লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নদীভাঙা অসহায় কয়েকটি পরিবারের বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। কয়েক বছর ধরে দখলে থাকা জমি থেকে নদীভাঙা ১৩টি পরিবারকে উচ্ছেদের জন্য সংঘবদ্ধ একটি দল এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সকালে উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের চরবসু এলাকায়। এ সময় ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালিয়ে তিনটি বসতঘর ভাঙচুর করে মালামাল লুটপাট করা হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
জানা গেছে, মেঘনানদীর ভাঙনের শিকার হয়ে রামগতি উপজেলার চরআব্দুল্লাহ এলাকা থেকে ফারুক মাঝী, বেলায়েত হোসেন, নুরুল হক, জসিম উদ্দিন ও আওলাদ হোসেনের পরিবারসহ ১৩টি পরিবার নয় বছর আগে কমলনগর উপজেলার চরবসু এলাকায় জমি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু নুরভানু ও ফিরোজ আলম নামে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে তাদের ক্রয়কৃত চার একর জমির মধ্যে দুই একর জমি পার্শবর্তী নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের কাজির তালুক এলাকার চোকন আলীর ছেলে মো. ইশ্রাফিল নিজের রেকর্ডিয় জমি বলে দাবি করে আসছে। এনিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে ইশ্রাফিল ওই জমি দখলে নিতে অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত ২০ থেকে ২৫ জন ভাড়াটে লোক নিয়ে মঙ্গলবার সকালে হামলা করে। হামলাকারীরা বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এ সময় তাদের ভয়ে অসহায় পরিবারগুলোর সদস্যরা পালিয়ে যায়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা জসিম, নুরুল হক ও আওলাদ হোসেনের বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে গেলে হামলাকারীরা পিছু হঁটে।
ভুক্তভোগী আওলাদ হোসেন ও ফারুক মাঝি জানান, নদীভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে সামান্য কিছু জমি ক্রয় করে তিনি ওই এলাকায় আশ্রয় নেন। কিন্তু সেই আশ্রয় থেকে উচ্ছেদের জন্য ইশ্রাফিল লোকজন নিয়ে হঠাৎ করে তান্ডব চালায়। তিনি ভয়ে পালিয়ে গেলে হামলাকারীরা তার বসতঘরটি ভাঙচুর করে লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় তারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত মো. ইশ্রাফিলের মুঠোফোনে (০১৮১৩ ৯৩৮০১৮) একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। খুদে বার্তা পাঠালেও তার কোনো সাড়া মেলেনি।
কমলনগর থানার উপপরিদর্শক বিপ্লব কুমার সিংহ জানান, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন