কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের মা ও ছোট ভাই টেলিভিশনের সামনে বসে রায়ের খবর দেখেছেন। এ সময় মা রোকেয়া খাতুন কান্নায় ভেঙে পড়েন। আজ বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে এ রায় দেখেন তিনি।
এই রায়ে আবরারের বাবা সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও খুশি হতে পারেননি মা রোকেয়া খাতুন। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা অমিত সাহার মৃত্যুদণ্ড দাবিতে আপিল করা হবে।
বুধবার দুপুরে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পরে কুষ্টিয়া শহরের নিজ বাড়িতে এসব কথা বলেন আবরারের রোকেয়া খাতুন। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আবরার হত্যা মামলার সব আসামির মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন রোকেয়া খাতুন বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা অমিত সাহা হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে না থাকলেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সে হত্যাকাণ্ডের সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। অথচ তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি। কীভাবে সে মৃত্যুদণ্ড থেকে বাদ যায় আমি বুঝতে পারলাম না। আপনারাও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে দেখেছেন ২৫ আসামি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আবরার হত্যায় জড়িত ছিল। কীভাবে ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড থেকে বাদ গেল।
রোকেয়া খাতুন বলেন, আববার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী অমিত সাহার মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
অমিত সাহা বুয়েট ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক পদে ছিলেন। তাকে পরে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।
২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের গেস্টরুমে আসামি কতিপয় ছাত্রলীগ নেতা সভা করে বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র আবরারকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পর দিন রাতে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আবরার হত্যার ঘটনায় তার বাবা মো. বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা করেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আর বাকি ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩ আসামি পলাতক রয়েছেন। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মামলার ২২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় হাজির করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এএসএম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল জেমি, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান, এসএম মাহমুদ সেতু, মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। এর মধ্যে শেষে তিনজন পলাতক রয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— অমিত সাহা, মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন