দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনার নতুন উপধরন ওমিক্রন আরো বেশি সংক্রামক হতে পারে। এ কারণে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গতকাল বুধবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসে ৩২২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এর মধ্যে মাত্র ৮৮ জন টিকা নিয়েছিলেন। এতে দেখা যায় করোনায় মৃতদের ৭৩ শতাংশই করোনার টিকা নেননি।
অধিদফতরের মুখপাত্র বলেন, ওমিক্রনের নতুন যে ভ্যারিয়েন্টটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে, তারও একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বের ৫৭টি দেশে ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন গবেষণা উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এই সাব-ভ্যারিয়েন্টটি কিন্তু আগের তুলনায় বেশি সংক্রামক হতে পারে। বেশি সংক্রামক হলে ক্ষতি করার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। কাজেই আমাদের আত্মতুষ্টির কোনও সুযোগ নেই। রোগীর সংখ্যা কোনোভাবেই যাতে না বাড়ে সে জন্য আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সংখ্যার বিচারে রোগী বেড়েছে এবং রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকলে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের ভেতরে কারা ভ্যাকসিন পেয়েছেন এবং কারা ভ্যাকসিন পাননি তা খুঁজে বের করার চেষ্টা অনেক দিন ধরেই চলছে। জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত মোট যে মৃত্যু আমরা দেখেছি, তাতে প্রায় ৭৩ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি। বাকিরা ভ্যাকসিন পেয়েছেন। প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন পেয়েছিলেন ১৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন পেয়েছেন ৬১ জন। সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। ১৯ জন মারা গেছেন এখানে। এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৫১ জন মারা গেছেন। শতকরা হিসাবে যা ৪৩ শতাংশের বেশি। হাসপাতালগুলোতে আগের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। রোগীর সংখ্যা যখন বাড়ে সামগ্রিকভাবে আইসিইউ-এইচডিইউ এবং অক্সিজেন সরবরাহের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে জানানো হয়, দেশে চলতি বছরের প্রথম মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২৩৪ জনই কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নেননি। তবে বাকি ৮৮ জন টিকা নিয়েছিলেন। বুলেটিনে জানানো হয়, গত বছরের ডিসেম্বরে করোনায় দেশে মারা যায় ৯১ জন। আর জানুয়ারি মাসে মৃত্যু হয়েছে ৩২২ জনের। জানুয়ারি মাসে মৃতদের ৭৩ শতাংশই করোনার টিকা নেননি। বাকি ২৭ শতাংশ বা ৮৮ জন টিকা নিয়েছিলেন। এদের মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ১৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৬৮ জন।
আইইডিসিআর এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর বলেন, দেশের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে চলমান টিকাদান কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। যারা এখনো টিকার আওতায় আসেনি তাদের শিগগিরই টিকার আওতায় আনা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন