ভারতে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের গণমিছিল নগরীর পুরানা পল্টন মোড়েই পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। দলের আমির আল্লামা ক্বারী শাহ আতাউল্লার নেতৃত্বে গণমিছিলটি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইট থেকে শুরু হলেও পল্টন মোড়ে গিয়ে আর সামনের দিকে এগুতে পারেনি। পরে দলীয় আমিরের মোনাজাতের মাধ্যমেই গণমিছিল সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। এ সময়ে পুলিশের কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে বিক্ষোভ সমাবেশে দলের আমির ও হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা শাহ আতাউল্লাহ বলেছেন, আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, আমি নবী (সা.)-কে দুনিয়ায় রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি। তিনি বলেন, যারা নবীর শানে বেয়াদবি করবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। ভারতে মুসলমানদের ঘর বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। নবীর দুশমনদের শাস্তি না দেয়ার কারণে মোদি সরকার তছনছ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ভারতে নবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে ইহুদীরা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্ত আমাদের সরকার এখনো কোনো প্রতিবাদ না করায় মুসলমানরা বিস্মিত। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, নবী (সা.)-এর শানে বেয়াদবির প্রতিবাদে অবিলম্বে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনুন। আল্লাহ আপনার মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন।
গতকাল মঙ্গলবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের উদ্যোগে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারক লিপি প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখছিলেন দলের আমির। মুফতি সুলতান মহিউদ্দিনের পরিচালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, দলের নায়েবে আমির ও মহানগরী আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, দলের শীর্ষ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আমির আলহাজ আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি, মাওলানা ইকরামমুল হক পীর সাহেব উজানী, যুগ্ম মহাসচিব হাজী জালাল উদ্দিন বকুল, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফিরোজ আশরাফী, মুফতি জসিম উদ্দিন, মুফতি ইলিয়াস মাদারীপুরী, কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতি আকরাম হোসেন, উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হান্নান আল হাদী, মুফতি মাহবুবুর রহমান, মাওলানা আক্তারুজ্জামান, মাওলানা শেখ সাদী, মাওলানা আশরাফ উদ্দিন, মাওলানা রফিকুল ইসলাম বিন নূরী, হাফেজ জাকির বিল্লাহ, মুফতি আল আমিন, মুফতি মো. ইউসুফ ও মাওলানা আক্তারুজ্জামান সাজেদী।
দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, ৯ শত বছর ভারতবর্ষ মুসলমানরা শাসন করেছেন। ওই দীর্ঘ শাসনামলে কোনো হিন্দুরা মুসলমানদের হাতে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়নি। তিনি বলেন, রাম বামদের দিন শেষ ভারত হবে মুসলমানদের দেশ। তিনি বলেন, মহানবী (সা.)-এর অবমাননায় আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। যারা নবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননা করে সেই ভারত টুকরা টুকরা হয়ে যাবে। দলের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, নবীর দুশমন নূপুর শর্মা ও জিন্দালকে ফাঁসির কাষ্টে ঝুলাতে হবে। ভারতে নিরীহ মুসলমানদের বাড়ী ঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। অবিলম্বে ভারতে মুসলিম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। দলের শীর্ষ নেতা আলহাজ আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি বলেন, মুসলমানরা কোনো উগ্রবাদীতে বিশ্বাসী নয়। মোদি সরকার মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি ছড়িয়ে মুসলমানদের দিয়ে দাঙ্গা বাঁধাতে চেয়েছিল। মুসলমানরা এত বোকা নয়। মুসলমানরা শান্তিপ্রিয়। তিনি অবিলম্বে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাস করার দাবি জানান। তিনি বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনীতে গান বাজনার জন্য শিল্পীদের নেয়া হচ্ছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনীতে দোয়ার জন্য আলেম ওলামাদের দাওয়াত দিন; এতে আপনাদের মান মর্যাদা কমবে না।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি (একাংশ) : বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি (একাংশ) এর উদ্যোগে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভারতে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত মানববন্দন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক ধর্মমন্ত্রী আলহাজ নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, ভারতে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির ঘটনায় ২শ’ কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত হানা হয়েছে। তিনি মোদি সরকারকে মহানবীর অবমাননার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান। অবিলম্বে জাতীয় সংসদে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে নিন্দা প্রস্তাব পাস করারও দাবি তোলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন উবায়দুল হক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন