শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

পদ্মার ভাঙনে দৌলতদিয়ায় ৪ ফেরি ঘাট বন্ধ, ঝুঁকিতে আছে তিনটি

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৫৬ পিএম

পদ্মার ভাঙনে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার সাতটি ফেরি ঘাটের মধ্যে চারটি ফেরি ঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে বুধবার রাত থেকে পদ্মার ভাঙনে উপজেলার দৌলতদিয়া ৩ নম্বর ফেরি ঘাটের সিদ্দিকপাড়া এলাকার ১০০ মিটার এলাকা বিলীন হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান। ৩ নম্বর ফেরি ঘাট এলাকায় ভাঙন শুরুর পর থেকেই কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৩ নম্বর ঘাটটি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এখানে সাতটি ঘাট আছে। এর মধ্যে ৩ ও ৫ নম্বর ঘাটে এই মুহূর্তে সমস্যা দেখা দিছে। ৩ নম্বর ফেরি ঘাট এলাকায় ভাঙন শুরুর পর থেকেই কাজ শুরু হয়েছে। তবে ভাঙন তো পুরোটা প্রতিরোধ করা যাবে না, তারপরও যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি। সাতটি ঘাটের মধ্যে এখন ৪, ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। এর আগে ভাঙনের কারণে গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে ৫ নম্বর ফেরিঘাট। ২০১৯ সালে অক্টোবর মাসে পদ্মার ভাঙনে ১ নম্বর ফেরিঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর কিছুদিন পরেই ২ নম্বর ফেরি ঘাটটিও বন্ধ হয়ে যায় বলে জানান বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা।

৩ নম্বর ফেরি ঘাট সংলগ্ন সিদ্দিকপাড়া এলাকায় বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙন কবলিত স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে বিআইডব্লিউটিএ। ওই এলাকার অন্তত ৬০-৭০টি বসতবাড়ি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। অনেক বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ভেঙে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছে। আর ৪, ৬ ও ৭ নম্বর ফেরি ঘাটও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা শারমিন বেগম বলেন, “আমাদের বাড়িঘর নদীতে ভেঙে গেছে। এখন কী করবো বুঝতেছি না। যাবো কোথায়? যাওয়ার জায়গা নেই।

মো. বাচ্চু খান বলেন, গত বছরও নদীতে ভাঙছে এবারও নদীতে ভাঙছে। সরকারের লোকজন এসে বলে ইডা করবো উডা করবো এইতো কাজ এসে গেছে। কিন্তু কিছুই হয় না। আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে থাকি। কাজে গেলে চিন্তায় থাকতে হয় স্ত্রী-সন্তানদের দেখতে পাবো তো। নিছা বেগম বলেন, তিন-চারবার বাড়ি-ঘর ভাঙছে। এখন কিছুই নেই। আমারা কিভাবে বাঁচবো। আমাদের নদী শাসন করে দেয় না। যেটুকু ছিলো সেটাও নদীতে চলে গেলো। সরকারের কাছে দাবি জানাই, দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিক।

ইউনুস মোল্লা বলেন, এই ভাঙন তো আরও ত্রিশ বছর আগে থেকে চলে আসছে। বহুবছর আগে থেকে শুনতেছি স্থায়ীভাবে বাঁধ দিবে, কিন্তু সেটা আজ পর্যন্তও হয় নাই। ঘাটের আধুনিকায়ণ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি-না জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর প্রকৌশলী জহিরুল বলেন, এক হাজার ৩৫১ কোটি টাকার ঘাট আধুনিকায়ণ প্রকল্পের কাজ আটকে আছে বুয়েটের ডিজাইনের ওপর। ডিজাইন হাতে পেলেই স্থায়ী কাজ শুরু হবে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মো. নাসির হোসেন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ২১টি ফেরি আছে। এর মধ্যে ১২টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। বর্তমানে ৪, ৬ ও ৭ নম্বর ঘাটে ফেরিগুলো ভিড়ছে। তবে যানবাহনের চাপ না থাকায় এবং ফেরি কম চলার কারণে ফেরিগুলোকে ঘাটে ভিড়তে কোনো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন