সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনকে গণফোরামের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে ড. কামাল অংশের সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান বলেছেন এগুলো অবাস্তর কথাবার্তা। তিনি নিজেকে দলের সব পদ থেকে বহিষ্কারের ঘোষণাকে ভিত্তিহীন, প্রশ্নবিদ্ধ এবং অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে মোস্তফা মহসিন মন্টু নেতৃত্বাধীন গণফোরাম থেকে ড. কামাল হোসেনকে অব্যাহতি ও মিজানুর রহমানকে বহিস্কারের ঘোষণা দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ গণফোরামের ড. কামাল অংশ ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি ও ডা. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। জাতীয় প্রেসক্লাবে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। তারই প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টুর নেতৃত্বাধীন অংশ থেকে অব্যাহতি ও মিজানুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, সেই মুহূর্তে ড. কামাল হোসেন ও মো. মিজানুর রহমান গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষিত কমিটি সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী ও অগণতান্ত্রিক। ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি ও ড. রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। মাত্র ১ বছরের জন্য ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু ওই কাউন্সিল অনুষ্ঠানের পর দীর্ঘ আড়াই বছর দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, স্থায়ী কমিটি বা সম্পাদক পরিষদের কোনো সভা ডাকা হয়নি। অতপর গণফোরামের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি ও সাবেক নির্বাহী সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫৭ সদস্য বিশিষ্ট গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত হয়।
সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, কাউন্সিল অধিবেশনের আগে গণফোরামের নেতারা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখন তিনি ওই কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত থেকে সভাপতিত্ব করার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিন্তু তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত হতে অপরাগতা প্রকাশ করেন এবং সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করতে চান। পরে তিনি কমিটি ঘোষণা দেয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হলো।
উল্লেখ ওই সময় মোস্তফা মোহসিন মন্টুকে দলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বাদ দিয়ে ড. রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পদক করেন ড. কামাল হোসেন। পরবর্তীতে রেজা কিবরিয়াও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করে অন্য দলে চলে যান।
পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনার সঙ্গে বিরোধের কারণে ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন। অতপর তিনি গঠন করেন গণতান্ত্রিক ফোরাম। সেখান থেকে ‘তান্ত্রিক’ শব্দ ফেলে দিয়ে রাজনৈতিক দল গণফোরাম গঠন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু ওই নির্বাচনে পর মোস্তফা মোহসিন মনটুকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। মন্টু পৃথক দল গঠন করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন