শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে সিলেট নগরী

সিলেট ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

মাত্র দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে গেল দেশের প্রথম ডিজিটাল সিটি সিলেট। সিলেট নগরীর সফলতা! তুলে ধরে সিসিকের ৪ বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েছ লোদী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘নগরীতে বন্যা নাই, সামান্য বৃষ্টিতে নগরীর মেইন রোডগুলোতে এমন পানি পুরাই হাস্যকর। মাগার শত শত কোটি টাকা কই গেলরে।’ অপর একটি পোস্টে তিনি লিখেন, অপরিকল্পিত উন্নয়নে নাকাল নগরবাসী। শত শত কোটি টাকার খরচ করে সুন্দর রাস্তা ও লাইটিং শুধু উন্নয়ন নয় ফ্যাক্ট: সামান্য বৃষ্টিতে সিলেট শহরে জলাবদ্ধতা।’ তার এই পোস্ট নজর কেড়েছে সচেতন মহলের। অথচ নগরীর প্রধান সমস্যা যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। ড্রেনেজের কাজ হয়েছে কিন্তু জলাবদ্ধতা যেই সেই। গত দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া সিলেট নগরী তার প্রমান। একাধিক সূত্র মতে, মেয়র সংশ্লিষ্ট একটি ঠিকাদারী সিন্ডিকেট কাজের নামে লোপাট করেছে এই অর্থ।

এদিকে, টানা এক সপ্তাহ ধরে চলা তাপদাহে অতিষ্ঠ ছিল সিলেটের জনজীবন। বৃষ্টির জন্য কাঙ্গাল ছিলেন সবাই। অবশেষে গত শনিবার মধ্যরাতে শুরু হয় স্বস্তির বৃষ্টি সিলেটে। কিন্তু এই স্বস্তি স্থায়ী হয়নি। মাত্র দেড়ঘণ্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় নগরের বেশিরভাগ এলাকা। বাসা বাড়িতে ঢুকে পড়ে পানি। মাত্র বন্যার ধকল কাটানো নগরবাসীর জন্য এই জলাবদ্ধতা আসে চরম দুর্ভোগ হয়ে।

স্থানীয়রা বলছেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও বন্যার পর ড্রেনে জমা হওয়া আবর্জনা পরিষ্কার না করার কারণেই বৃষ্টিতে এই ভোগান্তি। সিসিক কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, বন্যার পর ড্রেন পরিষ্কার করা হয়নি। এতে পানি আটকে তলিয়েছে নগর। গত শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সিলেটে শুরু হয় ভারি বর্ষণ। রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত চলে বৃষ্টিপাত। এতে তলিয়ে যায় নগরের বেশিরভাগ এলাকা। অনেক উঁচু এলাকাতেও পানি উঠে যায়। তবে বৃষ্টি থামার পর সকালে এই পানি নেমে গেছে। সোবহানীঘাট ছাড়াও বৃষ্টিতে নগরীর জিন্দাবাজার, বারুতখানা, হাওয়াপাড়া, আম্বরখানা, চৌহাট্টা, লোহারপাড়া, বড়বাজার, লামাবাজার, মদিনামার্কেট, চারাদিঘিরপাড়, সওদাগরটুলা, যতরপুর, উপশহর, শিবগঞ্জ, শাপলাবাগ, তালতলা, সুবিদবাজার, ঘাসিটুলা, শামীমাবাদ, জল্লারপাড়, ভাতালিয়া, কানিশাইল, মজুমদারপাড়া, মেন্দিবাগ, দরগা-মহল্লা, লালদিঘিরপার, কুয়ারপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় হাঁটুপানি জমে। এসব এলাকার বেশিরভাগ বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি উঠে যায়। মধ্যরাতে ঘরে পানি ঢুকায় মানুষজন চরম দুর্ভোগে পরে যায়।
নগরের রায়নগর এলাকার বাসিন্দা ফাহমিদা মাহমুদ বলেন, ‘বৃষ্টি শুরুর আধঘণ্টা পরই ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। একমাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার এমন দুর্ভোগে পড়তে হলো।’ গত ১৫ জুন থেকে তৃতীয় দফায় বন্যা শুরু হয় সিলেটে। এতে তলিয়ে যায় সিলেটের ৮০ শতাংশ এলাকা। নিন্মাঞ্চলে এখনও বন্যার পানি থাকলেও নগর থেকে পানি নেমেছে। এর আগে গত মে মাসে আরেক দফা বন্যায় পানি ঢুকে নগরের বেশিরভাগ বাসা বাড়িতে। লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের প্রধান স্থপতি রাজন দাশ বলেন, ‘নগরের ড্রেনগুলো খুব সরু আকারে নির্মাণ করা হয়েছে। ছড়াগুলো আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। ফলে পানি কাটতে পারছে না।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন