বহুল আলোচিত বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে। কারণ এই পদে শেষ পর্যন্ত তিনজন প্রার্থী নিজেদের মনোনয়ন বহাল রেখেছেন। মোট পাঁচজন সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে গতকাল দুইজন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এরা হলেন- নেত্রকোনার কাউন্সিলর, সাবেক শাটলার ও বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা এবং বরগুনার আলমগীর হোসেন। ফলে এখন সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটযুদ্ধে নামছেন বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের প্রার্থী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফেনীর আমির হোসেন বাহার, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাবেক খেলোয়াড়, গুলশান স্পোর্টিং ক্লাবের জোবায়েদুর রহমান রানা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডহক কমিটির বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদার। তবে তার প্রার্থীতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রতিপক্ষ দুইজন। কারণ মনোনয়ন সংগ্রহের আগে তিনি নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। যা জমা পড়েছে কাল। এছাড়া মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর ফেডারেশনের প্যাড এবং পদ ব্যবহার করে নির্বাচন স্থগিতের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে (এনএসসি) আবেদনও করেছেন কবিরুল। প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে নির্বাচন স্থগিতের গুঞ্জন থাকলে শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও কাল রাতে তা স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন হলে ১০২জন কাউন্সিলর ২৪ পদের নির্বাহী কমিটির জন্য নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের জমা দেওয়া ২৬টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে শুরুতে কামরুনন্নেছা আশরাফ দিনা ও আলমগীর হোসেন সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীতা দিলেও প্রত্যাহারের শেষ দিনে এই পদ থেকে সরে দাঁড়ান। ফলে তারা ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি পদে ভোটে লড়বেন। যদিও নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন দিনা। কারণ তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যাডমিন্টনের বৃহত্তর স্বার্থে সহ-সভাপতি পদেই প্রার্থী হয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে দিনা বলেন,‘ব্যাডমিন্টনের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। তাই মিলেমিশে কাজ করার স্বার্থে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি। তাছাড়া ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নারীদের ক্ষমতায়নে নির্দেশনার দিকটি বিবেচনা করে এবং ব্যাডমিন্টন খেলার উন্নয়নে আমি কাজ করে যেতে চাই।’ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের প্রার্থী বাহার বলেন, ‘এবার নির্বাচিত হয়ে আমি ফেডারেশনকে শাটলারদের অভয়ারণ্য বানাতে চাই।’
অন্যদিকে জোবায়েদুর রহমান রানার প্যানেল থেকে চারটি মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে। রানা সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই পদে মনোনয়ন জমা দিলেও সেখান থেকে তিনি সহ-সভাপতির মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। ফলে এখন সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন রানা। তিনি বলেন, ‘ফেডারেশনের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। শাটলারদের মানোন্নয়ন ঘটাতে চাই।’ অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবিরুল একের পর এক নাটকীয়তা করেই চলেছেন। কাল নির্বাচন কমিশন যখন প্রত্যাহারপত্র গ্রহণ করছিল, তখন তার অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগপত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেন ফেডারেশনের অফিস সহকারী। ফলে কবিরুলের মনোনয়নপত্র বৈধতা ও পদত্যাগ পত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন উপস্থিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রানা। কারণ ২০ জানুয়ারি ছিল মনোনয়ন জমার দিন। সেই দিন অ্যাডহক কমিটি থেকে নির্বাচন করা প্রার্থীরা মনোনয়নের সঙ্গে পদত্যাগ পত্রও দিয়েছেন। কিন্তু কবিরুল তা দেননি। দৃশ্যত এক সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী তিনজন, চার সহ-সভাপতি পদের বিপরীতে প্রার্থী সাতজন, দুই যুগ্ম সম্পাদকের বিপরীতে তিনজন, এক কোষাধ্যক্ষ পদের বিপরীতে দুইজন ও ১৬ সদস্যের বিপরীতে ২৬জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন