কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন কর্ণফুলী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্পের দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ বা টিউবের খননকাজ শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার খননকাজ সফলভাবে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা। আগামী জানুয়ারি নাগাদ সেখানে সø্যাবের কাজ শুরু হবে। আনোয়ারা প্রান্ত থেকে শুরু হওয়া এই টিউব এসে মিশেছে নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে। এটি খনন করতে সময় লেগেছে ১০ মাস। এর আগে প্রথম টিউবের খননকাজ করতে সময় লেগেছিল ১৭ মাস। প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানিয়েছেন এখন টিবিএম (টানেল বোরিং মেশিন) ধীরে ধীরে বের করে নিয়ে আসতে হবে। এটি পরিষ্কার করতে দুই থেকে আড়াই মাস সময় লাগবে। টিউবের ভেতরে যে অংশের ওপর দিয়ে গাড়ি চলবে, সেখানে সø্যাবের কাজ আগামী জানুয়ারিতে শুরু হবে। আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। দুই সুড়ঙ্গে দুটি করে মোট চারটি লেন থাকবে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকবে। আর আনোয়ারা প্রান্তে রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্ত থেকে এই খননকাজ শুরু হয়েছিল। ওই সময় ভার্চ্যুয়ালি দ্বিতীয় সুড়ঙ্গের খননকাজের উদ্বোধন করেছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে প্রথম সুড়ঙ্গের খননকাজ শেষ হয় গত বছরের ২ আগস্ট।
২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীর তলদেশে দেশের প্রথম টানেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরতায় সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিটির প্রশস্ততা ৩৫ ফুট। টানেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও চীনের সরকারি পর্যায়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। চুক্তি সই হয় ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর। চীন সরকার এই টানেল নির্মাণের জন্য মনোনীত করে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) লিমিটেডকে।
এই টানেল দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা কক্সবাজার ও দক্ষিণ চট্টগ্রামগামী যানবাহন সিটি আউটার রিং রোড হয়ে টানেলের মাধ্যমের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। চট্টগ্রাম মহানগরীর সাথে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজতর হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন