প্রিয় রাসূল (সা.)-এর আগমনেই পূর্ণতা পায় দ্বীন ইসলামের। অন্ধকার যুগ তথা আইয়্যামে জাহেলিয়ত যুগকে আল্লাহর প্রিয় হাবীব (সা.)-এর করণে আউয়াল তথা স্বর্ণযুগে পরিণত করেছিলেন। শিরকের গভীরে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের তাওহিদের সামিয়ানার নিচে এনেছিলেন প্রিয় রাসূল (সা.)। সমাজের প্রতিটি স্তরে এমনভাবে পরিবর্তন করেছিলেন মজলুম ফিরে পেয়েছিল অধিকার, হতাশায় আচ্ছন্ন মানুষ পেয়েছিলো বেঁচে থাকার মত আশার আলো, দুনিয়ার যত বিভেদ ও বৈষম্য সব দূর করেছিলেন আপন মহিমায় মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহে। পৃথিবী বদলে দেয়ার এই মিশন ও ভিশন কোন কালেই সহজ ছিলো না। সীমাহীন ত্যাগ ও কুরবানির বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন মহান আল্লাহর দ্বীনকে।
গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বায়েজিদস্থ কাগতিয়া আলীয়া দরবার কমপ্লেক্সে ৬৮তম জশ্নে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাগতিয়া আলীয়া দরবারের পীর আল্লামা প্রিন্সিপাল শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী এসব কথা বলেন।
প্রিয় রাসূল (সা.) জাহেরীভাবে পৃথিবী থেকে পর্দা করার পর নবুয়্যতির পরিসমাপ্তি হয়। অতঃপর এ কাজকে বাস্তবায়নের দায়িত্ব এসে পড়ে নবীর ওয়ারিশদের কাছে। যারা বেলায়ত, কুতুবিয়ত ও গাউছিয়ত এর অধিকারী। কালের পরিক্রমায় আমরাও পেয়েছি কালশ্রেষ্ঠ একজন রাহবারকে যিনি মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে ইশকে মোস্তফাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সারাজীবন আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেছেন এবং দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। প্রিয় রাসূল (সা.) যে আদর্শে ও নীতিতে অন্ধকার যুগকে ইনসাফের আলোয় আলোকিত করেছেন সেই নিয়ামতের স্রোতধারায় খলিফায়ে রাসূল (সা.) হযরত ও কাজ করে গেছেন। মানব দেহের অভ্যন্তরীণ লতিফাসমূহে প্রিয় রাসূলের নূরে বাতেন দিয়ে সমস্ত দোষত্রুটি দূরীভূত করে সাধারণ মানুষকে আশেকে রাসূলে পরিণত করছেন। শরীয়তের সম্পূর্ণ হুকুম আহকাম পালনের পর সুন্নতে মোস্তফার আলোকে জীবন সাজানোর মাধ্যমে নূরে মোস্তফার রওশনে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) এর বাস্তবায়নের রূপরেখা রয়েছে কাগতিয়া আলীয়া এর তরিক্বতে।
এতে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য এবং মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর এর সভাপতিত্বে মাহফিলে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা মো. জসিম, মাওলানা মো. জাহাঙ্গীর, হাফেজ মাওলানা আরিফ, মাওলানা মো. এরশাদ হোসাইন, মাওলানা ইউছুফ মুনিরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ছরওয়ার কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে পবিত্র জশ্নে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) মাহফিল উপলক্ষে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে ছিল পবিত্র খতমে কোরআন, সাংগঠনিক আলোচনা, বাদে আছর ফয়েজ-এ কোরআন, বাদে মাগরিব মোরাকাবা, পবিত্র নাতে মোস্তাফা ও জিকির। বাদ এশা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) শীর্ষক আলোচনা, মিলাদ, কিয়াম, আখেরি মোনাজাত এবং তাবাররুক বিতরণ ।
মিলাদ ও কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ্র ঐক্য, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি, অসহায় নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতার ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন