শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

‘ভাইয়াকে মেরে ফেলার ৩ বছর পূর্ণ হলো’

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০২২, ১১:২২ এএম

আজ ৭ অক্টোবর। বুয়েট ক্যাম্পাসে নির্মমভাবে হত্যার শিকার মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৯ সালের এই দিনে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।

এ নিয়ে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন আদালত। যদিও মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পরিবারের ন্যায় দেশের মানুষও এ মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি। আবরারের মৃত্যুবার্ষিকী নিয়ে ফেসবুকে চলছে লেখালেখি। এ নিয়ে তারই আপন ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘আজ ৭ই অক্টোবর, ২০২২। ভাইয়াকে মেরে ফেলার ৩ বছর পূর্ণ হলো।

২০১৯ সালের ৬ই অক্টোবর সকাল ১০টার বাসে ভাইয়া কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় যায়। বিকাল ৫টার দিকে পৌঁছানোর পরে ভাইয়া একটু ঘুমাতে যায়। রাত ৮টায় ভাইয়াকে ডেকে নিয়ে যায় তারই কিছু বন্ধু। রাত ১০টা পর্যন্ত নানা প্রশ্ন করার পরেই শুরু করে পালা করে পেটানো। এরপরে রাত ২-৩টার দিকে মারা যায়।

৩ বছর অনেক লম্বা একটা সময়। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর রায়ও হয়েছে। আসামিরা আপিলও করেছে। তবে গত ১০ মাসে আর কোনো অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে হয়নি। কিন্তু আমাদের আশা অন্য সব বিচারের মতো ভাইয়ার হত্যার বিচারের জন্য যেন অত বেশি অপেক্ষা করতে না হয়।

অক্টোবর আসলেই পেছনের সময়ের কথা মনে হয়। গত বছর এই অক্টোবরেই দাদিও মারা যান। প্রায় প্রতিটা কথাতেই আম্মু ভাইয়ার কথা মনে করেন। এখনো প্রায়ই কাঁদতে থাকেন। গত ৩ বছরে যত জনের সঙ্গে দেখা হয়েছে, প্রত্যেকের কাছেই ভাইয়ার জন্য দোয়া চেয়েছেন আম্মু। আব্বু-আম্মু দুইজনই বেশ অসুস্থ হয়ে গেছে। রাতে মাঝে মাঝেই আম্মু বলে ওঠে যে, ‘এই সময়ে আমার ছেলেকে কত মারছিলো, ও কতই চিৎকার করেছে। আশপাশের কুকুরগুলো পর্যন্ত ছোটাছুটি করছিলো তাও ওই পশুদের মনে দয়া হয়নি।’

কিছুদিন পরেই হয়তো আমাদের ক্লাস শুরু হবে। সত্যি বলতে আমি নিজেও জানি না তখন কী পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে। যেই স্বপ্নের সৃষ্টি ভাইয়ার হাত ধরে, সেখানে ভাইয়াই নেই এখন। মাঝে মাঝে মনে হয় ভাইয়াকে যদি গত কয়েক বছর কী কী ঘটেছে জানাতে পারতাম, তাহলে ওর অনুভূতিটা কেমন হতো! আমাদের কাছে ভাইয়ার যে শূন্যতা সেটা যেন ক্রমেই বাড়ছেই।

তবে এত কিছুর মধ্যে ভালোলাগার জায়গা একটাই, ৩ বছর হয়ে গেলেও ভাইয়াকে অনেকেই এখনো ভুলেনি। হয়তো আরো বহুদিন মনে রাখবে আর দোয়া করবে।’

উল্লেখ্য, গত ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন আদালত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন