রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ছক্কার বিনোদন দিতে এসেছেন গেইল

তামীমের সঙ্গে ওপেন করতে মুখিয়ে সিক্স মেশিন ০ ৪ ম্যাচে ৫৫ টি ছক্কা মারার ঘোষণা

শামীম চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সর্বাধিক রানই বলুন, কিংবা সর্বাধিক চার-ছক্কা, সর্বাধিক সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি, অথবা সর্বোচ্চ ইনিংসÑ সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ে সব রেকর্ড ক্রিস গেইলের দখলে। টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটের বিশ্বায়ন, জনপ্রিয়তার এই নায়কের রানের সমষ্টি এখন ১০ হাজার ছুঁই ছুঁই (২৭২ ম্যাচে ৯৬৬৮)। যার মধ্যে রেকর্ড ৭০৭টি ছক্কা এবং ৭৪২টি চারে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭২১০ রান! সবার আগে ১০ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদটা পেতে অপেক্ষা এখন ৩৩২ রানের। রেকর্ড ১৮টি সেঞ্চুরির পাশে ৭৮টি ফিফটি, ৪৫টি ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচÑ টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটের পরিসংখ্যানে এই জ্যামাইকানের ধারে কাছে নেই কেউ। রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ২০১৩ সালে পুনে ওরিয়র্সের বিপক্ষে ৬৬ বলে ১৭৫ রানের ইনিংসে এখনো বিস্ময় মানব গেইল। আসলেই, টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন তিনিই। বিপিএলের অভিষেক আসরে সাধারণ গ্যালারির টিকিটের দর ৫০০ টাকা দেখে আসরের শুরুতে কি দূর্ভাবনাই না বেধেছিল বাসা আয়োজকদের। বরিশাল বুলসের হয়ে খেলতে এসে গেইলের চার ছক্কায় দর্শক খরা কেটে সেই বিপিএল পেয়েছে উত্তাপ, উপচে পড়েছে দর্শক উপস্থিতি! টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় এই বিজ্ঞাপনকে বিপিএলের আগের তিনটি আসর মাতিয়েছেন, এবারো মাতাতে এসেছেন এবং তা ঘোষণা দিয়েই!
বিপিএলে সর্বাধিক ৩ সেঞ্চুরি, ১০ ম্যাচে ৫৪১ রানে (গড় ৭৭.২৮) স্ট্রাইক রেট ১৮৬.৫৫- বিস্ময়করই বটে! ওই ১০ ম্যাচে চার ছক্কার রেকর্ডটা এখনো তারই দখলে। ৫৪১ রানের মধ্যে ৪৪০ রানই তার চার ছক্কায় (৫০ ছক্কা, ৩৫ চার)। বিপিএলের শুরু থেকে বিনোদনের উপলক্ষ্য হয়ে যাওয়া এই ক্যারিবিয়ান আজ নামবেন মাঠে, খেলবেন তামীমের দল চিটাগাং ভাইকিংসে। বরিশাল বার্নার্স, ঢাকা ডায়নামাইটস, বরিশাল বুলসের পর এবার চিটাগাং ভাইকিংসে গেইল। টুয়েন্টি-২০’র ফেরিওয়ালা তাই নিজেকে আর একটি আসরে চেনাতে উদগ্রীবÑ ‘টুর্নামেন্ট শুরু হয়ে গেছে বেশ কিছু দিন আগে। জ্যামাইকায় যখন ছিলাম, তখন কিছু ম্যাচ, কিছু হাইলাইটস টিভিতে দেখেছি। ভাইকিংসের হয়ে খেলব বলে ওদের স্কোরগুলো ইন্টারনেটে দেখেছি। মাঝে মাঝে অন্য দলগুলোর সম্পর্কে ধারনা নিতে তাদের খেলাও দেখেছি। এই আসরের শুরু থেকে খেলতে পারলে ভালো লাগত। ব্যক্তিগত ঝামেলায় আসতে পারিনি। চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে খেলতে মুখিয়ে আছি। শুরুতে কিছু ম্যাচ হারার পর ছন্দ পেয়েছে দলটি। ছন্দে থাকা একটি দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারা সবসময়ই ভালো। আশা করি এবারো বিপিএলে জয় দিয়ে শুরু করতে পারব।’
প্রায় ৪ মাস পর ক্রিকেটে ফিরতে পারছেন, তাতেই পাচ্ছেন বড় আনন্দ গেইল। নিজের খেলা দেখতে আমন্ত্রণও জানিয়েছেনÑ ‘বিপিএলে ক’টা সেঞ্চুরি করেছি? ২টা, না ৩টা? পরিসংখ্যান নিয়ে আমি কখনোই ভাবি না। লক্ষ্য সবসময় একটাই, মানুষকে যতটা সম্ভব বিনোদন দেওয়া। সিপিএলের পর খেলার বাইরে প্রায় ৪-৫ মাস হয়ে গেছে। খেলায় ফিরতে পেরেই তাই ভালো লাগছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, টুইটারে অনেকেই লেখা-লেখি করেছে, বলেছে তারা আমাকে মাঠে দেখতে চায়। আগামীকালই (আজ) তাদের সুযোগ, টিভিতে চোখ নিবৃষ্ট রাখার। শুধু এখানে নয়, বাইরেও। ক্রিস গেইল ইজ ব্যাক!’
গেইলের সঙ্গে ওপেন করতে মুখিয়ে আছেন বাংলাদেশ সেনসেশন তামীম। আসরের শুরুতেই সে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বাধিক রান সংগ্রাহক। জানেন, গেইলও নাকি তামীমের সঙ্গে ওপেন করতে মুখিয়ে আছেনÑ ‘তামিমের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করার সুযোগ আসছে। তার জন্যও আমি মুখিয়ে আছি। তামীমও ভালো ফর্মে আছে। আশা করি প্রয়োজনীয় বোঝাপড়াটা দ্রæত করে আপন চেহারায় ফিরতে পারব। তামিম এখানকার কন্ডিশন খুব ভাল জানে। আমি চাইলে একটু সময় নিতে পারি, দেখতে পারি তামীম কিভাবে খেলছে। আমি তাকে দেখে দ্রæত ধারণা নিতে পারব। চেষ্টা করব যতটা সম্ভব আক্রমণাত্মক থাকতে। দলকে বিস্ফোরক শুরু এনে দিতে চেষ্টা করব।’
চিটাগাং ভাইকিংসের সঙ্গে আপাতত চুক্তি তার ৪ ম্যাচের। অতীতে যেভাবে খেলেছেন বিপিএল,তাতে এই আসরে ৩৩২ রান গেইলের কাছে প্রত্যাশাই করতে পারেন ভক্তরা। বিশ্বে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে ১০ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদে চোখটা তাই থাকছে গেইলেরÑ‘১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা হবে দারুণ ব্যাপার। তাহলে আমিই হব প্রথম ব্যাটসম্যান। তবে আপাতত আমার প্রধান লক্ষ্য থাকবে দলকে প্লে-অফে কোয়ালিফাই করানো।’
বিপিএলের প্রথম তিন আসরে ১০ ইনিংসে ৫০টি ছক্কায় মাতিয়েছেন গেইল। এই আসরেও সিক্স মেশিন হিসেবে নিজেকে চেনাতে চানÑ‘এবার তো ৪ ইনিংসে ৫৫ টা ছক্কাও মারতে পারি! আমি তো ছক্কার জন্যই পরিচিত। সিক্স মেশিন হিসেবে লোকে চিনে আমাকে। ছক্কা মারতে ভালই পারি। চেষ্টা করি যতটা সম্ভব বিনোদন দিতে। আমি জানি,আমাকে পেয়ে দর্শকও রোমাঞ্চিত। দর্শকের এনার্জিটাও আমি নিতে চাই। কারণ, তা আমার জন্য হবে জ্বালানি। মানুষ যখন যখন আমার কাছে ছক্কা চায়, চিৎকার করে, তা আমাকে ভালো করতে অনুপ্রেরণা জোগায়।’
বিশ্বের সবচেয়ে বড় শোম্যান ক্রীড়াবিদ উসাইন বোল্টের বন্ধু, লিজেন্ডারি রক স্টার বব মার্লের জ্যামাইকায় জন্ম বলে পার্টি আর আমোদ-প্রমোদকেই বেশি প্রাধান্য দেন গেইল। তার এক একটি বিশাল ছক্কায় বোলার খুন করার অভ্যেস যার, তার কাছে নাকি পার্টির চেয়েও ছক্কা মারাই নাকি বেশি উপভোগ্যÑ ‘অবশ্যই বেশি উপভোগ করি ছক্কা মারা। কারণ ছক্কা মারলে লাখ লাখ মানুষকে খুশি করা যায়। পার্টি করতেও ভালো লাগে। তবে মাঠে নেমে আমি চাই যত বেশি সম্ভব ছক্কা মারতে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন