ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের কাশ্মীরে জম্মুর নাগরোটায় গতকাল আত্মঘাতী হামলায় ২ অফিসারসহ সাত বিএসএফ সদস্যের মৃত্যু ঘটেছে। বিএসএফ’র পাল্টা গুলিতে মারা গেছে কথিত ৩ জঙ্গি। ভারতীয় পক্ষের দাবি, সাম্বায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা প্রতিহত করেছে বিএসএফ। এসময় জখম হয়েছেন বিএসএফের এক ডিআইজিসহ পাঁচজন।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল জম্মুর নাগরোটা সেনা শিবিরে আত্মঘাতী হামলায় দুই অফিসারসহ সাতজন ভারতীয় বিএসএফ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। জম্মু শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাগরোটায় প্রায় এক হাজার সেনা অফিসারের বাস। সেনাবাহিনীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ১৬ কোরের সদর এখানেই!
গতকাল ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নাগরোটার আর্টিলারি ইউনিটে হামলা চালায় কথিত আত্মঘাতী জঙ্গিরা। ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, শুরুতেই সেনাক্যাম্প লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গ্রেনেড ছুড়তে শুরু করে জঙ্গিরা। সেই সঙ্গে চলে গুলি বর্ষণ।
জঙ্গিদের গুলিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুই অফিসারসহ ৭ জন মারা যান। ঘটনাস্থলেই মারা যান ১৬৬ মেডিক্যাল রেজিমেন্টের মেজর কুণাল গোসাবি, ১৭ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের লান্স নায়েক সম্ভাজি যশবন্ত কদম, ১২ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সেপাই রাগবিন্দর। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে মারা যান নায়েব সুবেদার প্রহ্লাদ সিংহ, সেপাই তারসেম সিংহ এবং রাম রাজ যাদব।
পাল্টা গুলি চালায় ভারতীয় সেনারাও। কয়েক ঘণ্টা লড়াই চলার সময় হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে আকাশপথে নজরদারি শুরু করে হেলিকপ্টার। নামানো হয় সেনাবাহিনীর ‘প্যারা’ কম্যান্ডো। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়েতে বন্ধ রাখা হয় যান চলাচল। বন্ধ করে দেয়া হয় সব স্কুলও। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর মেসে ঢুকে এক কর্মকর্তার স্ত্রী ও সন্তানকে পণবন্দিও করে ফেলে হামলাকারীরা।
অবশেষে দুপুর দেড়টা নাগাদ হামলাকারীদের অবস্থান সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে যায় সেনা। চারদিক থেকে ঘিরে গুলি চালিয়ে তিন জনকে গুলি করে মারা হয় এবং মুক্ত করা হয় ১২ বিএসএফ সদস্য, ২ মহিলা এবং ২ শিশুকে।
এদিকে, নাগরোটায় সেনা-জঙ্গি লড়াই চলাকালে সাম্বার চামলিয়ালে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করে আরেকটি দল। এই গতিবিধি নজরে পড়তেই গুলি চালাতে শুরু করে বিএসএফ। পাল্টা গুলি চালায় অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারীরাও। বিএসএফের গুলিতে তিন জনের মৃত্যু হয়। এসময় কথিত অনুপ্রবেশকারীদের গুলিতে বিএসএফ-এর ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার এবং আরও পাঁচ বিএসএফ সদস্য জখম হন। আরও কেউ লুকিয়ে আছে কিনা দেখতে এলাকায় দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে চিরুনি তল্লাশি। পুরো জম্মু-কাশ্মীরে হাইঅ্যালার্ট জারি করা হয়। গতকালের জোড়া হামলা ধরে এক সপ্তাহে মোট ৭ বার হামলা চলল উপত্যকায়। সূত্র : এবিপি আনন্দ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন