সেন্ট্রাল এশিয়ার অন্য দেশের তুলনায় কাজাখস্তান অনেক বেশি স্থিতিশীল ছিল৷ কিন্তু পরিস্থিতি এখন একেবারে অশান্ত৷ গত দুই দশকে সম্পদ-সমৃদ্ধ এই রাষ্ট্রের অর্থনীতি অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ শেভরন এবং ফ্রান্সের টোটাল এনার্জির মতো বিশ্ববিখ্যাত সংস্থাগুলি থেকে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগও এসেছে৷
গত ৩০ বছরে এ দেশ এমন সহিংস ছবি দেখেনি৷ জ্বালানির দামবৃদ্ধি, দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ সব মিলিয়ে নাগরিকদের বিদ্রোহের আঁচ সামলাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ট টোকায়েভ৷ রাশিয়া এবং তার শরিক রাষ্ট্রগুলির কাছে সাহায্য চান৷
বিশ্বের শীর্ষ ইউরেনিয়াম রপ্তানিকারক শুধু নয় জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপাদনেও অন্যতম নাম কাজাখস্তান৷ কিন্তু এই বিক্ষোভ এবং পরবর্তী পরিস্থিতির ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, এর ফলে বিনিয়োগকারীদের এই দেশের প্রতি নির্ভরশীলতা কমতে পারে৷ সেন্ট্রাল এশিয়ার বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ টিমোথি অ্যাশ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, অশান্ত পরিস্থিতিতে যে প্রশাসনের হাতে দায়িত্ব থাক না কেন, কাজাখস্তানের মত ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁসে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রকে কেউই বন্ধ করতে চাইবে না৷
অ্যাশের বক্তব্য, সারা বিশ্বে কাজাখস্তানের অর্থনৈতিক গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে পশ্চিমের দেশগুলি পরিবেশগত, সামাজিক এবং অন্যান্য সমস্যা সমাধানে হয়তো আরও বাস্তবসম্মত পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারে৷ সারা বিশ্বের ৪০%-এরও বেশি ইউরেনিয়াম উৎপাদন করে কাজাখস্তান৷ ইউরেনিয়াম পারমাণবিক চুল্লির প্রধান জ্বালানি৷ এই ইউরেনিয়াম বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলির কাছে অন্যতম চাবিকাঠি৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ আরও অনেকে অর্থনীতিকে কার্বনমুক্ত করার পরিকল্পনার অংশ হিসাবে পারমাণবিক শক্তিকে দ্বিগুণ করছে৷
অন্যতম ইউরেনিয়াম উৎপাদক কাজাটমপ্রামের মতে, দেশের অস্থির পরিস্থিতি উৎপাদনে সমস্যা তৈরি করেনি কিন্তু দাম বেড়ে গিয়েছে থেকে গুণ৷ এদিকে তেল রপ্তানি দেশগুলির গোষ্ঠী ওপেকের অন্যতম সদস্য কাজাখস্তান ১৯৯১ সাল থেকে
৬০% বিদেশি বিনিয়োগ পাচ্ছে৷ ২০১৮ সালে কয়লা এবং অপরিশোধিত তেল উত্পাদনে সারা বিশ্বে নয় নম্বরে ছিল এ দেশ৷ প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনে ছিল ১২ নম্বরে৷ কাজাখস্তানের বার্ষিক তেল উৎপাদনের ৮০% শতাংশ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে যায়৷ শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞ মন করছেন, কয়লা উৎপাদনেও বর্তমান পরিস্থিতি সে অর্থে প্রভাব ফেলেনি এখনও কিন্তু দাম বাড়তে পারে যে কোনও মুহূর্তে৷ সবমিলিয়ে সারা বিশ্বের নজর এখন কাজাখস্থানের দিকে৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন