স্টাফ রিপোর্টার : যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, খালেদা জিয়ার আনলাকি থার্টিন (১৩) প্রস্তাব অগণতান্ত্রিক। খালেদা জিয়ার আরেক নাম বিগ লায়ার। অগণতান্ত্রিক ও অরাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর বেগম জিয়ার যতটা আস্থা, ততটা রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর নেই।
গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগের কার্যালয়ে আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণির ৭৮তম জন্মদিনে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, তারপরও খালেদা জিয়া গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে সব সময় চিৎকার করেন। তার ফর্মুলা মেনে নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন করতে গেলে দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টির আশঙ্কাই বেশি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ভোট সুরক্ষা ফর্মুলা দিয়েছেন ১৩ দফায়। এর আড়ালে বেগম জিয়া ৭১‘র যুদ্ধাপরাধী এবং অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জামায়াতকে কীভাবে পেছনের দরজা দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া যায় সেই চেষ্টাই বিশেষভাবে করেছেন। প্রস্তাবগুলো দেশে গণতান্ত্রিক শাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সাহায্য না করে তা নষ্ট করার কাজেই সহায়তা করবে।
ওমর ফারুক আরও বলেন, একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের যোগ্যতা-অযোগ্যতা এবং মনোনয়নের প্রশ্নে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় সকল দলের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। এই প্রস্তাবের উদ্দেশ্যটা স্পষ্ট। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রস্তাবিত বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিদ্ধান্ত বিএনপি মানবে না। আলোচনা শেষ করতে না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখবে এবং নির্বাচন পরিস্থিতি অনুকূলে মনে না হলে নির্বাচন ঝুলিয়ে রাখবে এবং দেশে অনিশ্চয়তাও সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা বাহিনীকে নির্বাচনে যুক্ত করে তাদের হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দানের প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্রিটিশ আমল থেকে বহু নির্বাচন হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ কিংবা সামরিক বাহিনীও মোতায়েন রাখা হয়েছে। কিন্তু তাদের হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দানের কোনো উদাহরণ বিএনপি নেত্রী দেখাতে পারবেন কি? দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সেনাবাহিনীকে টেনে আনার এই প্রস্তাব কেন? কেন বেগম জিয়া ক্যান্টনমেন্টনির্ভর রাজনীতি করতে চান? সেটাই রহস্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ মণি সম্পর্কে তিনি বলেন, লেখাপড়া করার সময় থেকেই সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। ছাত্ররাজনীতি, যুব রাজনীতি, শ্রমিক রাজনীতি সুসংগঠিত করেছেন। তিনি একজন আদর্শ নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ সংগঠক, সুবক্তা, সুলেখক। স্বাধীনতা যুদ্ধে মুজিব বাহিনীর চারজন সেক্টর কমান্ডারের একজন ছিলেন। ’৭১ সালে তার নেতৃত্বে বিএলএফ পার্বত্য চট্টগ্রামে হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করে ১৬ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটিতে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। যুবক, শ্রমিক, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হলে শেখ মণি দলের অন্যতম সম্পাদক নিযুক্ত হন।
যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সাফল্য অর্জন করতে হলে স্বপ্ন দেখতে হবে। বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। এ দেশে তরুণদের সাফল্যের ক্ষেত্র অনেক বেশি, তবে সাফল্য অর্জন করতে হলে স্বপ্ন দেখতে হবে আর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে পরিশ্রম করতে হবে। কাজের প্রতি একনিষ্ঠ হতে হবে। লক্ষ্যে পৌঁছাতে নানা প্রতিবন্ধকতা আসবে। প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে সাফল্যর দোরগোড়ায় যাওয়ার আকাক্সক্ষাই কেবল সাফল্য এনে দিতে পারে।
আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, মজিবুর রহমান চৌধুরী, জাকির হোসেন খান, আনোয়ারুল ইসলাম, যুগ্ম-সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম শাহীন, সুব্রত পাল, সম্পাদকীয় সদস্য কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, সহ-সভাপতি জাফর আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক তাসভীরুল হক অনু, মহানগর দক্ষিণ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সারোয়ার হোসেন মনা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন