জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে এবং সকল প্রকার বৈষম্য দূর করে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইলে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আদর্শ অনুসরণের কোন বিকল্প নেই। তাঁর আদর্শ অনুসরণেই মানবজাতির শান্তি ও কল্যাণ নিহিত। বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণেও হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মানুষের জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রুর নিরাপত্তা বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। অন্য আরেক হাদীসে তিনি ইরশাদ করেছেন "প্রকৃত মুসলমান তিনি যার হাত ও মুখ থেকে অন্যরা নিরাপদ থাকে" সুতরাং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী সকল প্রকার চক্রান্ত রুখে দিতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সম্প্রতি কুমিল্লার এক পূজামন্ডপে পবিত্র কোরআনের অবমাননার প্রসঙ্গ টেনে নেতৃবৃন্দ বলেছেন আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে এই জঘন্য ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত সীরাতুন্নবী (সা.) কনফারেন্সে জমিয়ত নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
জমিয়তের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান গাজিপুরী ও মাওলানা তাজুল ইসলাম আশ্রাফীর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মুফতী মাসউদুল করীম,মাওলানা আফজাল হোসাইন রহমানী, মাওলানা লোকমান মাজহারী,আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা হামেদ জহীরী,মাওলানা নূর মোহাম্মাদ কাসেমী, মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল লতীফ ফারুকী,মুফতী আনীসুর রহমান,মুফতী সলীমুল্লাহ খান, মাওলানা ইয়াকুব ও মাওলানা ফজলে এলাহী।
মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী তার বক্তব্যে বলেছেন নবিয়ে করীম (সা.) এর জীবনাদর্শের প্রতিটি অধ্যায়ই আমাদের জন্য অনুসরণীয়। তিনি বলেন, ভিন্ন ধর্মালম্বীদের উপাসনালয় ও ঘর-বাড়ীতে হামলা করা এবং পবিত্র কোরআনের অবমাননার প্রতিবাদকারীদের সাথে প্রশাসনের অসংযত আচরণ কোনটাই সমর্থনযোগ্য নয়।
মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেছেন, সকল প্রকার বৈষম্য দূর করে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের প্রত্যেককে নবীজী (সা.)এর জীবনচরিত্র অনুসরণ করতে হবে। তাঁর আদর্শ অনুসরণেই মানবতার মুক্তি ও শান্তি নিহিত আছে। মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)এর আবির্ভাবপূর্ব বর্বরযুগে কারো জানমাল ও ইজ্জত-সম্মানের কোন নিরাপত্তা ছিলনা। মানবতা ও মনুষ্যত্ব ছিল তখন বিপন্ন। যাবতীয় পাপাচার ও অনাচারের অন্ধকারে নিমজ্জিত সেই সমজে মহানবী (সা.) প্রতিষ্ঠা করলেন সভ্যতা ও সাম্য। তাই সভ্য সমাজ বিনির্মাণে আমাদেরকে তাঁর আদর্শই অনুসরণ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে একটি চিহ্নিত সংস্থার অপতৎপরতা বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেছেন, মানুষের জীবনচরিত্রের দু’টি অংশ থাকে, একটি সামাজিক আরেকটি পারিবারিক। মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) উভয় অংশেই ছিলেন সম্পূর্ণরূপে নিষ্কলুষ। তিনি কখনোই কোন প্রকার অন্যায়-অবিচারকে প্রশ্রয় দেননি। তাঁর সত্যবাদিতা ও চরিত্রমাধুর্যে বিমুগ্ধ হয়েই হযরত খাদীজা (রা.) তাঁর সাথে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। বিয়ের পূর্বে তিনি নবীজী (সা.) সম্পর্কে যে প্রশংসা শুনেছেন দাম্পত্য জীবনে কখনো তার ব্যতিক্রম কোন কিছু খুঁজে পাননি। সুতরাং সুন্দর জীবন গঠনে আমাদেরকে তাঁর জীবনের প্রতিটি অংশ থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন