এক সপ্তাহের ব্যাবধানে ফের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের চর সিলিমপুর এলাকায়। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ভাঙ্গনে বিকেল পর্যন্ত রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাধের স্থায়ীভাবে নির্মিত সিসি ব্লকের অন্তত একশত মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলিন হয়। এছাড়াও বিকেল সাড়ে চারটার সময় ভাঙ্গনের কারনে দেবে গিয়ে ভেঙ্গে চুরমার হয় চর সিলিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এখনও ভাঙ্গন ঝুকিতে অন্তত ৫০ টি বসতবাড়ি ও রাজবাড়ী শহর রক্ষাবাধ।
সরেজমিনে শুক্রবার বিকেলে চর সিলিমপুর এলাকায় গিয়ে দেখাযায়, সেখানে উৎসুক জনতা ভীর করে ভাঙ্গনের চিত্র দেখছে। আর প্রমত্তা পদ্মার ভাঙ্গনে বড় বড় চাপ ভেঙ্গে পরছে। সেই সাথে চর সিলিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা ভবনটিও আস্তে আস্তে নদীতে দেবে যাচ্ছে।
এ সময় চর সিলিমপুর এলাকার বাসিন্দা আছিয়া বেগমের কান্না যেন থাকছেই না। কান্নার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বামী নেই ! প্রমত্তা পদ্মা দুইবার গিলে খেয়েছে বসতী। এখন যেখানে বসবাস করছি সেটিও যায় যায় অবস্থা। তাই কান্না ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
একই এলাকার বাসিন্দা সেলিম হোসেন বলেন, গত সপ্তাহের বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিনে অন্তত ৪০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলার পরও তারা জোরালো কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। যে কারনেই আজকের ভাঙ্গন। শুক্রবারের ভাঙ্গনে চরসিলিমপুর বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে এখন এই এলাকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পরবে।
চরসিলিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইমান আলী ফকির বলেন, পদ্মার ভাঙ্গনে পাকা ভবনটি নদীগর্ভে। ভাঙ্গন যেভাবে অব্যহত আছে তাতে টিনশেড ঘড়টিও বাচানো মুশকিল হয়ে পরবে। তিনি আরো বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড দুই থেকে তিন মাস আগে স্থায়ীভাবে সিসি ব্লক দিয়ে বাধ দিয়েছে। সেই ব্লক ভেঙ্গে যাচ্ছে কাছের গাফিলতি বা মান নিয়ে কোন গাফিলতি হয়েছে কিনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করেন তিনি।
এদিকে ভাঙ্গনের খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের আসেন রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমি মোঃ সায়েফ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরিন আক্তার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজবাড়ীর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর।
এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজবাড়ীর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, হঠাৎ পদ্মার পানি কমে যাওয়ার কারনে রাজবাড়ীর বিভিন্ন পয়েন্টে বার বার ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে। ভাঙ্গনরোধে আমরা সকাল থেকে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করেছি। আর শনিবার সকাল থেকে জিও টিউব দ্বারা বালুর ব্যাগ ফেলা শুরু হবে। ভাঙ্গনরোধে যা যা করনীয় পানি উন্নয়নবোর্ড তা গ্রহন করবে। এই এলাকার বসতবাড়ি রক্ষায় যত জিও ব্যাগ ফেলা প্রয়োজন তত পরিমান জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশনা আছে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন