খাদ্য নিরাপত্তা প্রতিটি দেশের জন্য অপরিহার্য। যে দেশ খাদ্যে নিরাপদ নয় সে দেশে নানাবিধ দুর্বলতায় পড়তে হয়। প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যা এই বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা জরুরি। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, রমজান মাসে চাহিদা বেশি ইত্যাদি কারণে খাদ্য মজুত নিশ্চিত করা উচিত। বিশেষজ্ঞরা সেটাই বলে আসছেন। অথচ বছরজুড়ে ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ’ প্রচারণা চললেও চালের পর্যাপ্ত মজুত গড়ে না তোলায় অসাধু মজুতদার, মিলার ও আড়তদারদের সিন্ডিকেট যখন-তখন চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত না থাকায় ভোক্তারা নিরুপায় হয়ে বেশি দামে খাদ্যপণ্য কিনছেন। বাধ্য হয়েই চাল আমদানির পথে হাঁটছে সরকার। মূল্যস্ফীতির কারণে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং খাদ্য আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। খাদ্যগুদামে মজুতের নামে ধান-চাল ক্রয়ের জন্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য অধিদফতর মিটিং করে, দাম নির্ধারণ করে ক্রয়ের পরিমাণ প্রকাশ করে। অথচ মন্ত্রণালয়ের খাতা-কলম আর অধিদফতরের খাদ্যগুদামে মজুতের চিত্রে মিল নেই। ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই’ প্রবাদের মতোই খাতা আর বাস্তবে অমিল হওয়ায় সিন্ডিকেটের মর্জির ওপর নির্ভর করছে চালের নিত্য বাজার দর। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা করে পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করা গেলে খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এ জন্য দালাল নয়, প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে ধান-চাল ক্রয় করতে হবে। একই সঙ্গে খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা ও দালালচক্রের সিন্ডিকেট দমনে জোরালো মনিটরিং করতে হবে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকারের মজুত আছে, কত মজুদ আছে সেটা আপনি ও আমি জানি না। ফলে সেটা বলে লাভ নেই। গুরুত্বপূর্ণ হলো বাজার কী বলছে। বাজারে যদি চালের সঙ্কট না থাকে তাহলে দাম বাড়ছে কেন। তাহলে সরকারের দুর্বলতা রয়েছে। সামনে রমজান আসছে। বন্যার আশঙ্কা আছে। চালের চাহিদা আরো বাড়বে। তাই এখনই মজুতের ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে চালের দাম আরো বাড়বে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়া মিল মালিকরা ধান কিনে বলেই আমরা সারা বছর চাল পাচ্ছি। তবে সরকারকে নজর রাখতে হবে। মিল মালিকরা যেন প্রয়োজনে অতিরিক্ত মজুত না করতে পারে। মিলাররা বাজার স্থিতিশীল রাখে। যখন বাজারে ঘাটতি থাকে তখন সরকারের উচিত সরবরাহ বাড়ানোর ব্যবস্থা করা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধান ও চাল লটারির মাধ্যমে ক্রয়নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এই লটারিতে খুব কম কৃষকের নাম আসে। মূলত গোডাউনের কর্মকর্তা ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা, ফড়িয়ারা সিন্ডিকেট করে ধান-চাল ক্রয় করে থাকে। ফলে প্রকৃত কৃষকদের বেশির ভাগই সরাসরি গোডাউনে চাল সরবরাহ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। ধান-চাল ক্রয়ে দেখা যায়, যারা জীবনে কোনো দিন ধান চাষ করেননি তাদের নাম লটারিতে উঠছে। তাদের টিকিট কিনে নিচ্ছে কিছু দালালচক্র। সেই দালালরাই খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহের দায়িত্ব পাচ্ছে। তাই সময়মতো ধান পাচ্ছে না সরকার। অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ ২০২১-২২ এর আওতায় প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ জোরদারকরণ বিষয়ে সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত ২০ জানুয়ারি চালের দামের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। ওই সভায় একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি জানান, সরবরাহ কমিয়ে ধান-চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে। তিনি মনিটরিং জোরদারের সুপারিশ করেন। কিন্তু মনিটরিং বাড়ানো হয়নি। এ অবস্থায় আজ রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এবং কাল রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। এসব বৈঠকে জেলা প্রশাসকসহ খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা, চালকল মালিক, আড়তদার, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার নির্দেশনা দেয়া হবে।
জানতে চাইলে খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম ইনকিলাবকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সভা করেছি। সেখানে বলা হয়েছে, মিলাররা চাল ধীরে ধীরে ছাড়ছে। মিলাররা ধান মজুত করছে। কিন্তু আমরা অভিযান চালিয়ে মজুত পাচ্ছি না। মিলাররা ধান কিনে কৃষকের কাছেই রাখছে। ফড়িয়ারা ধান মজুত করছে। সে তো কৃষক হিসেবেই মজুত করছে। তিনি বলেন, কৃষকের ঘরে তো মোবাইল কোর্ট করা যায় না। কোথাও মজুত দেখলে খাদ্য বিভাগ এনফোর্সমেন্টে যেতে পারছে না। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আমরা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি টাস্কফোর্স করতে চাচ্ছি। এই টাস্কফোর্স মূলত চাল ও আটার বিষয়টি দেখবে।
আমন মৌসুম শেষ। কৃষকরা গোলায় ধান তুলেছেন। এরই মধ্যে কয়েক দফায় বাজারে বেড়েছে ধান-চালের দাম। চলতি মৌসুমে সরকারি আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। আমন মৌসুম ধান সংগ্রহের বেশির ভাগ সময় পেরিয়ে গেলেও সামান্য পরিমাণ ধান ও চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে খাদ্য অধিদফতর। এ পর্যন্ত আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। এ কারণে আমন ধান সংগ্রহে ভাটা পড়েছে। এদিকে ঢাকা বিভাগে যে পরিমাণ বোরো চাল রয়েছে তা আগামী মার্চ-এপ্রিল মাসে শেষ হয়ে যাবে। ঢাকা বিভাগে ধান সংগ্রহের কার্যক্রম সন্তোষজনক নয় বলে মহাপরিচালককে জানিয়েছেন ঢাকা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক। আমন ধান সংগ্রহ করা এবং বর্তমান গুদামের সংরক্ষিত ধান ছাঁটাইয়ের বিষয়ে বাস্তবতার নিরিখে মতামত প্রদানের জন্য আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে ৭ লাখ ২০ হাজার মে. টন চাল সংগ্রগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫৯ হাজার ৯৫৪ মে. টন আমন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫ লাখ ৫০ হাজার ২৮৬ মে. টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। তেমনিভাবে ধান সংগ্রহ করতে পারছে না।
খাদ্য অধিদফতর থেকে সংশয় প্রকাশ করে মাঠ প্রশাসন ও মাঠ পর্যায়ের জেলা ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাদের আমন সংগ্রহ জোরদারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কর্মসূচি জারির মাধ্যমে খাদ্যশস্য সরানো অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়েছে। ধান সংগ্রহ অভিযান নিয়ে অনিয়ম রোধে এবার বেশ কিছু জেলায় অ্যাপের মাধ্যমে আমন ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চালানোর পদক্ষেপ নিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
খাদ্যের মজুত গড়ে তুলতে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকারের সংগ্রহের বড় একটি অংশ আমন থেকে করতে চাচ্ছে সরকার। সঙ্কটকালে বাজার নিয়ন্ত্রণে এই মজুত সরকারের অন্যতম হাতিয়ার। একই সঙ্গে কৃষককে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাও এই সংগ্রহের অন্যতম উদ্দেশ্য। এবারই প্রথম আমনের মৌসুমে ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, কৃষকের জন্য ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে চায় সরকার। পাশাপাশি খাদ্যের নিরাপত্তা মজুতও বৃদ্ধি করতে চায়। বোরো ধান সংগ্রহে সফল হয়েছে সরকার। সে ধারাবাহিকতায় আমন সংগ্রহেও সফলতা অর্জন সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম খোরশেদ আলম ইনকিলাবকে বলেন, যখনই চালের মৌসুম আসছে, দাম কমে গেছে। নতুন ধান যখন আসবে এর এক বা দুই মাস আগে চালের দাম বাড়ে, এর আগে বাড়ে না। কিন্তু এখন ব্যতিক্রম হলো ধান আসার দুই মাস আগে চালের দাম কম ছিল অথচ এখন ধান উঠেছে, কৃষক, ফড়িয়া ও মিলারদের ঘরে ধান, সেই সময় চালের দাম ৪-৫ টাকা বেড়েছে প্রতি কেজিতে। এটা অস্বাভাবিক বিষয়। চালের দাম বেশি কিন্তু কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। অসাধু মিলাররা ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ধান-চাল মজুত করছে, তারাই চালের দামের ঊর্ধ্বগতির জন্য দায়ী।
টিসিবির সহকারী কার্যনির্বাহী (বাজার তথ্য) মো. নাসির উদ্দিন তালুকদার বলেন, কয়েকদিন আগে একটি সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের লোকজন ছিলেন। তারা বলেছেন, আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে। বৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা খুবই সামান্য। ফসলের কোনো ঘাটতি নেই। আমরা বাজার থেকে তথ্য পেয়েছি, মিলার ও আড়তদাররা চাল বাজারে কম করে ছাড়ছে। এখন চাষাবাদের জন্য উন্নত প্রযুক্তি এসেছে। সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। ফলন বেশি হয়। অটো রাইস মিলগুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে শত শত মণ ধান ছাঁটাই করছে। খরচ কমে গেছে। গত ৭ জানুয়ারির মধ্যে মাঠ পর্যায়ের খাদ্য কর্মকর্তাদের ধান ও চালের অবৈধ মজুতের তথ্য দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
গত বছর ৩১ অক্টোবর খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির এক সভায় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় আমন ধানের সরকারি ক্রয় মূল্য প্রতি কেজি ২৭ সাতাশ টাকা, চালের মূল্য প্রতি কেজি ৪০ (চল্লিশ) টাকা এবং গমের মূল্য প্রতি কেজি ২৮ (আটাশ) টাকা নির্ধারণ করা হয়। চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) উল্লিখিত মূল্যে গত বছর ৭ নভেম্বর থেকে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। এ সময়ে তিন লাখ মেট্রিক টন আমন ধান, পাঁচ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ক্রয় করার সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ১ এপ্রিল থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টন গম ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়। গত বছর আমন ধান ও চালের দাম ছিল যথাক্রমে ২৬ ও ৩৬ টাকা। পরে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা আরো কিছুটা বাড়ানো হয়। এর পরে গত ২০ নভেম্বর থেকে ধান ও ২ ডিসেম্বর থেকে চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। ধান-চাল সংগ্রহ চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবার আমনে কৃষকের অ্যাপ-এর মাধ্যমে দেশের ৮ বিভাগের ১৬ উপজেলায় ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। কৃষক নির্বাচন করা হয়েছে লটারির মাধ্যমে। কিন্তু তারপরও কৃষক নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিতর্ক উঠেছে। এখন পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করতে পারেনি বলে জানানো হয়।
অভিযোগ রয়েছে, যারা জীবনে কোনো দিন ধান চাষ করেননি তাদের নাম লটারিতে উঠছে। তাদের টিকিট কিনে নিচ্ছে কিছু দালাল। সেই দালালরাই খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহের দায়িত্ব পাচ্ছে। তাই সময়মতো ধান পাচ্ছে না সরকার। অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ ২০২১-২২ এর আওতায় প্রকৃত কৃষকের নিকট থেকে ধান সংগ্রহ জোরদারকরণ বিষয়ে সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
চিঠিতে বলা হয়, চলতি অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ ২০২১-২২ এর আওতায় উৎপাদক কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে উপজেলা পর্যায়ে ওয়েবসাইটে কৃষক তালিকা প্রকাশ, তালিকাভুক্ত কৃষকের তালিকা উপজেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির কাছে হস্তান্তর করা এবং হস্তান্তরিত তালিকা থেকে উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে নির্বাচিত কৃষকদের থেকে ধান কেনার ব্যবস্থা নিতে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়। এ নির্দেশনার আলোকে ইতোমধ্যে সারাদেশে শতভাগ লটারি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। চিঠিতে আরো বলা হয়, ১৩ জনুয়ারি সাপ্তাহিক মজুত প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেট আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা জানান, আমন সংগ্রহ করার জন্য তার বিভাগে ডিআরটিসি ও আইআরটিসির মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সুনামগঞ্জের কিছু কিছু এলাকায় এখনো ধান সংগ্রহের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ধান ছাঁটাইয়ের নির্দেশনা পাওয়া গেছে।
রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, রাজশাহী বিভাগে ২/১টি এলএসডিতে ধান ক্রয় অব্যাহত রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫১২ মে. টন বোরো আতপ চাল মজুত রয়েছে। চলমান সংগ্রহ কার্যক্রম সফল করার জন্য এ বিভাগে তেমন কোনো সমস্যা নেই। বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, ভোলা ও পটুয়াখালী জেলায় ধান সংগ্রহ সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বাবুগঞ্জ এলএসডির দু’ঘটনায় খাদ্য বিভাগের ভাবমর্যাদা ফিরে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, এ বিভাগে আমন সংগ্রহ কার্যক্রম সফল করার লক্ষ্যে খালি জায়গার সমস্যা রয়েছে। পুন: বরাদ্দের চাল সংগ্রহের জন্য জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দিনাজপুর সিএসডি ও ঠাকুরগাঁও থেকে কিছু পুরাতন চাল কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মাধ্যমে সরানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। তবে জানা গেছে, অনেক জেলায় পাতানো ধান ক্রয় করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, বিলম্বে হারভেস্টিংয়ের কারণে কোথাও কোথাও ধান সংগ্রহ চলমান। তবে জানা গেছে, এ বিভাগে তেমন ধান সংগ্রহ হয়নি।
ঢাকা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, ঢাকা বিভাগে যে পরিমাণ চাল আছে তা আগামী মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।
খাদ্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক (সংগ্রহ) সাইফুল কাবির বলেন, শীত, বৃষ্টিসহ নানা কারণে সংগ্রহ অনেক কম হয়েছে। তবে শেষ দিকে সংগ্রহের পরিমাণ বাড়ে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন