কয়েক বছরের মধ্যে এবার দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। গত পাঁচ মাসে এতে আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪০ হাজার ৮৪৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৯৩ জন। এ সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে রাজশাহীতে। আর সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে খুলনা বিভাগে। গত জানুয়ারি থেকে ৯ মে পর্যন্ত সারা দেশের হিসাবে স্বাস্থ্য অধিদফতর এ তথ্য দিয়েছে বলে অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটের প্রকাশিত তথ্য বলছে, হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া মোট রোগী ৪০ হাজার ৮৪৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৯৩ জন। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে রাজশাহীতে। এই বিভাগের মোট ৭ হাজার ৯৮৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৩১ জন। তবে রোগী সবচেয়ে বেশি খুলনায়। এই বিভাগে ৯ হাজার ৬৭ জন রোগী শনাক্ত হলে মারা গেছে ২১ জন। গত পাঁচ মাসের বিভাগ হিসাবে দেখা যায়, ময়মনসিংহ বিভাগে শনাক্ত ৬ হাজার ৪৮১ জন, এই বিভাগে মারা গেছে ১১ জন। ঢাকা বিভাগে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৭৪৪ জন। মারা গেছে ১১ জন। রংপুর বিভাগে ৪ হাজার ৩৬৫ জন। এই বিভাগে দুই মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
চট্টগ্রাম বিভাগে রোগী শনাক্ত ২ হাজার ৮৫৩ জন, এই বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। বরিশাল বিভাগে ২ হাজার ৭৪০ জন শনাক্ত, মারা গেছে ৩ জন। সিলেট বিভাগে ১ হাজার ৫৭১ জন রোগী শনাক্ত, এই বিভাগে মারা গেছে ২ জন।
সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা বলছে, বাংলাদেশে সারা বছর কমবেশি ডায়রিয়ার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এপ্রিল মাসে ডায়রিয়া বেশি ছড়িয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র প্রফেসর ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, তিন ধরনের রোগী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে। কিছু রোগীর শরীরে তীব্র পানিশূন্যতা দেখা যাচ্ছে। কিছু রোগীর পানিশূন্যতা আংশিক। কিছু রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলেও পানিশূন্যতা দেখা যাচ্ছে না।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, ডায়রিয়াজনিত রোগ হয় ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে। এর মধ্যে রোটা ভাইরাসের কারণে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া তিন ধরনের ব্যাকটেরিয়ায় ডায়রিয়াজনিত রোগ হয়। ভিবরিও কলেরি নামের ব্যাকটেরিয়া কলেরা বা তীব্র ডায়রিয়ার কারণ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে। ডায়রিয়া থেকে দূরে থাকতে পানি ফুটিয়ে খেতে হবে, রাস্তার পাশের উন্মুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। খাওয়ার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, ফিডারে শিশুকে কিছুই খাওয়ানো যাবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন