বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আদিগন্ত

রাজনৈতিক সমস্যা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব

প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ রেজাউর রহমান
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। ফলে বর্তমান সংসদে কোনো সক্রিয় বিরোধী দল বলতে কিছুই নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে নির্বাচন থেকে দূরে থাকাটার প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল আওয়ামীলীগ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকার যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছিল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে। তাদের দাবি ছিল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকার নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অস্বীকারের করলে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। তখন বিএনপি তথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে না এলেও নির্বাচন হতে হবে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ তথা সরকারের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু সকল মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিলে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার দোহাই দিয়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অপরিহার্যতার যুক্তি তুলে ধরেছিলেন।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে গঠিত জাতীয় সংসদ ভবিষ্যতে সকল সাধারণ নির্বাচন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবেÑ এ মর্মে আইন পাস করার পরে সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের জুন মাসে পুনরায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আওয়ামী লীগ সে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে। পাঁচ বছর পরে ২০০০ সালে পুনরায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচনে পুনরায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে বিএনপি। ২০০৬ সালের নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা পদে কে আসীন হবেনÑ এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে ক্ষমতাসীন বিএনপি অনেক বিলম্ব করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ইয়াজউদ্দিনকেই প্রধান উপদেষ্টা করেন। পরে প্রেসিডেন্ট ড. ফখরুদ্দীন আহমদকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিলে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও ছবিসহ দেশের সকল প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকের ভোটার আইডি প্রণয়নে দুই বছর সময় নিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সফলভাবে সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। যে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল এবং ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখে সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে দাবি আদায় করেছিল; তারাই আবার ১৯৯৬ সালের জুন মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে বিরোধী দলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর পুনরায় অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গঠন করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচনের আগে উচ্চ আদালতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হলে এবং সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক তা বহাল রাখলে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করলে প্রধান বিরোধী দল নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়।
দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন শুধু বিএনপিই নয়, আওয়ামী লীগবিরোধী অন্য সকল রাজনৈতিক দলই তা বর্জন করে এটাই প্রমাণ করে যে, দলীয় সরকারের অধীনে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে রেখে কোনো নির্বাচন নয়। বিএনপির নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত প্রত্যক্ষভাবে গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ বিরোধী সকল রাজনৈতিক দল যথাÑ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জাসদ, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডা. বদরুদ্দোজার নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা, আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের নেতৃত্বাধীন কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম এবং আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল। ফলে আওয়ামী লীগ ছাড়া ও আওয়ামী লীগের সমর্থক ১৪ দলীয় জোট ছাড়া ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দশম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হন ১৫৩ জন সাংসদ। এটা ছিল নির্বাচন বর্জনকারী আওয়ামী লীগ বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের পক্ষে রেকর্ড সৃষ্টিকারী একটি দৃষ্টান্ত। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৩ জন ছাড়া অন্যান্য ১৪৭ আসনেও ১৪ দলীয় প্রার্থীরা এবং এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ব্যাপক কারচুপির আশ্রয় গ্রহণ করায় এবং নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে সরকারের তিনজন মন্ত্রী হিসেবে যোগ দিলেও জাতীয় পার্টিকে দেয়া হয় বিরোধী দলের মর্যাদা। এসবই হচ্ছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ব্যতিক্রমধর্মী ব্যবস্থা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচন যে প্রশ্নবিদ্ধ তা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ কাউন্সিল প্রদত্ত ভাষণে সেটার স্বীকৃতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হোক তা তিনি চান না। এতে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ এক নির্বাচন।
বস্তুত নির্বাচন কার অধীনে অনুষ্ঠিত হবেÑ এ সম্পর্কে প্রধান বিরোধী দল ও ছোট ছোট অন্যান্য দলের দাবি হচ্ছে, সরকারি দলের প্রতি চ্যালেঞ্জ। সরকার দাবি রক্ষায় কিছুটাও এগিয়ে না এলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, যেনতেন প্রকারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে যা যা কৌশল প্রয়োগ করা যায়, তাই করা হবে। সর্বাপেক্ষা বড় অস্ত্র হবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিতে ভাঙন সৃষ্টি ও বিএনপির নামে খ-িত বিএনপি বা বিএনপির একাংশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে যেসব দল অংশগ্রহণ করেনি, তারা পুনরায় পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না তা এখনো অনিশ্চিত। তবে সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা থাকবে এবারও অর্থাৎ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তত আওয়ামী লীগ বিরোধী কয়েকটি দলের অংশগ্রহণ।
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদের মতো ২০১৮ বা ২০১৯ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, সে নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশগ্রহণের জন্য যে শর্ত দিচ্ছে তা হলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। তবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্যে কার অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সে সম্পর্কে মতৈক্যে পৌঁছতে হলে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের সাথে আলোচনা ছাড়া কোনো সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সরকারি দলের নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এই সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে বিরোধী দলের সাথে কোনো আলোচনা না করে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হলে কতটুকুই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করা যাবে তা একেবারেই অনিশ্চিত। মুশকিল হচ্ছে, এই রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছুই নেইÑ এই সর্বজনগ্রাহ্য ও বহুল প্রচলিত কথা আমাদের দেশে মোটেই বিবেচনায় আনা হচ্ছে না। দলের সর্বোচ্চ শীর্ষ পর্যায় থেকে বিরোধী দলের সাথে আলোচনার সম্ভবনাকে নাকচ করে দেয়া হলে রাজনীতিতে শেষ কথা বলা হয়ে যাচ্ছে। বক্তব্যে শেষ কথা বলা হয়ে গেলে আর পেছানোর কোনো উপায় থাকে না। তা ছাড়া বিএনপি কর্তৃক ঘোষিত অবরোধ আন্দোলনে পেট্রলবোমার ব্যাপক ব্যবহার ও একশরও বেশি নিরীহ নাগরিকের মৃত্যুর জন্য বিএনপির সাথে কোনো আলোচনা নয়Ñ এ কথা খুব জোরেশোরে বলা হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করা প্রয়োজন। এখন ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে যদি বারবার বিএনপির সাথে আলোচনা নয় বলা হয়, তাহলে আলোচনার সম্ভাবনা শূন্যে মিলিয়ে যায়। দেশে যে সংস্কৃতি গড়ে তোলা হয়েছে, তা হলো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিজের ও দলের ঘোরতর শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ক্ষমতা ছেড়ে ছিলেন খালেদা জিয়া।
গত ২৮ অক্টোবর ক্ষমতায় না থাকার দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল দুজন সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও অন্য দুজনের সাক্ষাৎকার পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হয়েছিল। সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ তার বক্তব্যে বলেছেন, বিএনপি নেতৃত্বকে তাদের ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তৃণমূল থেকেই মতামত নিয়ে তাদের এগোতে হবে। প্রফেসর এমাজউদ্দীন আরো বলেছেন, ‘দশ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির ওপর নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন হচ্ছে। গুম, খুন ও নানাভাবে দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। এসবের প্রতিশোধ গ্রহণের মানসিকতাও রাখা যাবে না।’
অন্য এক সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর এস এম এ ফায়েজ বলেছেন যে, ‘বিএনপি অতীতে বেশ কিছু ভুল করেছে। ২০১৩ সালের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী যখন খালেদা জিয়াকে সংলাপে বসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তখন তা যথাযথভাবে ব্যবহারের সুযোগ হারিয়েছে বিএনপি।’ তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকারেরও দায়িত্ব অনেক। বিশেষত সরকারের স্বার্থেই শক্তিশালী বিরোধী দলের প্রয়োজন, বিএনপির গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে সরকার যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা প্রয়োজন। কোনোভাবেই প্রতিহিংসার রাজনীতিতে জড়ানো ঠিক হবে না। এতে কারোরই মঙ্গল হয় না। বিএনপির প্রথম আমলে (১৯৯১-১৯৯৬) আমি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলাম। তখন দলটি ছিলো ক্লিন ইমেজের। বিএনপি দ্বিতীয়বার (২০০১-২০০৬) ক্ষমতায় থাকাকালীন তার ওপর জনগণের আস্থা কমে যায়। রাজনৈতিক দল হিসেবে এটা বিএনপি বিশ্লেষণ করলে অনেক উত্তরই খুঁজে পাবে।’
বিএনপির ক্ষমতা হারানোর ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ বলেছেন, ‘আমার মনে হয় নির্জীব হয়ে গেছে, হতাশায় ভুগছে। আগামীদিন নিয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। আমি একটি জনতার সনদ তৈরির কথা বলেছিলাম। ক্ষমতায় গেলে কী করবে, তারই একটি রূপরেখা। মনে হয় বিএনপি এটাতে গুরুত্ব দেয়নি। বিএনপির ওপর নির্মম অত্যাচার হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য সরকার সব রকমের ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু সরকারের সফলতা হলো পৃথিবীকে বোকা বানাতে পেরেছে। বিশ্ব ভুলে গেছে বিনা ভোটের সরকারকে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘দাবি আদায়ে বাধ্যকরণের আন্দোলনে বিএনপি পিছিয়ে আছে। বিএনপি যে ১০ বছর যাবৎ ক্ষমতায় নেই, তার পেছনে দলটির অনেক ভুলত্রুটি আছে। তার ওপর রয়েছে আওয়ামী লীগের চালাকি। তারা অপরাজনীতি করেছে। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনও ছিল চরম প্রহসনমূলক। ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করার জন্য আওয়ামী লীগই দায়ী। মনে রাখতে হবে, ওই নির্বাচন শুধু বিএনপিই বর্জন করেনি সিপিবি, গণফোরাম, জেএসডিসহ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই বর্জন করেছিল। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ বলেছিল সব দলের অংশগ্রহণে তারা আরেকটি নির্বাচন করবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও সেই ইঙ্গিত ছিল।’
চারজন বিশিষ্ট নাগরিকের বক্তব্য মতে রাজনীতিতে বিএনপি ভুল করেছে এবং ভুলের খেসরতই দিয়ে যাচ্ছেÑ এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রতিপক্ষকে পরাজিত করাই শেষ নয়, প্রকৃত অর্থেই গৃহপালিত বিরোধী দল রেখে আওয়ামী লীগও যে সকিছুতেই নিজেদের কর্তৃত্ব প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠার দ্বারা বৃহত্তর ভুল করছে না, এটা বলার সময় এখনও আসেনি। তবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যে তারা নতুন নতুন উদ্ভাবনী নিয়ম প্রবর্তন ও প্রতিষ্ঠা করেছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
য় লেখক : গবেষক ও প্রাবন্ধিক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন