শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষকদের সংগঠন ‘শাবি শিক্ষক সমিতি’ নির্বাচন আগামীকাল। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে নয়টা থেকে চারটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে মোট শিক্ষকদের ৪৬২ জন ভোটার রয়েছেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার প্রকাশ করেছে আওয়ামী শিক্ষকদের দুইটি আলাদা প্যানেল ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ এবং ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’। তবে নির্বাচনী তসফিল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে না পারায় এবারের নির্বাচনে কোনো পদেই বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে শ্রদ্ধাশীল শিক্ষক ফোরাম’ প্যানেল থেকে কোনো প্রার্থী থাকছে না।
নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ প্যানেল থেকে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মস্তাবুর রহমান, সহ-সভাপতি পদে পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আশরাফুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ পদে জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. গোকুল চন্দ্র বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক পদে রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শিশির কান্তি প্রামানিক, যুগ্ম সম্পাদক পদে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোস্তাফা কামাল মাসুদ এবং সদস্য পদে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল আরাফাত, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক করিমা বেগম, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল বাকী, জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হাম্মাদুল হক, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সমিত হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ প্যানেলের ইশতেহারে থাকছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্যাথলজিক্যাল টেস্টের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সর্বজন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দিন আহমদ চৌধুরী এবং অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে স্মরণীয় করে রাখতে তাঁদের নামে স্থাপনার নামকরণ নিশ্চিত করা, কেন্দ্রীয় পানি-শোধনাগার এবং ইলেক্ট্রিক সাব-স্টেশন স্থাপন করা, নির্মাণাধীন সামাজিক বিজ্ঞান ভবন এবং সেন্টার অব এক্সিলেন্স বিল্ডিংয়ে শিক্ষক লাউঞ্জ স্থাপন করা, সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপনকৃত পিএইচডি-ইনক্রিমেন্ট প্রদান বাস্তবায়ন করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নারী-শিক্ষকদের পদায়নের অগ্রাধিকার নিশ্চিতকরণ, বিশ্ববিদালয়ের প্রত্যেক ভবনে নারীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুম, রেস্টরুম ও নামাজের ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা, প্রতিটি শিক্ষা ভবনে ন্যূনতম একজন নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ করা এবং শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুসৃত নীতিমালা অনুসরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার মতো উল্লেখযোগ্য বিষয়।
অপরদিকে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি পদে অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন, কোষাধ্যক্ষ পদে পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরহাদ হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক পদে সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম ও যুগ্ম সম্পাদক পদে আইআইসিটি সহকারী অধ্যাপক ড. আহসান হাবিব এবং ছয়টি সদস্য পদের বিপরীতে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মো. সেকেন্দার আলী, সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম মো. মুন্না, পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মির্জা নাজমুল হাসান, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হালিম, পাবলিক এডমিনিসস্ট্রেশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তাফা কামাল, জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম খান নির্বাচনে প্রার্থীতা করছেন। এ প্যানেলের ইশতেহারে সকল শিক্ষকদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও কার্যকর ভুমিকার মাধ্যমে একমাত্র শিক্ষক সংগঠনকে ( শাবি শিক্ষক সমিতি) পরিচালিত করা, দলমত নির্বিশেষে শিক্ষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও কল্যাণে কাজ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা এবং কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত পরিস্থিতি কঠোরভাবে মোকাবেলা করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানদের জন্য স্থায়ী আধুনিক ডে-কেয়ার সেন্টার ও মিনি শিশু পার্ক নির্মাণে বলিষ্ট ভূমিকা রাখা, শিক্ষকদের আপগ্রেডেশন ও প্রমোশন নিয়মিত সম্পন্ন হওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা, শিক্ষকদের জন্য ভবন ভিত্তিক শিক্ষক লাউঞ্জ তৈরীর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, শিক্ষকদের গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করে প্রণোদনার ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক বিষয়ে অবহিতকরণের লক্ষ্যে কমপক্ষে এক থেকে ছয় মাস পর্যন্ত ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নেয়া যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে ট্রেনিং ও তদারকি যাতে নিশ্চিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখা, শিক্ষকদের পরিবারের সদস্যদেরকে ইন্সুরেন্সের আওতায় আনার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা, বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রণয়নে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে আলোচনাপূর্বক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, স্টেডিয়াম উন্নতিকরণ, ইন্টারনেট এর গতি বৃদ্ধিকরণ, বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়ানোর জন্য চাহিদা মোতাবেক পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন, গৃহঋণ প্রক্রিয়া সহজীকরণ, শিক্ষকদের পৃথক কোয়ার্টার নিশ্চিতকরণ, লেকের সৌন্দর্য বর্ধন, কিলোরোডে ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ ত্বরান্বিতকরণ, মহিলা শিক্ষকদের জন্য প্রতি ফ্লোরে আলাদা ওয়াশরুম নির্মাণ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষকদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জোর পদক্ষেপ গ্রহণ ইত্যাদি বিষয় থাকছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন