১৯৭৫ সালে জেলহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে ছেড়ে দিয়েছে দেশটির আদালত। গতকাল মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমান।
খায়রুজ্জামানকে ফেরত আনতে দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছিল বাংলাদেশ সরকার। তবে গত মঙ্গলবার তাকে দেশে ফেরত পাঠানো আটকে দেয় দেশটির হাইকোর্ট। বিষয়টি নিয়ে শুনানির জন্য আদালত তারিখ ঠিক করে দিয়েছে আগামী ২০ মে। মুক্তির পর তার স্ত্রী রিটা রহমান বলেন, তিনি তার স্বামী খায়রুজ্জামানকে নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন খায়রুজ্জামানের আইনজীবীরা।
তিনি তার স্বামীর মুক্তির জন্য সৃষ্টিকর্তাকে, যারা সহায়তা করেছেন তাদের ও মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। খায়রুজ্জামানের আইনজীবী এনগিও চো ইং বলেন, তার মুক্তির জন্য কোনো শর্ত দেয়া হয়নি। তিনি এখন স্বাধীন মানুষ। আমরা তাকে দুপুর ১টায় মুক্ত করতে পেরেছি এবং তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছি।
মুক্তি পেয়ে খায়রুজ্জামানও আদালত ও মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানান। ১০ ফেব্রুয়ারি খায়রুজ্জামানকে দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তার আমপাঙের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। সাবেক ওই কূটনৈতিকের আইনজীবী আদালতের কাছে গত মঙ্গলবার দাবি করেন, তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন, তার কাছে ইউএনএইচসিআরের কার্ডও ছিল, তিনি এখন পর্যন্ত কোনো অভিবাসী আইন লঙ্ঘন করেননি, তাই তাকে তুলে নেয়া বেআইনি ছিল।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের সময়কালে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত ছিলেন খায়রুজ্জামান। জাতীয় চার নেতাকে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফিরে আসতে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কিন্তু জীবননাশের শঙ্কায় খায়রুজ্জামান কুয়ালালামপুরে ইউএনএইচসিআরের কাছে যান এবং মালয়েশিয়ায় তার অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি পরিচয়পত্র পান। এরপর থেকে তিনি শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন