বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অস্বস্তিতে নিত্যপণ্যের বাজার

বন্যার প্রভাব

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

বন্যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে। অসাধু চক্র বন্যার অজুহাত দেখিয়ে কৌশলে কৃত্রিম ঘাটতি তৈরি করে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। তাই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি বিরাজ করছে। বিভিন্ন ধরণের সবজির দর, কেজিতে বেড়েছে অন্তত ১০ টাকা। তবে পেঁয়াজ ও আলুর দাম এক লাফে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। পাইকারদের দাবি বন্যার কারণে, সরবরাহ কিছুটা কম। অপরদিকে মাছের দরও উর্ধ্বমুখি। অবশ্য ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে, গরুর গোশতের দাম আগের মতোই রয়েছে।
সূত্র মতে, কোনভাবেই স্বস্তি ফিরছে না নিত্যপণ্যের বাজারে। এক সপ্তাহ স্থিতিশীল থাকার পর আবারও বাড়তি চালের দাম। বেড়েছে পেঁয়াজ ও আলুর দাম। আর সপ্তাহ ব্যবধানে কিছু সবজির দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা। বন্যা পরিস্থিতিতে সরবরাহ কম বলছেন বিক্রেতারা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতিতে যখন সঙ্কটে সাধারণ মানুষ, তখন ফসল নষ্টের পাশাপাশি অসাধু চক্রের কৌশলে কৃত্রিম ঘাটতিতে আবারও নাভিশ্বাস অবস্থা নিত্যপণ্যের বাজার। গত সপ্তাহেও চালের দাম স্থিতিশীল ছিল পাইকারি ও খুচরা বাজারে। কিন্তু এ সপ্তাহে চালের দাম আবারও লাগামছাড়া। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীরা জানান, বস্তাপ্রতি চালের দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে ব্রি-২৮ ৫৪ থেকে ৫৫, মিনিকেট ৬৮ থেকে ৭০, স্বর্ণা মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। দাম আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতিতে সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রভাব পড়ছে সবজি বাজারে। সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেড়েছে কম বেশি সব সবজিতেই। সঙ্কটের কারণে বাড়তি দামে অন্য সবজির পাশাপাশি প্রতিকেজি বেগুন ও শশার দাম উঠেছে একশ টাকায়। মৌসুম না হওয়ায় টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর। এক কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এই সবজির দামে পরিবর্তন আসেনি।
এছাড়া কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এসব শবজির দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ১০ টাকা।
অন্যদিকে কোরবানির ঈদে মসলা হিসেবে পেঁয়াজের তুলনা নেই। তাই আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে চড়া হচ্ছে পেঁয়াজের বাজার। কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। পেঁয়াজের এমন দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, দেশি পেঁয়াজের বড় অংশ মজুতে চলে গেছে। আবার বন্যার কারণে কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। এ কারণেই দাম বেড়েছে। পেঁয়াজের মতো দাম বেড়েছে আলুর। ব্যবসায়ীরা আলুর কেজি বিক্রি করছেন ৩০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ২৫ টাকা। আর মাসখানেক আগে ছিল ২০ টাকা।
আলুর দামের বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আড়তে আলুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এক মাসের মধ্যে কেজিতে আলুর দাম বেড়েছে ১০ টাকা। নতুন আলু না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই। বরং সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।
এছাড়া বাজারে মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভেসে গেছে মাছের ঘের। যার অনিবার্য প্রভাব পড়েছে দামে। অবশ্য মুরগির বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয় ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও সোনালি মুরগির কেজি গত সপ্তাহের মতো ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মুরগির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আরিফ বলেন, গত সপ্তাহে সোনালি মুরগির দাম কমেছিল। এ সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। সামনে মুরগির দাম আরও কমতে পারে। অবশ্য গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন