অতি বৃষ্টিতে বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। পোকা মাকড়ের উপদ্রবও ছিল। বরাবরের মত এবারও ছিল ভালো বীজের সংকট। সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে খুলনার আবাদি জমিগুলোতে এখন বাতাসে রোপা আমনের শীষ দোল খাচ্ছে। হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ দেখা না দিলে, এবার আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, গেল বছর খুলনায় ৯২ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছিল। এবার ৯৩ হাজার ৩১৬ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯২ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন। খুলনা জেলার রূপসায় ৩ হাজার ৮৯০ হেক্টর, বটিয়াঘাটায় ১৭ হাজার ৬০০ হেক্টর, দিঘলিয়ায় ১ হাজার ৯২০ হেক্টর, ডুমুরিয়ায় ১৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর, পাইকগাছায় ১৭ হাজার ২৫৩ হেক্টর, তেরখাদায় ৯০৫ হেক্টর, দাকোপে ১৯ হাজার ১৩৫ হেক্টর, কয়রায় ১৪ হাজার ৭২০ হেক্টর, ফুলতলায় ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর, দৌলতপুরে ৬৭ হেক্টর ও লবণচরায় ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তর খুলনা’র পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যদি না হয়, তাহলে খুলনায় রোপা আমন আবাদে কাঙ্খিত ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। জুলাইয়ের শেষে টানা চার দিনের বৃষ্টিতে এক হাজার ৮১৫ হেক্টর জমির আমন ধানের বীজতলা ডুবে গিয়েছিল। পরবর্তীতে কৃষকরা সে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠে। এবার রোগ বালাই তেমন একটা নেই। কিছুটা পোকা মাকড়ের উপদ্রব আছে।
রূপসা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুজ্জামান বলেন, আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে রোপা আমন আবাদে বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে। পোকা-মাকড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। কারেন্ট পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আলোর ফাঁদ ব্যবহারের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের চাষি মোঃ ওমর আলী শেখ বলেন, আমনের ভাল ফলন আশা করছি। ফসলকে রোগ থেকে বাঁচাতে বালাইনাশক দেয়া হয়েছে। পোকামাকড় ঠেকাতে কীটনাশকের পরিবর্তে আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে। আগামী মাসে (কার্তিক-অগ্রহায়ণ) ধান কাটা শুরু হবে। খরচ বাদে এবার আমনে বেশ লাভ হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন