সোনাগাজী উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর, বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী কার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে চাঁদা বাজির অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নামে স্ব-প্রণোদিত হয়ে আজ ২৫ আগস্ট বুধবার মামলা নিয়েছেন ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসাইন। একই সঙ্গে তিনি সোনাগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাজেদুল ইসলামকে অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার নাম নুর উদ্দিন। তিনি উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী জাকির হোসেন বলেন, চাঁদাবাজি নিয়ে ফেনীর স্থানীয় দুটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। আদালত আজ স্ব-প্রণোদিত হয়ে মামলা নিয়ে সোনাগাজী থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত চিঠি সোনাগাজী থানায় পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে সোনাগাজী থানার ওসি মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশের কথা তিনি শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে কাগজ এখনো পাননি। কাগজ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
জানা যায়, ইউনিয়নের উত্তর চর চান্দিয়া এলাকার নুরুল আফসার নামের এক দিন মজুরের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় সংক্রান্ত ৪ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হলে নুরুল আফসার এর সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে তাঁকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন। ভুক্ত ভোগী নুরুল আফসার বলেন, ঘর বরাদ্দ পেতে স্থানীয় ইউপি সদস্য জামশেদ আলমের সহযোগিতায় তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপজেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেন। এর কিছুদিন পর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা নুর উদ্দিন তাঁকে জানান, ৪০০ লোক ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করলেও অনেক কষ্টে ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনিসহ নুরুল আফসার ১৩ জনের ঘর পাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছেন।
ঘরের রেজিস্ট্রির প্রক্রিয়া চলছে, এখন ২০ হাজার টাকা না দিলে ঘর পাওয়া যাবে না। টাকা দিতে অস্বীকার করলে নুর উদ্দিন তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরে নুর উদ্দিন আবারও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা না দিলে ঘর অন্যদের নামে বরাদ্দ হয়ে যাবে বলে জানিয়ে দেন। পরে বাধ্য হয়ে তিনি স্থানীয় একটি বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নুর উদ্দিনকে ১৫ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকা পরে দেবে বলেন। স্থানীয় বাসিন্দা সফি উল্যাহ ও সাহাব উদ্দিন বলেন, নুর উদ্দিন এলাকার বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ঘর, বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে চাঁদা নিয়েছেন। তাঁদের দুজনের কাছ থেকেও ১০ হাজার করে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তাঁরা নুর উদ্দিনের বিরুদ্ধে সালিস বাণিজ্য ও মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন