নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়নের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানিয়েছেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খান। একইসঙ্গে সংবিধানের নির্দেশনা অনুয়ায়ী আইন প্রণয়নের জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করার জন্য এবং প্রয়োজনীয় বিধিবিধান প্রণয়নের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানান তারা।
রবিবার (২ জানুয়ারি) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন তিনি। মোকাব্বির খান বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি রেখেছি যে, অতীতে যেভাবে নির্বাচন কমিশনগুলো গঠন হয়েছে, এগুলো নিয়ে জনগণের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। আমরা দেখেছি, যখনি আইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাদ দিয়ে ইসি গঠন করা হয়, সেই ইসি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়। যাদেরকে নির্বাচন কমিশন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তারা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানের আলোকে ও সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক। সার্চ কমিটির মাধ্যমে যেভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে, সেটা জনগণের কাছে ও রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। সুতরাং আমরা ১৬ কোটি মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা হিসেবে যেন আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছি।
মন্টুরা গণফোরামের কেউ না : গণফোরামের একাংশের নেতা মোস্তাফা মহসিন মন্টু বলেছেন এই সংলাপে অংশ নেওয়ার কোনো মানে নেই, কিন্তু আপনারা অংশ নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে মোকাব্বির খান বলেন, উনি তো আমাদের দলে নেই এখন। আমরা গণফোরাম থেকে এখানে এসেছি, আমরা নিবন্ধিত দল। জাতীয় সংসদেও আমি নিজেই প্রতিনিধিত্ব করছি। আমার সঙ্গে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক আছেন। আমরা আলাপ-আলোচনা করে এখানে এসেছি। সংলাপে কেন ড. কামাল হোসেন অংশ নেননি জানতে চাইলে মোকাব্বির খান বলেন, আপনারা তো জানেন উনি অসুস্থ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তিনি যান না।
এই সংলাপে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ড. কামাল হোসেনের সম্মতি ছিল কি না জানতে চাইলে মোকাব্বির খান বলেন, ড. কামাল হোসেন স্যার কখনও কোনো সিদ্ধান্ত এককভাবে গ্রহণ করেন না। উনি বলেছেন, আপনারা গণফোরাম সিদ্ধান্ত নেন। গণফোরামের যারা নেতৃত্বস্থানীয় আছেন, তারা মিলে বর্ধিত সভা করেছি, সব জেলার নেতারা ছিলেন তখন। সেখানে সংলাপে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে মোকাব্বির খান বলেন, গণফোরামের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব হচ্ছে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে, বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন কমিশন গঠন ও পুনর্গঠনের এই গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় আইনটি প্রণীত হওয়া একান্তভাবে আবশ্যক। একইসঙ্গে নির্বাচন চলাকালীন জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ ভূমিকা এবং দায়দায়িত্ব নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় বিধিবিধান প্রণয়ন করা আজ জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে।
গণফোরামের নেতাদের মধ্যে সংলাপে অংশ নেন দলটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আ.ও.ম শফিক উল্লাহ, সদস্য মোশতাক আহমেদ, হারুনুর রশিদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম, অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর, শাহ নুরুজ্জামান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন