শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ক্রেতাদের ভিড়

রাজধানীর ঈদ বাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

অভিজাত শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাথ। সবখানেই এখন ক্রেতাদের ভিড়। শেষ সময়ে এসে পছন্দের পোশাক কিনতে সাধ্য অনুযায়ী পছন্দের মার্কেটে ছুটছেন ক্রেতারা। ফলে ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে রাজধানীর অভিজাত বিপণিবিতানে যেমন ক্রেতার ভিড়, একইভাবে ফুটপাথের দোকানগুলোতেও পা ফেলার জায়গা নেই। গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। সকালে শপিংমল খোলার পর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের ভিড়। ইফতারির পরে ক্রেতা সমাগমে মুখরিত হতে থাকে শপিংমলগুলো।

রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের ক্যাপিটাল শপিংসেন্টারে দ্বিতীয় তলায় জুতার দোকানগুলোতে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়। ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরপর দু’বছর করোনার জন্য ঈদ কেনাকাটায় যে মন্দা ভাব দেখা গেছে, এবার তা দূর হয়েছে। তবে অনেকেই ঈদ করতে এখন ঢাকার বাইরে চলে গেছেন। জুতার হাট নামের দোকানের বিক্রয়কর্মী আরমান হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই বেচাকেনা খুব ভালো। করোনার আগে ঈদের সময় যেমন বিক্রি হতো, এখন তেমনই বিক্রি হচ্ছে।

মিরপুর-২ নম্বরের ফ্যাশন হাউজগুলোর বাইরে ও ভেতরেও ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সারা লাইফস্টাইলের বিক্রয়কর্মী নাফিস আহমেদ বলেন, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে পুরুষদের আকর্ষণের তালিকায় বরাবরই প্রথমে থাকে পাঞ্জাবি। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমাদের এখানে সাশ্রয়ী মূল্যে পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন ফ্যাশন আইটেমের সমাহার আছে। এ জন্য বিক্রিও খুব ভালো। সন্ধ্যার পর দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া যায় না। তবে শেষ সময়ে এসে অনেককেই পছন্দের পোশাক দিতে পারছি না। কারণ চাহিদার তুলনায় স্টক কমে এসেছে।

আগারগাঁও থেকে পাঞ্জাবি কিনতে আসা এক ক্রেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, শপিংমলগুলোতে পাঞ্জাবির দাম একটু বেশি হলেও মান ও ডিজাইনের বৈচিত্র থাকায় এখানেই আসা হয়। তিনি বলেন, বাবার জন্য একটা পাঞ্জাবি পছন্দ করেছি, কিন্তু সাইজ পাচ্ছি না। স্মল, মিডিয়াম সব সাইজই স্টক আউট বলছে। দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবার পোশাকের দাম এমনিতে একটু বেশি। তবে দুই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকার মধ্যে ভালো পাঞ্জাবি পাওয়া সম্ভব।

ফ্যাশন হাউজ নান্দনিকের বিক্রয়কর্মী হানিফ ক্রেতা সমাগম নিয়ে জানান, ঈদের আর বেশি দিন বাকি নেই। ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইফতারের পর থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে, তা মধ্য রাত পর্যন্ত থাকছে। এমনকি ইফতারের আগ মুহূর্তেও ক্রেতা থাকছে। তবে আমরা পছন্দসই পোশাক দিতে পারছি না বলে অনেক ক্রেতার অভিযোগ করছেন। কারণ এখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে এসেছে।
গৃহকর্মী শারমিন শিলা বলেন, বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের দোকানে পোশাক কিনতে গেলে ডিজাইন পছন্দ হলেও কাক্সিক্ষত সাইজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ জন্য জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউজগুলো ছাড়াও অন্য ফ্যাশন হাউজগুলোতে গিয়ে পোশাক খুঁজতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এই সময় ঈদের পোশাক বানানোর সুযোগ নাই। আবার জনপ্রিয় ব্র্যান্ড শপগুলোতেও পছন্দের জামা-কাপড় নেই। ফলে অন্য যেসব ফ্যাশন হাউজে সাধারণত যাওয়া হয় না সেখানেও গিয়েও জামা দেখছি।

মিরপুর-১০ নম্বরের ম্যানহুড, নিপুন, কে ক্রাফটসের কয়েকজন বিক্রয়কর্মীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গত সপ্তাহেই অনেক পোশাক বিক্রি হয়ে যাওয়ায় স্টকে কিছুটা টান পড়েছে। তবে অন্য আউটলেট থেকে এনে ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কেবল পাঞ্জাবি নয়, পুরুষ ক্রেতাদের আগ্রহ টি-শার্ট ও শার্টের প্রতিও। ক্যাজুয়াল ও আরামদায়ক হওয়ায় টি-শার্টের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। শার্ট-পাঞ্জাবি ছাড়াও প্যান্ট ও জুতার দোকানে পুরুষ ক্রেতাদের সমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে থ্রি-পিস, কাফকান, টপস, শাড়ি এসব পোশাকে নারীদের আগ্রহ বেশি। গরমে আরামদায়ক পোশাককে প্রাধান্য দিচ্ছেন নারীরা।

গতকাল মিরপুর-২ ও ১০ নম্বরের ফুটপাতে ক্রেতার প্রচণ্ড ভিড় ছিল। কোথাও কোথাও ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তায় পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে। হকার, ক্রেতাদের ভিড়ে সড়কগুলোতে তীব্র যানজট দেখা যায়। ক্রেতাদের অভিযোগ, ঈদের আগে বিক্রি বাড়ার সুযোগ দাম বাড়িয়ে ফেলেছেন বিক্রেতারা।
নুপুর সুলতানা নামের এক ক্রেতা জানান, ঈদ উপলক্ষে ১০০ টাকার পণ্য এখন ১৫০ টাকা বলছেন বিক্রেতারা। যে পর্দা ৩০০ টাকা করে বিক্রি করতো এখন ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে সব ধরনের পোশাকের দামও বাড়তি চাওয়া হচ্ছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিক্রেতাদের সেই চিরচেনা অজুহাত-সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় পোশাকের দামও বেড়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন