শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বরগুনায় ডায়রিয়া পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ, হাসপাতালের মেঝেতেও জায়গা পাচ্ছেনা রোগীরা

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৯ পিএম

বরগুনায় ব্যাপক হারে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। ইতিমধ্যে হাসাপাতালে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ বেশী রোগী ভর্তি হয়েছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত বেড না থাকায় হাসপাতালের মেঝেতেই থাকছেন ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা। রোগীদের চাপ থাকায় গত ২-৩ দিন ধরে মেঝেতেও যায়গা পাচ্ছেনা রোগীরা। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ দিনে বরগুনা সদর হাসপাতালে ২৬৪ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১১১ জনই শিশু। গত ২৪ ঘন্টা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৭ জন। এনিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট ভর্তি আছেন ৪০ জন।

এদিকে গত মাস থেকেই বরগুনায় ডায়রিয়া আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে অস্বাভাবিক হারে। গত মার্চ মাসে বরগুনা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩১০ জন।

রোববার (১০ এপ্রিল) সকালে বরগুনা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৩ টি বেড থাকলেও রোগী ভর্তি আছে ৪০ জন। বেড না থাকায় অপরিছন্ন মেঝেতে গাদাগাদি করে থাকছেন রোগীরা। কেউ আবার সিঁড়ির নিচে ঝুকিপূর্ণ জেনারেটরের পাশে চাদর বিছিয়ে বেড বানিয়ে নিয়েছেন। ইলেক্ট্রনিক সুইচের সাথে ঝুলিয়েছেন স্যালাইন। কেউ কেউ টয়লেটের সামনে যায়গা নিয়েছেন। এতে রোগীর সাথে থাকা স্বজনরাও আছেন ডায়রিয়া ঝুঁকিতে।

আশিষ, সেলিম, ইব্রাহীমসহ কয়েকজন রোগী বলেন, হাসপাতালে বেড না থাকায় আমাদের অস্বাস্থ্যকর মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। আমরা হাসপাতালে আসি সুস্থ হতে, কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ না বরং আরও অসুস্থ হওয়ার উপক্রম।

আরেক রোগী গোলাম মাওলা বলেন, এখানে পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। বেড তো নেই ই, মেঝেতেও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে আমাদের। তার উপরে এখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। নেই কেন ফ্যানও, গরমে আমরা আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।

রোগীদের স্বজনরা বলেন, শয্যা সংকট থাকায় মেঝেতে চাদর বিছিয়ে থাকতে হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় হাসপাতালের মেঝেতেও এখন ঠাঁই মিলছে না। হাসপাতাল থেকে শুধু মাত্র স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আর কোনো ওষুধ দেয়া হচ্ছে না রোগীদের।

বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহরাব হোসেন বলেন, গরমের মৌসুম শুরু হওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালে জনবল কম থাকার কারণে আমরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। রোগীদের যে পরিমাণে যত্নের প্রয়োজন আমরা শতভাগ না পারলেও সাধ্যমত চেষ্টা চালাচ্ছি। গত মাসের তুলনায় অধিক সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে।

বরগুনা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা ডায়রিয়া মোকাবিলা করতে চাই। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না শতভাগ বিশুদ্ধ পানি দেওয়া না যাবে, সেটা খাবারের পানি হোক আর নিত্য ব্যবহারের হোক ততক্ষণ পর্যন্ত ডায়রিয়া থেকে আমাদের রেহাই নেই।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে বেড সঙ্কট ও জনবল সঙ্কটের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। তারা শিগগিরই এর ব্যবস্থা নিবেন বলে আশা করছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন