পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়েছে বুধবার। দেশের লক্ষ লক্ষ মাদ্রাসা, এতিমখানা ও দ্বীনি প্রতিষ্ঠান পবিত্র ঈদুল আযহা তথা পশু কোরবানী’র চামড়া’র দিকে তাকিয়ে থাকেন। মাদ্রাসা, এতিমখানা ও দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলি বাড়ী বাড়ী গিয়ে পশু চামড়া সংগ্রহ করে থাকেন পরে আড়তে এই চামড়া বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ব্যয় মেটানো হয়। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশে চামড়া’র বাজারে অভাবিত ধ্বস নামে। এবার এর উপর যোগ হয়েছে করোনা’র প্রভাব। করোনা’র কারণে এবার কোরবানী হয়েছে কম। আবার অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এবার অনেকেই গরুর পরিবর্তে ছাগল কোরবানী দিয়েছে। কিন্তু এবার ছাগলের চামড়ার ক্রেতা নাই। আড়তে এনে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে এবং একটি চামড়া ৫ থেকে ১০ দাম বলায় মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অনেকেই চামড়া ফেলে দিচ্ছে। শুধু ছাগল নয় ছোট গরুর চামড়ার ক্রেতা নাই। আবার গরুর চামড়া সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা বলা হলেও ৪’শ টাকার উপরে চামড়া কেনা হচ্ছে না। ফলে পরিবহনসহ গরুর চামড়া আড়তে বিক্রি করতে যেয়ে ক্ষতির মুখে পড়ছে মাদ্রাসাসহ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। আর ছাগলের চামড়া নিয়েতো বিপাকেই পড়েছে মাদ্রাসাগুলো। ক্রেতা না থাকায় ছাগল ও ছোট নিম্নমানের গরুর চামড়াগুলি আবর্জনা হিসাবে ফেলে দেয়া হয়েছে। যা পরবর্তীতে দিনাজপুর পৌরসভার ময়লা পরিবহন ট্রাকে তুলে মাতাসাগর এলাকায় ময়লার ভাগাড়ে ফেলা দেয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দিনাজপুরের চামড়া আড়ত রামনগরে গিয়ে দেখা গেলো এখনও পুরোপুরি চামড়া আসতে শুরু করেনি। যা এসেছে তার অর্ধেকও চামড়া কিনতে পারছে না চামড়া ব্যবসায়ীরা। বড় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৫’শ টাকায় কেনার খবর পাওয়া গেছে। যদিও সরকারীভাবে সর্বোচ্চ দাম এক হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে ছাগলের চামড়া দোয়া করে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা দেয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের কথা আমরা ছাগলের চামড়া কিনতে আগ্রহী নই।কিন্তু অনেকেই নিয়ে আসছেন। পরিচিতি এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা দেয়া হচ্ছে যাতে পরিবহন খরচটি উঠে তাদের। দিনাজপুরের বেশ কয়েকটি এতিমখানা ও মাদ্রাসা রয়েছে যারা তাদের প্রতিষ্ঠানে দান করা চামড়া সরাসরি ঢাকায় ট্যানারি অথবা বড় আড়তে দিয়ে থাকে। কিন্তু এবার চামড়া সংগ্রহে আগ্রহ দেখা যায়নি মাদ্রাসা, এতিমখানা, দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলির। ছিল না মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দৌড় ঝাপ। অনেক মাদ্রাসা কোরবানীর চামড়া থেকে কালেকশনের উপর নির্ভর করে থাকে। কিন্তু গতবছর থেকে এই খাতের আয় নাই বললেই চলে। করোনা’র পর মাদ্রাসাগুলি পুরোপুরি খোলা হলে চরম অর্থনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হবে। দিনাজপুরে ছাগল ও ছোট নিম্নমানের গরুর চামড়ার ক্রেতা না থাকায় আবর্জনা হিসাবে ফেলে দেয়া হয়েছে। ফেলে দেয়া এসব চামড়া পৌরসভার গাড়ী দিয়ে মাতাসাগর এলাকার ময়লার ভাগাড়ে ফেলা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন