শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ট্রাম্প তাইওয়ানকে আবার টেবিলে ফিরিয়ে এনেছেন

| প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

দি নিউইয়র্ক টাইমস : গত দু’ দশক ধরে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার জটিল সম্পর্কের বিরোধীয় বিষয়ের তালিকার শীর্ষস্থান থেকে তাইওয়ান সরে গেছে। প্রেসিডেন্ট ওবামা ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর মধ্যকার বৈঠকগুলোতে বাণিজ্য, সাইবার হামলা ও দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের আগ্রাসী তৎপরতার মত আধা ডজন জরুরি বিষয়ের পরই তাইওয়ানের বিষয়টি সাধরণভাবে আলোচনায় এসেছে।
এখন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সাথে প্রটোকল-লংঘন করে করা একটি ফোনালাপের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড কল বিষয়টিকে টেবিলে ফিরিয়ে এনেছেন। প্রেসিডেন্ট রিচার্ড এম. নিক্সন ১৯৭২ সালে মাও জে দং-এর সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। তখন তারা দু’জনে সাংহাই ইশতেহার প্রকাশ করে তাইওয়ানের মর্যাদা ব্যাখ্যা করার পর ট্রাম্পই প্রথম আমেরিকান নেতা যিনি এ বিষয়ের কূটনৈতিক স্থিতাবস্থায় ঝাঁকুনি দিয়েছেন।
ওবামার প্রথম মেয়াদে চীনে রাষ্ট্রদূত থাকা জন এম. হান্টসম্যান বলেন, মার্কিন-চীন সামগ্রিক সম্পর্কে তাইওয়ান প্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে সুবিধা লাভের দিকটি দেখে থাকেন। একজন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাইওয়ানকে প্রয়োজনীয় সুবিধা লাভের ক্ষেত্র হিসেবে দেখার কথা ভাবতে পারেন।
ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মতে, স্বল্প সময়ে ট্রাম্প গোটা অঞ্চলকে নাড়া দিয়েছেন। শনিবার কয়েকটি এশীয় দেশের প্রতিনিধিরা তাদের উদ্বেগ প্রকাশের জন্য হোয়াইট হাউসের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন যে দীর্ঘ মেয়াদে এটা চললে তা শুধু তাইওয়ান প্রণালি বরাবরই উত্তেজনা ছড়াবে না, তা বাণিজ্য ক্ষেত্রকেও প্রভাবিত করবে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনকে শক্তিশালী করবে যেখানে তার সাথে ডুবো পাহাড় ও মগ্ন চর নিয়ে ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও অন্য প্রতিবেশীদের বিরোধ রয়েছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন-এর সাথে ফোনে কথা বলে ট্রাম্প কোনো অবিশ^াসের কাজ করেছেন বলে মনে করেন না। তাইওয়ান সরকারের পক্ষ থেকেই ফোনটি করা হয়েছিল, ট্রাম্প শিবিরের পক্ষ থেকে নয়। ট্রাম্প শুক্রবার সন্ধ্যায় টুইটারে লেখেনঃ মজার ব্যাপার যে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের কাছে শত শত কোটি ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করে, কিন্তু আমাকে অভিনন্দন জানিয়ে করা একটি ফোন গ্রহণ করা আমার উচিত হবে না।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সাথে এ ফোনালাপ তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গর পরিবর্তন কিনা তা সুস্পষ্ট নয়। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ একব্যক্তি জানান, তিনি মিজ সাইয়ের সাথে ভদ্রতা করে কথা বলেছেন। কিন্তু ট্রাম্পের অন্তর্বর্তী টিমের উপদেষ্টা সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির সাবেক ডেপুটি ন্যাশনাল অ্যাডভাইজার স্টিফেন ইয়েটস এক সাক্ষাতকারে বলেন, ট্রাম্পের চারপাশের লোকজন তাইওয়ানের প্রতি আমেরিকার নীতির তারতম্য সম্পর্কে সম্যকরূপে অবহিত।  
কট্টরপন্থী রিপাবলিকান নেতাদের মধ্যে সব সময়ই তাইওয়ানের কাছে পৌঁছবার মধ্য দিয়ে চীনের সাথে বিরোধ বজায় রাখার প্রবণতা ছিল। যাকে ট্রাম্প প্রতিরক্ষামন্ত্রী করতে পারেন বলে স্বল্পসময়ের জন্য ভাবা হয়েছিল, আরকানসাসের সেই রিপাবলিকান সিনেটর টম কটন শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ ফোনালাপের জন্য ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলেন, এটা চীনা ভূখন্ডে একমাত্র গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করেছে।
প্রেসিডেন্ট রিগান তার অভিষেকের সময় তাইওয়ানের একটি প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চীনের ক্রোধ সৃষ্টি করেছিলেন। তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনা শীর্ষে পৌঁছেছিল যখন চীন তাইওয়ানকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার পর ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ১৯৯৬-এর মার্চে দু’টি বিমানবাহী জাহাজ ব্যাটল গ্রুপকে তাইওয়ান প্রণালিতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
কিছু চীন বিশেষজ্ঞের জন্য আন্ত-প্রণালি সম্পর্ক নাড়া দেয়া বিশে^র জন্য সবচেয়ে খারাপ বিষয় নয়। এশিয়া সোসাইটিতে মার্কিন-চীন সম্পর্ক কেন্দ্রের পরিচালক অরভিল শেল বলেন, তাইওয়ান প্রণালিতে আমাদের এক ধরনের স্থিতাবস্থা আছে যা শান্তি বজায় রেখেছে। কিন্তু সম্প্রতি তা টেকসই দেখা যাচ্ছে না বা গণতান্ত্রিক তাইওয়ানের অধিকাংশ নাগরিকের কাছে তা খুব প্রীতিকর মনে হচ্ছে না। তিনি বলেন, ট্রাম্পের নতুন ধরনের কৌশল এখন চীনের জন্য তাইওয়ানের প্রতি কঠোর অবস্থান পুনর্বিবেচনার কারণ হবে অথবা মারাত্মক ও সামরিক পন্থায় জবাব দেয়ার ঘটনা ঘটতে পারে যা দেখার অপেক্ষা।
ট্রাম্প কি ধরনের নেতা হবেন সে বিষয়ে তাদের ভাবনা সম্পর্কে কিছু প্রকাশ করার ক্ষেত্রে চীনা নেতারা লক্ষণীয়ভাবে সংযত ছিলেন। তার ব্যবসায়িক সাফল্য যেমনটি বলে তিনি কি সে রকম লেনদেনকারী হবেন? অথবা রাজনীতির পথ পরীক্ষা করা একজন উস্কানিদাতা হবেন?
চীনা বিশ্লেষকরা শনিবার বলেন, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন-এর সাথে কথা বলে ট্রাম্প এর কঠোর উত্তর দিয়েছেন। কয়েক দশকের আমেরিকান রীতি ভেঙ্গে চীনের মৌলিক স্বার্থ ‘এক চীন নীতি’ বিষয়ে খোঁচা দিয়ে তিনি চীনকে অপ্রস্তুত করে দিয়েছেন।  
পিকিং বিশ^বিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক ওয়াং দং শনিবার বলেন, চীনের জন্য এটি জেগে ওঠার আহবানÑ আমাদের এখন চীন-মার্কিন সম্পর্কে ছয় মাস বা এক বছর বন্ধুর পথ চলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। তিনি বলেন, ট্রাম্প সম্পর্কে অতিরিক্ত প্রত্যাশার মোহ থেকে আশাবাদী ধারণা তৈরি হয়েছিল। তা বন্ধ করা উচিত। চীনা নেতারা ওয়াশিংটনের সাথে সম্পর্কে একটি স্থিতিশীলতার জন্য লালায়িত হয়ে উঠেছিলেন। আর সে কারণেই রাষ্ট্র পরিচালিত মিডিয়াগুলোতে তার সম্পর্কে আশাব্যঞ্জক মূল্যায়ন প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছিলেন। এ সবের অধিকাংশ বিবরণেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিতকে মতাদর্শ বর্জিত বাস্তববাদী বলে আখ্যায়িত করা হয়। চীন তাকে সে ব্যক্তি হিসেবেই দেখছিল যিনি বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকি দেয়া সত্ত্বেও অভিন্ন স্বার্থ রক্ষাকারী হবেন।
রেনমিন বিশ^বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের অধ্যাপক শি ইয়িনহং বলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরুর পর অপেক্ষাকৃত মসৃণ সম্পর্ক বজায় রাখার আশায় তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সাথে ট্রাম্পের ফোনালাপ সত্ত্বেও চীন সম্ভবত অপেক্ষা ও দেখার নীতি বজায় রাখবে।    
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই যখন চীন সরকারের প্রথম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তা ছিল যথেষ্ট সংযত যদিও তাতে এক চীন নীতি পুনর্ব্যক্ত হয়। এ নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিংকে চীনের একমাত্র সরকার হিসেবে স্বীকার করে এবং এক বছর পর তাইওয়ানের সাথে সম্পর্ক ছেদ করে। সে সময় থেকে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট বা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত তাইওয়ানের কোনো প্রেসিডেন্টের সাথে কথা বলেননি।
চীনা নেতারা চীনের উপর আর্থিক নির্ভরতা থেকে দেশকে মুক্ত করার অঙ্গীকার করে এ বছর তাইওয়ানের ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত মিজ সাই ইং-ওয়েনকে অবজ্ঞা করে থাকেন। মিজ সাই তার নীতির জন্য আগ্রহী তাইওয়ানি যুবসমাজের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন লাভ করেন।
তাইওয়ানে আমেরিকার স্বার্থ দেখভালকারী আমেরিকান ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডগলাস এইচ. পাল বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথমদিকে যুক্তরাষ্ট্র যদি তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে তা আশ্চর্যজনক হবে না। তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে বেইজিং-এর প্রতিক্রিয়া নির্ভর করবে তার মূল্য কত, কী ধরনের অস্ত্র বিক্রি করা হচ্ছে এবং মার্কিন প্রশাসন কীভাবে তা চীনকে অবহিত করে তার উপর।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সাথে ট্রাম্পের ফোনালাপ কূটনৈতিক নজির ভঙ্গ করলেও একে দেখা হতে পারে একজন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের তার কাছে পৌঁছনোর পন্থা হিসেবে যদিও আগে কেউই প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার আগে তা করেননি।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, জর্জ ডব্লিউ বুশ তার প্রেসিডেন্সির প্রথম দিকে তাইওয়ানের প্রতি সমর্থনে সোচ্চার হয়ে বলেছিলেন, তাইওয়ানকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য সবই করবে। তার সহযোগীরা পরে বলেছিলেন, বুশের এ মন্তব্য এক চীন নীতির পরিবর্তন প্রতিফলিত করে না। তার দ্বিতীয় মেয়াদের শেষে বুশ বিশ^ বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউ টি ও) চীনের প্রবেশ অনুমোদন করে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারে সাহায্য করেন।
নির্বাচিত হওয়ার কয়েকদিন পর ট্রাম্প চীনা প্রেসিডেন্ট শি’র সাথে কথা বলেন। তারপর এক বিবৃতিতে বলেন, তাদের দু’জনের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সুস্পষ্ট শ্রদ্ধা রয়েছে।
তাইওয়ানে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক লেনদেনের ব্যাপারে প্রশ্ন আছে। তাইওয়ানের নিউজ মিডিয়া খবর দিয়েছিল যে ট্রাম্প অর্গানাইজেশন সরকার সমর্থিত একটি উন্নয়ন প্রকল্পে একটি বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল। তবে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, তারা তাইওয়ানে কোনো ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছেন না।     
ট্রাম্প যদিও চীনা রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় পক্ষপাতমূলক প্রচার পেয়েছেন তা সত্ত্বেও কিছু চীনা বিশ্লেষক তার প্রতি অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, ট্রাম্পের প্রশাসন চীনের সাথে শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ নেবে।
বিশে^র আরো বহু সরকারের মত চীন সরকারের জন্যও ট্রাম্পের ফ্রিহুইলিং কূটনীতি এক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে তাইওয়ানের পক্ষ থেকে নগণ্য পদক্ষেপ আখ্যায়িত করেন এবং বলেন, তা চীনের দীর্ঘমেয়াদী নীতিকে বিপর্যস্ত করবে না। তবে কয়েক ঘণ্টা পরই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওবামা প্রশাসনের কাছে প্রতিবাদ জানায়। উক্ত প্রতিবাদে চীন মার্কিন-চীন সম্পর্কে অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ পরিহারের জন্য তাইওয়ান বিষয় সতর্কতার সাথে ও যথাযথভাবে সামাল দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানায়।  
তিংহুয়া বিশ^বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও পররাষ্ট্র নীতি বিশ্লেষক জ্যান হুয়েতং বলেন, আগামী বছরগুলোতে চীন-মার্কিন সম্পর্কের ব্যাপ্তি ব্যাপকভাবে নির্ভর করবে ট্রাম্প ও শি’র ব্যক্তিগত রসায়নের উপর।
সাংহাইয়ের ফুদান বিশ^বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শেন দিংলি মিজ সাই-এর সাথে ট্রাম্পের ফোনালাপ সম্পর্কে বিপরীত মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, এটা কোনো সমস্যা নয়, যেহেতু তিনি এখনো দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। তিনি একজন বেসরকারী নাগরিক। তবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পরও যদি এ সম্পর্ক অব্যাহত থাকে তাহলে চীন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে।      

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন