মার্কিন ডলারের দাম এ বছর ১৮ শতাংশ বেড়েছে এবং ২০ বছরের মধ্যে গত মাসে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে। ডলারের ঊর্দ্ধগতি অন্যান্য দেশের স্থানীয় মুদ্রাকে ক্রমেই দুর্বল করে দিচ্ছে, যা তাদের দৈনন্দিন পণ্য ও পরিষেবার দাম আকাশচুম্বী করে তুলছে। ফলে বিশ্বজুড়ে মানুষ এখন সঙ্কট এবং হতাশায় ভুগতে শুরু করেছে। এটি এমন এক সময়ে আর্থিক সঙ্কট বাড়িয়ে তুলেছে, যখন পৃথিবীজুড়ে মানুষ ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ মহামারি জনিত অর্থনৈতিক মন্দা থেকে পুনরুদ্ধারের জন লড়াই করছে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও জ¦ালানি সঙ্কটের মুখোমুখি। অনেক অর্থনীতিবিদ উদ্বিগ্ন যে, ডলারের নজিরবিহীন ঊর্ধ্বগতি আগামী বছরের কোনো এক সময় বিশ্বব্যাপী মন্দা আরো বাড়িয়ে তুলবে।
ইউরোপ, যা ইতোমধ্যেই জ¦ালানি মূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে মন্দার দিকে ধাবিত হচ্ছে, গত ২০ বছরে প্রথমবারের মতো তার এক ইউরোর মূল্য ১ মার্কিন ডলারেরও নীচে নেমে গেছে এবং ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য ডলারের বিপরীতে এক বছর আগের তুলনায় ১৮ শতাংশ কমেছে। এ বছর ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য প্রায় ১০ শতাংশ, মিসরীয় পাউন্ড ২০ শতাংশ এবং তুর্কি লিরা ২৮ শতাংশ কমেছে। কর্নেল ইউনিভার্সিটির ট্রেড পলিসির অধ্যাপক এশ্বর প্রসাদ বলেছেন, ‘একটি শক্তিশালী ডলার বিশ্বের বাকি অংশে একটি খারাপ পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তোলে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলা করতে দেশটির ফেডারেল রিজার্ভ এবছর পাঁচবার তার স্বল্পমেয়াদি সুদের বেঞ্চমার্ক হার বাড়িয়েছে এবং আরো বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি অন্যান্য দেশের বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতির ওপর বাড়তি চাপ যোগ করে আমদানিকে আরো ব্যয়বহুল করে তুলেছে। এটি প্রতিষ্ঠান, ভোক্তা এবং সরকারগুলো, যারা ডলারে ঋণ নিয়েছে, তাদের চাপে ফেলেছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলোকে তাদের মুদ্রাগুলোকে সাহায্য করার জন্য সুদের হার বাড়াতে বাধ্য করছে। এ উচ্চহার দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে দুর্বল করে দেবে এবং বেকারত্ব বাড়িয়ে তুলবে। ইকোনমিক্সের আরিয়েন কার্টিস বলেন, ‘সহজ করে বললে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য খারাপ খবর। ক্যাপিটাল ‘আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার মধ্যে পড়বে বলে আমরা যে আশঙ্কা করছি, এটি তার আরেকটি কারণ।’ সূত্র : আল জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন