃষ্টি আর বৃষ্টি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছুটছে ঈদে ঘরমুখো মানুষ। দীর্ঘ যানজটে নাকাল ঈদে ঘরমুখো মানুষ। রাত পোহালেই ঈদুল আজহা। যানজটে আটকে থাকা যাত্রীরা ঈদুল আজহার নামাজ বাড়িতে গিয়ে পড়তে পারবে কি না তাও জানেন না। অপর দিকে তীব্র স্রোতে তিন কিলোমিটার ঘুরে ফেরি পার হচ্ছে বাংলাবাজার।
মাওয়া চৌরাস্তা থেকে পায়ে হেঁটে ঘাটে যাচ্ছে যাত্রীরা। কোনো গাড়ি যেতে দেখা যায়নি। বৃষ্টি আর কাদায় যাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকগুন বেড়ে গেছে।
ফেরিঘাটের যানবাহন দীর্ঘ সারি আর লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। ভোর সকাল থেকেই মোটরসাইকেল এবং সাধারণ যাত্রী দখলে নেয় ফেরিগুলো। ফেরিগুলো পাড়ি দিতে হচ্ছে যাত্রী নিয়ে। বিশেষ করে লঞ্চঘাটে সকাল থেকেই যাত্রীদের গাদাগাদি। লঞ্চে মানা হচ্ছে না নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি। অর্ধেক যাত্রী ধারণের কথা থাকলেও আজও অধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করছে। ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের চাপে লঞ্চঘাটে উপেক্ষিত থাকছে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব।
এ দিকে পদ্মার তীব্রস্রোত ও গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বাড়ায় ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় অবস্থান করছে ৬ শতাধিক ব্যক্তিগতগাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক।
এ ছাড়া ঘাট অভিমুখে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পারাপারের অপেক্ষায় শতশত পণ্যবাহী ট্রাক। ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি ও ৮২টি লঞ্চ সচল রয়েছে।
হাসাড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাব আহম্মেদ জানান, হাজার হাজার মোটরসাইকেল, যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেট কার, পণ্যবাহী ট্রাক যানজটে আটকে আছে। সমষপুর থেকে মাওয়া হিলশা পর্যন্ত যানজট লেগে আছে। ফজরের আযানের পর থেকে এই যানজট শুরু হয়েছে। যানজট ছাড়াতে হাইওয়ে পুলিশের ৪টি ইউনিটে ফজর থেকে কাজ করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বিআইডাব্লিউটিএর শিমুলিয়াঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ জানান, নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি সচল রয়েছে। ঘাট এলাকায় পারাপারের জন্য যাত্রী ও পণ্যবাহী মিলিয়ে ৬ শতাধিক যানবাহন রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল যানবাহন পারাপার করা হবে। তবে সকাল থেকে যাত্রী এবং মোটরসাইকেল চাপ রয়েছে ফেরিগুলোতে। বেশ কয়েকটি ফেরি ছাড়তে হয়েছে শুধু যাত্রী ও মোটরসাইকেল নিয়ে। হাজার হাজার মোটরসাইকেল অপেক্ষমান রয়েছে।
বিআইডাব্লিউটিএর শিমুলিয়াঘাটের মেরিন কর্মকর্তা জানান, নদীতে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ঘাটে যেতে ফেরিগুলোর দ্বীগুন সময় লাগছে। প্রতিটি ফেরিকে স্রোতের বিপরীতে ও নদীতে ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার অধিক পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন