পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট-বল্টু খুলে টিকটক করা যুবক বায়জিদ তালহার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার বিকেলে শরীয়তপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালেহুজ্জামান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে গতকাল দুপুরে মালিবাগ সিআইডির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, শুধুমাত্র হাত দিয়ে পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলা হয়নি, এ কাজের জন্য সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলা সম্ভব না। এ বিষয়ে আমরা সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করে জেনেছি এত বড় একটা স্থাপনার নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলা যাবে না। গ্রেফতারকৃত বায়েজিদের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, বায়জিদ তালহা ও তার বন্ধু কায়সারের টিকটক আইডি রয়েছে। কায়সারের আইডি থেকে গত রোববার ৩০-৩৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আপলোড হয়েছে। ভিডিওটি আপলোড হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে আমরা বায়জিদকে শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করি। রোববার সকাল ৭ টা থেকে ১১ টার মধ্যে ঘটনাটা ঘটেছে। বায়জিদ ও কায়সার দুই বন্ধু মিলে প্রাইভেটকারে করে পদ্মা সেতুতে যান। বায়জিদ জাজিরা প্রান্তের ৩০-৩৫ নম্বর পিলারের মধ্যে নেমে নাটবল্টু খুলে ফেলেন। এতে তিনি মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। আমরা বায়জিদের কাছ থেকে ডিভাইস উদ্ধার করেছি। আরও কিছু ভিডিও ও আগের অ্যাক্টিভিটিজ দেখে মনে হয়েছে এটা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কী জানা গেছে জানতে চাইলে রেজাউল মাসুদ বলেন, সবকিছু বিবেচনায় আমরা মনে করছি এই কাজটা সেই করেছে, তার একটা পরিকল্পনা ছিল। বাকিটা তদন্তে আসবে।
পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলা দ্বিতীয় যুবককে খুঁজছে পুলিশ: পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলা দ্বিতীয় যুবকের ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরই তার সন্ধানে নেমেছে পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। সিআইডি, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট তাকে শনাক্ত করতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে। প্রযুক্তিগত সহায়তাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দ্বিতীয় যুবককে আটকের চেষ্টা করছে সংস্থাগুলো।
একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রাথমিকভাবে জানার চেষ্টা করছে দ্বিতীয় যুবক আসলে কোন সেতুর নাট-বল্টু খুলেছে। পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলে থাকলে তা কোন প্রান্তের। এছাড়া তিনি কোথায় থাকেন, কী করেন এবং কী উদ্দেশ্যে এ কাজ করেছেন- এসব বিষয় সামনে রেখে তদন্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (সিআইডি ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ) জিসানুল হক বলেন, দ্বিতীয় ভিডিওটির বিষয়ে আমরা নজরদারি করছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলার বিষয়ে আমরা গুরুত্ব সহকারে নজর রাখছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন