চট্টগ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গণঅনশন ও গণঅবস্থান কর্মসূচি আগামীকাল শনিবার। নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এই কর্মসূচিতে ইসকন ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ছাড়াও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সংগঠন অংশ নেবে। এই কর্মসূচিকে ঘিরে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে ইসকন। সনাতন ধর্মের বিভিন্ন সংগঠনের সাথে ইসকনের নানা বিষয়ে বিরোধ থাকলেও বৃহত্তর স্বার্থে তারা এক কাতারে শামিল হচ্ছেন।
তাদের লক্ষ্য হলো সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রতিবাদ এবং সরকারকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে চাপ প্রয়োগ করা। সারা বিশ^কে বিষয়টি জানান দিতে ব্যাপক জনসমাবেশ করা হবে। নগরী ছাড়াও বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকসমাগম করা হবে।
ইসকনের নেতা স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাশ ব্রহ্মচারী বলেন, গণঅনশন ও গণঅবস্থান কর্মসূচিতে ইসকন সংহতি জানাবে। সেখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ সব সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন একই দাবীতে ইসকনের উদ্যোগে বিশে^র বিভিন্ন দেশে কর্মসূচি পালিত হবে। আগামী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে ইসকন বড় ধরনের শান্তি শোভাযাত্রা করবে।
প্রবর্তক সংঘ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় শারদীয় দুর্গাপূজা চলাকালে ম-প-মন্দিরে এবং পূজা পরবর্তী হিন্দুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি। এতে ইসকন ছাড়াও সনাতনীদের সব সংগঠন যোগ দেবে। গত ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এদিকে শুক্রবার ম-পে হামলার প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মঠ ও মন্দিরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল এবং মানববন্ধন করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে শনিবারের গণঅবস্থান কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানানো হয়। নগরীর আসকারদীঘির পাড়, এস এস খালেদ রোড, পাহাড়তলী কৈবল্যধাম এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদ চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ ও মহানগর, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, চট্টগ্রাম জেলা সৎসঙ্গ, শ্রীশ্রী রাম ঠাকুর সেবাশ্রমসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে যোগ দেন সব বয়সের মানুষ। এসব কর্মসূচিতে ইসকনের নেতারাও বক্তব্য রাখেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, কুমিল্লার ঘটনায় ইকবাল হোসেন নামে যাকে শনাক্ত করা হলো তাকে ‘ভবঘুরে’ সাজিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ ভবঘুরে কী করে পবিত্র কোরআন চিনল? এটা পূর্ব পরিকল্পিত। এই ঘটনার পেছনের চক্রান্তকারীদের খুঁজে বের করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি। তিনি পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ চট্টগ্রামসহ সারা দেশে গণঅবস্থান, গণঅনশন ও বিক্ষোভে সবাইকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভোর ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারাদেশে এ কর্মসূচি চলবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন