বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সেনা সরিয়ে নিচ্ছে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কিয়েভে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৮ এএম

বিনা নোটিশেই হঠাৎ করে ইউক্রেন থেকে সব সেনা সরিয়ে নিচ্ছে ব্রিটেন। ব্রিটেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস হিপি বলেছেন, সংঘর্ষের আশঙ্কায় সব সেনা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইউক্রেনে কোনো ব্রিটিশ সেনা থাকবে না। খবর দ্য ইন্ডিপেন্ডের। ইউক্রেনকে ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র উপহার দিয়েছে ব্রিটেন। ইউক্রেনের সেনাদের এসব অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দিতেই সেখানে মোতায়েন করা হয়েছিল ব্রিটিশ সেনা। উত্তেজনার মধ্যে এসব সেনাকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটিশ সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণার পাশাপাশি সে দেশে অবস্থানরত সব ব্রিটিশ নাগরিককে সরে যেতে বলেছে লন্ডন। এদিকে ব্রিটেনের হাউস অব কমন্সের প্রতিরক্ষা কমিশনের প্রধান তুবিয়াস এলোড যুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ইউক্রেনের পতন ঘটলে অস্থিতিশীলতার নয়া অধ্যায় শুরু হবে। বর্তমানে চীন-রাশিয়া ফ্রন্ট শক্তিশালী হচ্ছে এবং পাশ্চাত্য দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে, ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েন নিয়ে শুধু ওই দুদেশ নয়, বিশ্বজুড়েই বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। এরই মধ্যে ইউক্রেনে সম্ভাব্য রুশ আগ্রাসনের আশঙ্কায় পশ্চিম ইউরোপীয় দেশটি থেকে সব সেনা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার পেন্টাগন এই ঘোষণা দেয় বলে বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি এক বিবৃতিতে বলেন, প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন ফ্লোরিডা ন্যাশনাল গার্ডের ১৬০ জন সদস্যকে অস্থায়ীভাবে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই সেনারা ইউক্রেনীয় বাহিনীকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছিলেন বলে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন। ওই সৈন্যদের কর্মীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছেন কিরবি। তাদের ‘ইউরোপের অন্য কোথাও’মোতয়েন করা হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে, উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতিতে কিয়েভ থেকে কয়েকজন ক‚টনীতিক সরানোর ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। বার্তা সংস্থা এএফপি শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, আগ্রাসন আতংকে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে। শনিবারের এই বিক্ষোভে মারিয়া শেরনেংকো বলেছেন, আতংকিত নয়। আমাদেরকে লড়াই করতে হবে দেশের স্বাধীনতার জন্য। এজন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে আমাদের। এদিন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি একই রকম ভাষণ দেন। তার কণ্ঠই যেন প্রতিফলিত হয়েছে মারিয়ার কণ্ঠে। মারিয়া বলেন, আমি শান্ত আছি। ভালবাসি ইউক্রেনকে। এ সময় অনেককে যুদ্ধ কোন সমাধান লেখা ব্যানার বহন করতে দেখা যায়। আবার অনেকে প্রতিরোধ কর লেখা ব্যানার বহন করেন। অপরদিকে, পশ্চিমা দেশগুলোর ক‚টনৈতিক চেষ্টা যেমন চলছে, তেমনি থেমে নেই ইউক্রেনকে ঘিরে সমর সজ্জাও। নিজেদের সীমান্ত সংলগ্ন দেশটির তিন দিকেই দিনে দিনে শক্তি বাড়িয়েছে পুতিনের দেশটি। শনিবার ক্রমশ বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন একঘণ্টা ফোনালাপ করেছেন। বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতি এড়ানোর চেষ্টা থেকে হয়েছে সবশেষ এ আলাপ বলে জানাচ্ছে রয়টার্স। আর পশ্চিমা দেশগুলোর ‘যুদ্ধ শুরু হতে পারে’ এমন উদ্বেগের মধ্যেই ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে সমুদ্রে বড় ধরনের নৌ মহড়া করছে রাশিয়া। আর যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, স¤প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক রুশ সেনা জড়ো হওয়ার খবরে খুব দ্রতই দখল অভিযান শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কাও প্রকাশ করতে শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। যুদ্ধ এড়ানোর লক্ষ্যে মরিয়া ক‚টনৈতিক চেষ্টার মধ্যে রাশিয়ার এমন সমর সজ্জাকে ইউক্রেনের জন্য আসন্ন হুমকি হিসেবে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা। তবে হামলা শুরু হলে কোন এলাকা থেকে শুরু হতে পারে সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের ওপর তিন দিক থেকে চাপ সৃষ্টি করেছে রাশিয়া। এ প্রতিবেদনে ইউক্রেনের তিন দিকেই রাশিয়ার সামরিক সজ্জা বাড়ানোর তথ্য তুলে ধরে কোন দিক দিয়ে সম্ভাব্য আক্রমণের চেষ্টা হতে পারে সে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ দিক থেকে ক্রিমিয়ায়, দুই দেশের সীমান্তবর্তী রাশিয়ার অংশ এবং উত্তরে বেলারুশে সেনা শক্তি বাড়িয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। ইউক্রেন এবং পশ্চিমা গোয়েন্দারা এ তিন এলাকাকে রণক্ষেত্র হিসেবে নজরে রাখছেন। শনিবার রাশিয়া জানায়, কিয়েভ কিংবা তার মিত্রদের ‘উসকানি’র ভয়ে ইউক্রেন থেকে তারা কয়েকজন ক‚টনৈতিক কর্মীকে সরিয়ে নিয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের এক প্রশ্নের জবাবে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, কিয়েভ বা অন্য দেশের সম্ভাব্য উসকানির ভয়ে আমরা ইউক্রেনে অবস্থিত রাশিয়ান দূতাবাসে কর্মী কমিয়ে আনছি। এদিকে, ক‚টনৈতিকভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা নিরসনে জার্মানিতে হওয়া আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি। এরই মধ্যে জানিয়েছেন, রাশিয়া সীমান্তে আরও সৈন্য জড়ো করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্থনি বিøংকেন জানিয়েছেন। এছাড়া শীতকালীন অলিম্পিক চলাকালীন সময়েই যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে কোয়াডের বৈঠক শেষে বিøংকেন বলেন, আমরা এমন পর্যায়ে আছি যেকোনো সময় যুদ্ধ শুরু হতে পারে। আরও পরিষ্কার করে বলা যায় অলিম্পিক চলাকালীন সময়েই ইউক্রেনে হামলা হতে পারে। শোনা যাচ্ছিল চীনকে খুশি রাখতে অলিম্পিক চলাকালীন সময়ে যুদ্ধে জড়াবেন না পুতিন। কারণ এতে করে অলিম্পিকের ওপর থেকে মানুষের নজর সরে যাবে। বিøনকেন আরও বলেন, আমরা রাশিয়ার হামলা করার প্রস্তুতি অব্যাহতভাবে দেখে যাচ্ছি। ন্ডিপেনডেন্ট, এএফপি, রয়টার্স, সিএনএন

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন