ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ট্রাকসহ ৬০ ড্রাম সয়াবিন তেল ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাতদলের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ডাকাত সদস্যরা রবিবার (২৮ আগস্ট) ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সেই সাথে পুলিশ এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত চারটি টর্চ লাইট, ১০টি মোবাইল, মোটরসাইকেল, চেক ও নগদ ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। ফুলপুর থানা পুলিশ রবিবার রাতে এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ঢাকার খিলগাঁও এলাকার মৃত আসাদ মিয়ার ছেলে মো. আরিফ মিয়া (২৫), সবুজবাগ এলাকার ইলিয়াস আলীর ছেলে আজগর আলী (২০), একই এলাকার ইমান আলীর ছেলে মো. শাকিব (২০), বরগুনার সদর উপজেলার মৃত ইউনুস আলীর ছেলে মো. আব্দুল খালেক (৪০)।
প্রেস রিলিজে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফুলপুর পুলিশ জানতে পারেন যে, ফুলপুর থানাধীন ভাইটকান্দি ইউনিয়নের বড় চিলাগাই সাকিনস্থ আব্দুল্লার মোড়ে কিছু সংখ্যক চোরাই ভোজ্যতেলের ভর্তি ড্রাম একটি গোডাউনে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল ১৬ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টায় অভিযান চালিয়ে ফুলপুর থানাধীন ভাইটকান্দি ইউনিয়নের বড় চিলাগাই গ্রামের আব্দুল্লার মোড়ে জনৈক মো: শাহজাহান মিয়ার (৪২) গুদাম ঘর হইতে ৪৪টি ভোজ্যতৈল ভর্তি ড্রাম ( যাহার মূল্য ১১,৭৮,৪৭৬ টাকা ) উদ্ধার করেন। ইতিমধ্যে উক্ত ড্রাম গুলো মালিকানা সন্ধান কালে ত্রিশাল থানা পুলিশ কর্তৃক সন্ধান পাওয়া যায় যে, উক্ত তেলের ড্রামগুলো গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার হৃদয় এন্টারপ্রাইজের মালিক জনৈক আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ ওরফে হৃদয়ের। পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ ওরফে হৃদয় জানান, ১৫ আগস্ট রাতে নারায়গঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানাধীন কাউনি নামক স্থানে ৭/৮ জনের একটি ডাকাত দল তাহার মালিকানাধীন ৬০ ড্রাম ভোজ্যতেল ভর্তি ট্রাকের সামনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং নিজেদের কে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়া ট্রাকের ড্রাইভার, হেলপার ও ম্যানেজারকে ট্রাক হইতে নামাইয়া ইলেকট্রিক শক দিয়ে হাত ও চোখ বাধিয়া মাইক্রোবাসের পিছনের সিটে ফেলিয়া রাখে। তারপর ৬০ ড্রাম ভর্তি ভোজ্যতেল ও তেলবাহী ট্রাক ডাকাতি করিয়া নিয়া যায়। উক্ত বিষয়ে এজাহার দায়ের করিলে ফুলপুর থানার মামলা নং-১৮ তারিখ ২০/০৮/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩৯৫/৩৯৭/৪১২ রুজু করা হয়। মামলা রুজুর পর লুণ্ঠিত অবশিষ্ট ১৫ ড্রাম ভোজ্যতেল হালুয়াঘাট থানা এলাকা হইতে উদ্ধার করা হয়। সেই সাথে ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাস যাহার নম্বর-ঢাকা- মেট্রো-চ-১৫-১৯৯৭, সনাক্ত পূর্বক খিলগাঁও থেকে জব্দ করা হয়। অভিযানের ধারাবাহিকতায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি জড়িতদের সনাক্ত করিয়া ডিএমপি, ঢাকা এর খিলগাঁও, সবুজবাগ ও কদমতলী থানা এলাকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় শুক্রবার (২৬ আগস্ট) আন্তঃজেলা পেশাদার ডাকাত মোঃ আরিফ মিয়া (২৫), আজগর আলী (২০), মোঃ শাকিব (২০) ও মোঃ আব্দুল খালেক (৪৩) কে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। গ্রেফতারকৃতদের রবিবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সতত্য নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃজেলা পেশাদার ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃতদের রবিবার ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অন্যান্য জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন