শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

রামগড় পৌরসভা নির্বাচন ২ নভেম্বর

খাগড়াছড়ি জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০২১, ৫:০৩ পিএম

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় দেশের ১০টি পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর বুধবার নির্বাচন কমিশনের ৮৬তম সভা শেষে ইসি সচিব হুমায়ূন কবীর খন্দকার।করা হয়েছে,সপ্তম ধাপে ইলেকট্রনিক (ইভিএম) পদ্ধতিতে ২ নভেম্বর ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
২৯শে সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের( ইসি)৮৬তম সভা শেষে ইসি সচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বাংলাদেশের আরো ১০টি পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন,ঘোষণা কৃত পৌরসভা গুলো তফসিল নভেম্বর ইভিএমের মাধ্যমে রামগড় পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ করা হবে। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলে শেষ তারিখ আগামী ৯ অক্টোবর। মনোনয়রপত্র বাছাই ১১ অক্টোবর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ অক্টোবর।
ঘোষিত পৌরসভাগুলোর মধ্যে খাগড়াছড়ির সাবেক মহকুমা শহর রামগড় পৌরসভা রয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী আমেজ বইতে শুরু করেছে।

ইতিমধ্যেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের টিকেট পেতে মরিয়া নির্বাচনে সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীরা। এদের মধ্যে রয়েছেন টানা ২বার নির্বাচিত বর্তমান পৌর মেয়র ও সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ শাহজাহান (রিপন), পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা রফিকুল আলম কামাল এবং পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরর নাম। এছাড়া, বিরোধী দল বিএনপি থেকে এখনো কেউ প্রকাশ্যে প্রচারণায় না আসলেও সাবেক কাউন্সিলর জসিম উদ্দিনের নির্বাচনে প্রার্থী হবার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা আওয়ামীলীগ থেকে নতুন করে কেউ মনোনয়ন চাইলেও তাতে অবাক হবার কিছু নেই।

এছাড়া, বর্তমানে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল আলম কামাল ইতিপূর্বে জনপ্রতিনিধির কোন দায়িত্ব পালন না করলেও রাজনীতিতে ভালোই অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তিনি প্রবীন রাজনীতিবিদ মরহুম আবদুল গফুর সর্দারের সন্তান। রফিকুল আলম কামাল ১৯৯৬ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েই পুরোদমে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন । তিনি ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরে কাউন্সিলের মাধ্যমে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা দীর্ঘ বছর পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
অন্যদিকে, আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের রামগড় উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া তিনি উপজেলা যুবলীগের সভাপতিও। এর আগে তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ১নং রামগড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন বেশ সুনামের সঙ্গে। বর্তমান পৌর মেয়র মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, আমি পরপর দুবার রামগড় পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছি। প্রথমবার নির্বাচিত হওয়ার পর পৌর এলাকায় সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের গতি দেখে দ্বিতীয়বার নির্বাচনে জয়ী হতে বেগ পেতে হয়নি। পৌরবাসী সুযোগ দিলে আগামীতে এই পৌরসভায় একটি শিশু পার্ক, নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান স্থাপন, পৌরসভা অভ্যন্তরে অডিটরিয়াম স্থাপন ও ঈদগাহ ময়দান প্রশস্তকরণের পরিকল্পনা রয়েছে, তবে এসব কাজ শুধু পৌরসভার রাজস্ব দিয়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এখানে দরিদ্র ও মধ্যবৃত্ত শ্রেণির মানুষের বসবাস বেশি, সে তুলনায় গড়ে উঠেনি মেইল, কারখানাসহ উন্নয়নমুখী কর্মযজ্ঞ। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীসেতু-১ কেন্দ্রিক স্থলবন্দর ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনে এখানকার মানুষকে সম্পৃক্ত করা গেলে পৌরবাসীর জীবনধারাসহ অর্থনৈতিক ব্যাপক পরিবর্তন সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। অবশ্য এজন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও পৌর নাগরিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন- বিশেষ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সর্বাধিক সহযোগিতা লাগবে।

অন্যদিকে, ডিজিটাল রামগড় বিনির্মান, শহরের উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলের অঙ্গিকার ব্যক্ত করে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের বলেন, তিনি মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে জনবান্ধব ডিজিটাল পৌরসভা গঠনে সর্বাত্নক ভূমিকা রাখবেন।
পরিসংখ্যান বলছে, এবার জয় পেলে বর্তমান পৌর মেয়রের এটি হবে তৃতীয় জয়, তাই এটি তার জন্য হ্যাট্রিক চান্স। তবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বধীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি ক্রমবর্ধমান আস্থার কারণে তিনি নৌকার টিকিট পেতে মরিয়া। এখন দেখায় বিষয়, আওয়ামী লীগ টানা দুই মেয়াদের এই পৌর মেয়রকেই মনোনয়ন দেয় নাকি নতুন কাউকে চালকের আসনে বসায়।

উল্লেখ্য, রামগড় পৌরসভা ২০০১ সালের ৪ জানুয়ারি ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে যাত্রা শুরু করে ২০০৫ সালের ১১ অক্টোবর ‘খ’ শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। এ পৌরসভায় এখনো শতভাগ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত হয়নি। রয়েছে যানজট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সড়কবাতি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানা সংকট। ২০.৮৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। মোট ভোটার ২২ হাজার ৪৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ৫৬৩ ও মহিলা ১০ হাজার ৪৮৪ জন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটার ছিলো ১৮ হাজার ২শত ৭৩ জন, যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭ শত ৭৪ জনে । এ পৌরসভায় লোকসংখ্যার আনুপাতিক হারে প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন।
পৌরসভার আওতায় রয়েছে হাটবাজার ৪টি, কলেজ ১টি, উচ্চ বিদ্যালয় ৫টি, মাদ্রাসা ৮টি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩টি, সরকারি হাসপাতাল ১টি, মসজিদ ২৮টি, মন্দির ২০টি, গির্জা ১টি। পৌরসভার মোট রাস্তা ১৬৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাকা রাস্তা ৯৫ কিলোমিটার, আধাপাকা ৫৫ কিলোমিটার এবং কাঁচা রাস্তা ১৫ কিলোমিটার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন