শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আদিগন্ত

বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের সফর এবং আমাদের দুর্নীতির হালচাল

প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবুল কাসেম হায়দার

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। ঢাকা শহর ছাড়াও বরিশাল সফর করেন তিনি। গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃষ্টান্ত দেখার জন্য তিনি বরিশাল সফর করেন। এর পর গত ১৮ অক্টোবর তিনি বিশ্বব্যাংকের অফিসে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কিছু ইস্যু নিয়ে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চান। এইসব ইস্যুর মধ্যে রয়েছে : ১. শক্তিশালী সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ২. বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, ৩. অবকাঠামো উন্নয়ন, ৪. মানবসম্পদ উন্নয়ন, ৫. জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকি মোকাবেলা এবং ৬. বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করা।
দুর্নীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক পূর্বের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন করেনি। আর সেকারণেই তারা বরাবরই সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছে। তবে পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের যে শীতল সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তা আর একই পর্যায়ে থাকবে না বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সফরের ফলে। এছাড়া ঝুলে থাকা প্রকল্পগুলোর ঋণ সুবিধা সৃষ্টি হবে। দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু ঋণ দেয়া থেকে সরে এসেছিল। তবে অন্যান্য প্রকল্পে ঋণ সুবিধা চালু রয়েছে। ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাংক কোনো প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পেলে তা মেনে নেবে না প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট সফর করেছেন বলে বিশ্বব্যাংক নৈতিক ও কাঠামোগত অবস্থানে পরিবর্তন আনবে এমনটি ভাবা উচিত হবে না।
দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে ঋণ দেয়া থেকে সরে যায়। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক শতকরা ৭৫ পয়সা সুদে ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা ছিল। এরপর সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। পরে বৈশ্বিক সক্ষমতা রিপোর্ট ও বিশ্বব্যাংক দুর্নীতিকে প্রধান একক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের কথা বিশ্বব্যাংক ও টিআই বরাবরই ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ সফরে এক সাথে এসে টিআই চেয়ারম্যান ও বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট একই সুরে কথা বলেছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুইটি প্রতিষ্ঠানই জিরোটলারেন্স রেখে কথা বলেছেন।
উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্সের অবস্থান জানিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেছেন, আমাদের এ ভূমিকা বিশ্বব্যাপী একই। প্রত্যেকটি প্রকল্পই দুর্নীতিমুক্ত থাকা উচিত। এছাড়া তিনটি বিষয়ে আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এর অন্যতম হচ্ছে, সবক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। বিচার বিভাগ, সরকারি ব্যাংক, রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়া, প্রশাসনিক কার্যক্রম আরো স্বচ্ছ ও গতিশীল করতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের নতুন নতুন সহায়তার কথা ঘোষণা করে তিনি বলেন, আগামী তিন বছরের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়া হবে। এর আগে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আগামী তিন বছরে বাংলাদেশের জন্য ঋণ সহায়তা ৫০ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি শিশুর অপুষ্টি রোধে আগামী দুই বছরে বাড়তি ১০০ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা দেন তিনি। সব মিলিয়ে ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চুক্তি ডিসেম্বরে হবে আশা করছেন তিনি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিশ্বব্যাংকের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জিম ইয়ং কিম দুর্নীতি ও সুশাসন নিয়ে কথা বলেন। এ সময় বেসরকারি খাতে অধিক বিনিয়োগের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, এজন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ সংক্রান্ত নীতি সংস্কার ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সন, ঢাকায় নিযুক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান, আইএফসির পরিচালক মিনজিতসু আলামায়েতু এবং ঢাকা অফিসের যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের আগে জিম ইয়ং কিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়া তিনি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প পরিদর্শনে বরিশাল সফর করেন। বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ দরকার। ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত হবে বাংলাদেশ। এর আগে নি¤œ আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ে যেতে বাংলাদেশ অনেক কিছু মোকাবেলা করছে। তিনি বলেন, আমরা তিনটি বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। প্রথমটি হচ্ছে, বাণিজ্য পরিবেশ উন্নয়নে নীতির সংশোধন করা। বর্তমানে পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ বাংলাদেশে কম আসছে। বেসরকারি খাতে যদি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হয়, সে ক্ষেত্রে অবকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্পে অর্থায়ন বেশি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বিচার বিভাগ, সরকারি ব্যাংক, রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়া, প্রশাসনিক কার্যক্রম গতিশীল এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সাইক্লোন ও বন্যাকে হুমকি মনে করছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের দিক থেকে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক সহায়তা করবে। মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছালে বিশ্বব্যাংকের ঋণের সুদের হার সমন্বয় করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে জিম ইয়ং কিম বলেন, মধ্যম আয়ের দেশের জন্য উচ্চ সুদ এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে শূন্য সুদেও ঋণ দেয়া হয়। সে ক্ষেত্রে সুদের হার সমন্বয় করা হবে। তবে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের রেকর্ড ভালো। সুদ সমন্বয় করা হলেও সেটি ২ শতাংশের বেশি হবে না।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগে বিশ্বব্যাংক ঝুঁকি মনে করছে কিনা সংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। তবে বিশ্বের কোনো দেশই সন্ত্রাসের ঝুঁকিমুক্ত নয়। ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলোও সম্প্রতি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে। আগামীতে বাংলাদেশে কোন কোন খাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা আছে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সন বলেন, আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ উৎপাদন, যোগাযোগ এবং জলবায়ু খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। এসব পরিকল্পনা সরকারের গৃহীত সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রতিশ্রুতির অনেকাংশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় আস্থা সংকট তৈরি হয় কিনাÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্বের ১৮৯টি সদস্য দেশেই বিশ্বব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সেখানে বাংলাদেশের শক্ত অংশগ্রহণ রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো গোপনীয়তার বিষয় থাকছে না। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) ফান্ড থেকে সহায়তা বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত আইডিএ’র প্রতিশ্রুতি রয়েছে ৯৭০ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১২ সাল পর্যন্ত ৪০০ কোটি ডলার ছিল। একই সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) বিনিয়োগ গত অর্থবছর ৬৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২০১২ সাল পর্যন্ত এটা ছিল ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আগামীতে এ দুই ক্ষেত্রেই সহায়তার পরিমাণ আরো বাড়বে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বরিশাল সফর সম্পর্কে বলেন, সেখানে স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার ও সাইক্লোন শেল্টার একই ভবনে পরিচালিত হচ্ছে। এটি শিক্ষণীয় বিষয়। প্রশংসা করে তিনি বলেন, সামনে বাংলাদেশের জনগণের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।
দুর্নীতি থেকে বাঁচার উপায় : সকলে আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলছি। আবার সকলে মিলে আমরা দুর্নীতি করছিও। ব্যাপারটা কেমন। বেশ মজাদার মনে হয়। আবার দুর্নীতি দমন কমিশন দিয়ে কিছু পুঁটি মাছ শিকার করে দেখাচ্ছি দুর্নীতি মানি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা এক। কিন্তু দেশে থেকে তো দুর্নীতি দূর হচ্ছে না। দিনের পর দিন দুর্নীতির শিকড় বড় গভীর হচ্ছে। সমাজে সকল স্তরে দুর্নীতি যেন শিকড় বড় আকারে ধারণ করেছে। তাহলে দুর্নীতিকে ‘না’ কীভাবে বলব। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ও বিশ্বব্যাংক দুর্নীতিকে ‘না’ বলছেন। কিন্তু বিশ্বের কোনো দেশ থেকে দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করা যায়নি। তবে অনেক দেশে দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
১) আমাদের গ্রামের সহজ-সরল, গরিব মানুষগুলো দুর্নীতি থেকে বেশ দূরে। গ্রামের মানুষেরা সবসময় দুর্নীতি না করে জীবনযাপন করতে চায়। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি আমাদের সহজ-সরল গ্রামের মানুষকে নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে ফেলে। এর থেকে বাঁচার জন্য আমাদের রাজনীতিকে আরো স্বচ্ছ, সাবলীল, গ্রামমুখী, উন্নয়নমুখী ও জনকল্যাণময় করতে হবে। রাজনৈতিক দলে দুর্নীতিকে ‘না’ বলার অভ্যাস করতে হবে। সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক দল, সমিতি প্রভৃতিতে দুর্নীতিকে ‘না’ বলার আসনে নিয়ে আসতে হবে।
২) সমাজের উচ্চস্তর থেকে দুর্নীতিকে ‘না’ বলার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। সমাজের, রাষ্ট্রের বা যে কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি থেকে দুনীতিকে ‘না’ বলার দৃঢ়তা প্রদর্শন করতে হবে। তবেই সমাজের নিচের স্তরে দুর্নীতি হ্রাস পাবে। আমি কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি হয়ে যদি নিজে দুর্নীতি থেকে দূরে না থাকি, খারাপ কাজ না করি তাহলে আমার অধস্তনেরা কোনোভাবেই দুর্নীতিমুক্ত হতে পারবে না। দুর্নীতি দূর হবে না।
৩) আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য পাঠ্যসূচিতে দুর্নীতিকে বিষয়বস্তু করতে হবে। দুর্নীতি একটি ঘৃণার বস্তু, সমাজে ক্ষতিকর, এই বিষয় উল্লেখ করে স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনা করাতে হবে। এটি যে একটি বড় ঘৃণার বিষয় তা আমাদের কচি মনে রোপণ করতে হবে। তবেই বড় হয়ে দুর্নীতিকে ‘না’ বলার অভ্যাস সহজে তৈরি হবে।
৪) আইনের শাসন কায়েম করতে হবে, যাতে দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতে হয়। ঠিক তেমনি আইনের প্রয়োগ করতে হবে। আইন সকলের জন্য সমান। আইন ধনী দরিদ্র, ক্ষমতা, ক্ষমতাহীন সকলের জন্য সমান তার প্রমাণ সমাজে দেখাতে হবে। শাসক ও শাসিত সকলের জন্য আইনকে সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে। তবেই দুর্নীতির দুষ্ট ঘোড়াকে দমন করা যাবে।
৫) দারিদ্র্যতাকে দুর্নীতির মূল কারণ বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু দারিদ্র্যতা থেকে বদঅভ্যাসই দুর্নীতির মূল কারণ। অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন সামান্য বেতনে চাকরি করে সংসার পরিচালনা করেন। ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম না করে সমাজে চলেছেন যা তার সুনীতি, সৎ চরিত্রের জন্য সম্ভব হয়েছে। তাই সমাজে সৎ চরিত্রবান মানুষ তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে। সৎ চরিত্রবান মানুষ সমাজে অধিক হলে সমাজ থেকে দুর্নীর্তি নামক দানবকে দূর করা যাবে। এজন্য সৎ মানুষ, ভালো মানুষ, চরিত্রবান মানুষ, লোভহীন মানুষ তৈরির পরিবেশ সমাজে সৃষ্টি করতে হবে। অভাব তৈরির অভিযোগ দূর করতে হবে। দারিদ্র্যতাকে দূর করতে হবে।
দরিদ্র মানুষের অভাব দূর করে ধনীর কাতারে শামিল করার ব্যবস্থা করতে হবে। এখনো আমাদের দেশে ৪০ শতাংশ মানুষ নিরক্ষর ও দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। দারিদ্র্যতার এই সুযোগ নিয়ে দুর্নীতি সমাজে বাসা তৈরি করে। শিক্ষাকে শতভাগে উন্নীত করতে হবে। তাই শিক্ষা খাতে বার্ষিক বাজেট আরও অনেক বৃদ্ধি করাতে হবে। শিক্ষাকে শতভাগে উন্নীত করা ছাড়া অভাব, দারিদ্র্যতা কোনোটাই সমাজ থেকে দূর করা যাবে না। সেইসঙ্গে সৎ, চরিত্রবান মানুষ তৈরির জন্য আমাদের শিক্ষা কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ছাড়া সুশিক্ষা সকলকে দেয়া যাবে না। সুশিক্ষার জন্য চাই সুশিক্ষক। আর সুশিক্ষক তৈরি হলে সুনাগরিকও সহজে তৈরি হবে। সুশিক্ষক ছাড়া সুনাগরিক, সৎ নাগরিক, দেশপ্রেমিক নাগরিক আশা করা যায় না। বিশ্বব্যাংকসহ সকল বিশ্ব সংস্থাকে দুর্নীতি দূর করার স্বার্থে দারিদ্র্যতা দূর করার সঙ্গে সঙ্গে সৎ মানুষ তৈরির পরিকল্পনাও গ্রহণ করতে হবে।
য় লেখক : সাবেক সহসভাপতি এফবিসিসিআই, বিটিএমএ, বিজেএমইএ, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি
ধয়যধরফবৎ@ুড়ঁঃযমৎড়ঁঢ়নফ.পড়স

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন