বিশ্ব মানবের প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অসংখ্য ও অগণিত নেয়ামতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত হচ্ছেন- হাবীবে কিবরিয়া আনওয়ারে সায়াদাত, ফখরে মওজুদাত, রাহমাতুল্লিল আলামিন, আহমাদ মুজতবা, মোহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুতরাং এই ধরণীর বুকে তাঁর তাশরীফ আনয়ন। মানব জাতির জন্য মহা সৌভাগ্য চরম সমৃদ্ধি ও পরম আনন্দের কারণ। কেননা, তাঁর প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা, এশক ও মহব্বত পেশকারী ব্যক্তি কৃপাময় মাওলায়ে কারিমের অনুকম্পা লাভে ধন্য হয়, কৃতার্থ হয়। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ জাল্লা শানুহু এই বিশেষত্বটি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। এরশাদ হয়েছে : ‘হে প্রিয় রাসুল! আপনি বলে দিন, মানুষের একান্ত কর্তব্য হলো আল্লাহর নেয়ামত ও রহমতকেই প্রকৃত আনন্দের বিষয় মনে করা। এটাই উত্তম সে সমুদয় থেকে যা তারা সঞ্চয় করছে। (১০ নং সুরা-ইউনূস : আয়াত-৫৮)।
এই আয়াতে কারিমায় দিকনির্দেশনা হচ্ছে এই যে, মানুষের কর্তব্য হলো আল্লাহ তায়ালার রহমত ও অনুগ্রহকেই প্রকৃত আনন্দের বিষয় মনে করা এবং একমাত্র তাতেই আনন্দিত হওয়া। দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী ধন-সম্পদ, আরাম-আয়েশ ও মান-সম্ভ্রম কোনোটিই প্রকৃতপক্ষে আনন্দের বিষয় নয়। কারণ প্রথমত: এগুলো কেউ যত অধিক পরিমাণে অর্জন করার পরও তা অসম্পূর্ণই থেকে যায়। পরিপূর্ণ হয় না। দ্বিতীয়ত: এগুলোয় পতনের আশঙ্কা লেগেই থাকে। তাই উক্ত আয়াতের শেষাংশে বলে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহর করুণা ও অনুগ্রহ সে সকল ধন-সম্পদ ও সম্মান এবং সাম্রাজ্য অপেক্ষা অধিক উত্তম যেগুলোকে মানুষ নিজেদের সারা জীবনের সম্বল বিবেচনা করে সংগ্রহ করে থাকে।’
এই আয়াতে দুটি বিষয়কে আনন্দ ও উৎফুল্লতার উপকরণ বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। একটি হলো ফযল এবং অপরটি হলো রহমত। হজরত আনাস (রা:) বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ফযল-এর অর্থ হলো- কোরআন এবং রহমতের অর্থ হলো- কোরআন অধ্যয়ন ও সে মোতাবেক আমল করার তৌফিক লাভ করা। এ বিষয়টি হজরত বারা ইবনে আজেব (রা:) এবং হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) হতেও বর্ণিত হয়েছে। আবার কোনো কোনো তফসিরকার মনীষী বলেছেন, ফযল অর্থ কোরআন আর রহমত অর্থ ইসলাম। তবে মোদ্দাকথা হচ্ছে এই যে, কোরআনের সাথে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াত ও রিসালাতের জীবনকাল আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। এর একটি হতে অপরটিকে পৃথক ভাবা একান্তই ভুল। তা ছাড়া ইসলাম তো রাসুলুল্লাহ (সা.) এর যাবতীয় কর্মকাণ্ডেরই সমাহার। এ জন্য ফযল এবং রহমতের মূল সত্তাই হলেন তিনি। সুতরাং পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) এর নবী ও রাসুলরূপে এই নশ্বর পৃথিবীতে আগমনই হলো সকল মানুষের জন্য আনন্দ ও উৎফুল্লতা প্রকাশের মূল উপাদান। কারণ তিনি কোরআন ধারণ করেছেন। সে মোতাবেক নিজে আমল করেছেন। দুনিয়ার মানুষকে আমল করার পথ শিক্ষা দিয়েছেন এবং তাঁর দেয়া জীবন ব্যবস্থার সামগ্রিক রূপকেই আমরা পূর্ণাঙ্গ ইসলাম বলে গ্রহণ করেছি। আল হামদুলিল্লাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন